সুখ - (ছোট গল্প) পর্ব ১ (collected)



ঘুমন্ত স্বামীর আলিঙ্গনে নিজেকে পেয়ে খুশি হয় সুদেষ্ণা... আর একটু সরে সৌভিকের বুকের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় নিজের শরীরটাকে... মুখ গুজে বড় করে শ্বাস টানে... ঘ্রাণ নেয় স্বামীর দেহের পুরুষালী গন্ধর... বুক ভরে... নগ্ন বুকের স্তনবৃন্তদুটো
কেমন অসভ্যের মত জেগে ওঠে... শক্ত হয়ে ওঠে ও দুটি নাকের মধ্যে সৌভিকের গায়ের গন্ধটার প্রবেশমাত্রই... পাতলা ঠোঁটে প্রশান্তির হাসি খেলে যায়... আস্তে আস্তে মুখ তুলে তাকায় স্বামীর পানে... একদিনের না কাটা দাড়ির আবছায়া মেখে রয়েছে দৃঢ় গালের ওপরে... সৌভিকের এই রূক্ষ রূপটা ভিষন টানে তাকে... ইচ্ছা করে হাত তুলে গালের ওপরে রাখতে, বোলাতে ওই কর্কশ গালটায়... কিন্তু ইচ্ছাটাকে সংযম করে সে, পাছে ঘুম ভেঙে যায় বেচারার... ভোররাতের দিকে ক্লান্তি মেখে ঘুমিয়ে পড়েছে সে... মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে পড়ে যায় সুদেষ্ণার গত রাতটা... উষ্ণ কামোচ্ছাসে আর গভীর ভালোবাসায় ভরা রাত... ভাবতে ভাবতেই শিহরিত হয়ে ওঠে দেহ... শুধু গত রাতেই নয়, প্রতি রাতেই তারা এই ভাবে একে অপরের মধ্যে হারিয়ে যায় বারংবার... ভেসে যায় লাগামহীন অনন্ত ভালোবাসায়... উচ্ছৃঙ্খল কামোচ্ছাসে... বলগাহীন কামোকেলীতে... তাও যেন অতৃপ্ত থেকে যায় তাদের দেহ, মন... আরো, আরো বেশি করে পাবার নেশা চেপে ধরে তাদেরকে রাতের শেষে... সারা রাত ধরে সৌভিক তাকে দুরন্ত ভালোবাসা আর প্রশ্রয়ে আরো বেশী করে সাহসী করে তোলে... উৎসাহিত করে তোলে উদ্দাম হয়ে উঠতে... হ্যা... ভালোবাসে সে সেক্সকে... ভিষন ভাবে এই দেহজ সুখ সে কামনা করে... আর সেটা আরো বৃদ্ধি পায় সৌভিকের এই অনাবিল প্রশ্রয়ে... কারণ সেই ভাবেই তাকে পেতে ভালোবাসে সৌভিকও, মর্মে মর্মে সেটা উপলব্ধি করে সুদেষ্ণা...

২৫ বছর বয়সে সুদেষ্ণা আজ তার যৌবনের শিখরে... শারিরীয় সুখটাকে নিংড়ে উপভোগ করায় কোন রকম শিথিলতা দেখায় না... ভোগ করে প্রতিটা রাত সৌভিকের সাথে চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে... শরীরের প্রতিটা কোষে... একান্ত কোন বাধা না ঘটলে, প্রতি রাতে তারা মিলিত হয়... ভেসে যায় একে অপরের ভালোবাসায় ঘন্টার পর ঘন্টা... সময় কোথা দিয়ে বয়ে যায় কেউ সেই দিকে খেয়াল রাখতে আগ্রহ দেখায় না...

অথচ এই সৌভিকই কিন্তু সামান্য হলেও সন্দিহান ছিল সুদেষ্ণার সেক্সের ব্যাপারে আগ্রহ নিয়ে... ভেবেছিল তাদের যৌন জীবনটা হবে আর পাঁচটা চিরাচরিত দম্পতিদের মতই... রুটিন মাফিক যৌনক্রিড়া, যার মধ্যে হয়তো দেহ থাকবে, কিন্তু সেই দূরন্ত এক্স ফ্যাক্টরের অভাব থেকে যাবে... অন্তুত শুরুর দিকে সুদেষ্ণাকে যে ভাবে দেখেছিল সৌভিক, তাতে তার মনের মধ্যে এই ধরণের ছবি আঁকা বিচিত্র নয়... কিন্তু বিয়ের পরের প্রথম রাতেই বুঝেছিল সে কতটা ভুল ছিল তার ধারণায়... আশাই করেনি সুদেষ্ণা বিছানায় এই ভাবে তুফান তুলতে পারে বলে...

গত রাতের কথা মনে পড়তেই হাসি ফুটে ওঠে সুদেষ্ণার ঠোঁটের কোনে... ভাবতে ভাবতেই মনে পড়ে যৌন অনুসন্ধানের প্রাথমিক পাঠের কথা...

তখন কতই বা বয়স হবে সুদেষ্ণার? সবে কুড়িতে পা দিয়েছে... কলেজ শেষ... বই, লেখাপড়ার বাইরেও যে আর একটা জগত আছে, সেটার সাথে একটু একটু করে পরিচিত হয়ে উঠছে... কলেজের গন্ডি অতিক্রম করে অফুরন্ত সময় হাতে... বন্ধু, বান্ধব, সিনেমা, রেস্তোরাঁ, হইহুল্লোড়... সারাটা দিন শুধু আনন্দ... এক অন্য স্বাদ তখন চোখে... চোখের সামনে নিত্য নতুন সম্পর্কের অমোঘ হাতছানি... উচ্চমধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে সুদেষ্ণা... প্রাচুর্যের মধ্যে বড় না হলেও অভাব ছিল না কোনদিনই... বাবা মায়ের এক মাত্র মেয়ে হওয়ার দৌলতে, শাসনের চৌহদ্দিতে শিথিলতা ছিল বরাবরই, উচ্ছৃঙ্খলতা না থাকলেও, সাহসী হতে বাধা ছিল না বাড়ির শাসনে... কলেজ শেষ হওয়া অবধি পড়াশুনা আর বাড়ির মধ্যেই নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিল সে... কিন্তু কলেজ শেষে অফুরন্ত সময় হাতে পেয়ে স্বাদ নিতে শুরু করে এক অনাবিল স্বাধিনতার... স্বাধীনতা, উচ্ছৃঙ্খলতা নয়... ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে মিশে যেতে পারতো অনায়াশে, কিন্তু কারুর সাথেই কোন অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তৈরী করে নি সচেতনতার সাথেই... খুব সুন্দর ভাবে আলাদা করে রেখেছিল নিজেকে বাঁচিয়ে এই ধরণের কোন সম্পর্ক তৈরী হওয়ার থেকে... সুযোগের হাতছানি যে ছিল না তা নয়, কিন্তু নিজের ভারতীয় নারীত্বের সঙ্গা সে ভোলে নি কখনই...

পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতায়, বাদামী গায়ের রঙ সুদেষ্ণার... শ্যাম বর্ণএ যে এত মাধুর্য থাকতে পারে, সেটা সুদেষ্ণাকে না দেখলে বোঝার উপায় নেই... চিকণ ত্বক তার... হরিণ কালো টানা টানা চোখ... বড় বড় চোখের পাতা... সরু বক্র ভুরুযুগল... সরু কপাল... ইষৎ লম্বাটে মুখাবয়ব... ধারালো চিবুক... হাসলে একটা মিষ্টী টোল পড়ে দুই গালের ওপরে... গর্ত হয়ে যায় গালের ওপরে... পাতলা ঠোঁট... দুধ সাদা ঝকঝকে দাঁতের সারি... মরাল গ্রীবা... চওড়া কাঁধ... ভারী গোলাকৃত স্তন... সরু কোমর... নির্মেদ পেট... পুরুষ্টূ মাংসল উরুদ্বয়... স্ফিত বর্তুল নিতম্ব... একেবারে বালিঘড়ির আকার তার চেহারায়... মাথার এক ঢাল মখমল কালো চুল কোমর ছাপিয়ে প্রায় নিতম্বের মাঝামাঝি নেমে থমকে গেছে... যখন হেঁটে যায়, অদ্ভুত একটা কোমনীয় মাধুর্যে ভরা লোভনীয় ছন্দ তৈরী করে প্রতিটা পদক্ষেপের সাথে, যে দেখে বারেক ফিরে তাকাতে যেন বাধ্য হয় সে...

সেদিন বন্ধুদের সাথে একটা পার্টিতে গিয়েছিল সুদেষ্ণা... সাধারণতঃ কোন বন্ধু বা বান্ধবীর বাড়িতেই এই ধরণের পার্টি হয়ে থাকে, কিন্তু সেদিন একটা নাইট ক্লাবে পার্টিটা ছিল... নাইট ক্লাবের মধ্যে কি হয়, সেটা তার অভিজ্ঞতায় ছিল না আগে থেকে... তাই যত সময় গড়িয়েছে... সে অবাক হয়ে দেখেছে তার বন্ধুরা তাদের নিজের নিজের গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের সাথে নিভৃত কোনায় সরে যেতে... দেখেছে তাদেরকে ঘনিষ্ঠ হতে একে অপরের সাথে... দেখেছে আর মনের মধ্যে অদ্ভুত একটা অস্বস্থি তৈরী হয়েছে... নিজের শরীরের মধ্যে উপলব্ধি করেছে সেই অস্বস্থিটা... বারে বারে চোখ চলে গিয়েছে ক্লাবের আধোঅন্ধকারের পরিবেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকে দেহগুলির দিকে... নিজের দেহের মধ্যের তাপ মাত্রা বৃদ্ধি উপলব্ধি করেছে সে... উপলব্ধি করেছে একটা অভাবের, কিন্তু সেটা কিসের, সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারে নি তখন হাজার ভেবেও... বাড়ি ফিরেছে শরীরের মধ্যে সেই অচেনা অস্বস্থিটাকে সাথে নিয়ে... মনের মধ্যে বেড়ে উঠতে থাকা একটা তাপিত পরিস্থিতি মেখে...

নিজের ঘরের ঢুকে একটা পায়জামা আর টি-শার্ট পড়ে শুয়ে পড়েছিল সে... শুয়েও ঘুম আসছিল না কিছুতেই... বারংবার চোখের সামনে সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাকের মত চোখে দেখা বন্ধুদের একেঅপরের সাথে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ দৃশ্যগুলো ভেসে উঠছিল তার... অনেকক্ষন ধরে সে ঘরের অন্ধকারে শুয়ে এপাশ ওপাশ করে যাচ্ছিল শুধু... তারপর কি ভেবে উঠে বসেছিল সে... বিছানার পাশের টেবিলের রাখা বোতল থেকে জলে গলা ভিজিয়ে ল্যাপটপটা টেনে নিয়েছিল... সেটাকে চালিয়ে খেয়ালবশতই ব্রাউজার খুলে খুজে নিয়েছিল একটা ইরোটিক গল্পের সাইট... গল্পটা ছিল একটি ছেলে আর মেয়ের প্রথম মিলনের...  একটু একটু করে উষ্ণ হয়ে উঠতে থাকে তার দেহ যত গল্প এগোতে থাকে... কানের লতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে সেই উষ্ণতা... বুকের মধ্যে বেড়ে ওঠে ধুকপুকানী... আনমনেই কখন যে তার হাত পায়জামার মধ্যে ঢুকে গিয়ে প্যান্টির ওপর দিয়ে মুঠোর মধ্যে চেপে ধরেছিল সে নিজের যোনিটাকে, খেয়ালই করেনি সে... রগড়াতে শুরু করেছিল যোনিটাকে মুঠোয় পুরে প্যান্টির ওপর দিয়েই... তারপর গল্পটা একটু একটু করে আরো কামনাশিক্ত হয়ে উঠেছে... গল্পের প্রতিটা শব্দ যেন তার মনের মধ্যে গিয়ে আঘাত হানতে শুরু করে দিয়েছিল... সুদেষ্ণার হাতটাও প্যান্টির ইলাস্টিক ব্যান্ডটা পেরিয়ে ঢুকে গিয়েছিল ভেতরে... নগ্ন যোনির ওপরে আঙুলের ছোঁয়া পড়তেই অবাক হয়ে গিয়েছিল সে কখন যেন তার যোনিটা রসে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে আপনা থেকেই...

যোনিতে এই ভাবে রস কাটতে পারে, সেটা আগে কখনও ভাবে নি সুদেষ্ণা... এই ভাবে পিচ্ছিল হয়ে উঠতে পারে তার যোনি, সেটাও তার কাছে নতুন... যোনির ফাটলে হাত রেখে আস্তে আস্তে আগুপিছু করে রগড়াতে থাকে সে... সাথে সাথে যেন অদ্ভুত একটা শিহরণ খেলে যায় সারা শরীরের মধ্যে... একটা সুখ, কিন্তু সেটা কেমন সেটা বুঝতে পারে না সে... আরো খানিক হাত বুলিয়ে বের করে নেয় হাতটাকে সেখান থেকে... সুখটা পেতে ইচ্ছা করে, কিন্তু কেমন একটা ভয় হয় তার মনের মধ্যে... কেমন অদ্ভুত একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে যায় যেন... শেষে তাড়াতাড়ি করে উঠে বসে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিয়ে ফের শুয়ে পড়ে আলো নিভিয়ে... চেষ্টা করে ঘুমের কোলে হারিয়ে যেতে...

পরদিন সুদেষ্ণার অনেকদিনের পুরানো এক বন্ধুর সাথে দেখা... স্কুলের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল তারা... তৃষ্ণা... এক সাথে বসা ওঠা ছিল তাদের... ওকে রাস্তায় দেখেই কলকলিয়ে ওঠে সে... জড়িয়ে ধরে আনন্দে... জানতে পারে তৃষ্ণা ডাক্তারি পাশ করে ফেলেছে... জয়েন করেছে হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার হয়ে... টেনে নিয়ে গিয়েছিল একটা কফিশপে... পুরোনো দিনের গল্পে হারিয়ে গিয়েছিল তারা...

‘তোর সাঁতার চলছে এখনও? নাকি ডাক্তারির চাপে সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে?’ জানতে চেয়েছিল সুদেষ্ণা...

‘ওহ!... আরে ওটা তো চালাতেই হবে... আমি এখনও রোজ নিয়ম করে সাঁতারটা চালিয়ে যাচ্ছি... ওটার মত ভালো এক্সার্সাইজ আছে নাকি!’ কলকল করে বলে উঠেছিল তৃষ্ণা, তার প্রিয় বন্ধুকে... ‘আসলে কি জানিস তো... শরীর যেটা চায়, সেটা তাকে সবসময় দেওয়া উচিত... বুঝলি...’ সুযোগ পেয়ে ডাক্তারী ফলাতে কুসুর করে না তৃষ্ণা...

‘হুম... সেটা ঠিকই বলেছিস...’ আনমনে উত্তর দিয়েছিল সুদেষ্ণা, মুখের ওপরে রঙের পরিবর্তন খেলে গিয়েছিল তার...

সেটা নজর এড়ায় না তৃষ্ণার, ভুরু কুঁচকে তাকায় বন্ধুর পানে, ‘এই? কি ব্যাপার রে?’

‘না... মানে সে রকম কিছু নয়... আসলে...’ আমতা আমতা করে সুদেষ্ণা... ‘আসলে পুরোটা ঠিক বোঝেতে পারবো না আমি... আমি নিজেও কতকটা ব্যাপারটা নিয়ে একটু ধোঁয়াশায় রয়েছি... খানিকটা এমব্যারাসিংও বলতে পারিস...’ চাপা গলায় উত্তর দেয় সে।

বন্ধুর হাতে হাত রেখে বলে উঠেছিল তৃষ্ণা, ‘কেন রে? এনিথিং রং? বল না আমাকে... আমার কাছে লজ্জার কি?’

তৃষ্ণাকে সে বরাবরই একটু অন্য চোখে দেখে... ওর মধ্যের স্পষ্টবাদীতা একটা অন্য মাত্রা যোগ করে... যেটা সুদেষ্ণার ভিষন ভালো লাগে... বরাবরই তৃষ্ণা স্বাধীনচেতা... নারীবাদী না হয়েও নারীত্বের সন্মান বজায় রেখে চলে এই পুরুষশাসিত দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে... তার ওপরে এখন সে ডাক্তার...

মাথা ঝুঁকিয়ে আর একটু কাছে সরে আসে সুদেষ্ণা... ‘আসলে কি জানিস...’ ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে একবার চুতুর্দিকটায় চোখ বুলিয়ে নিয়ে... ‘গতকাল রাতে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে...’

বন্ধুকে এই ভাবে বলতে দেখে তৃষ্ণাও কেমন উৎসাহিত হয়ে ওঠে... সেও ঝুঁকে প্রশ্ন করে... ‘কি রে?’

কি করে জানে সুদেষ্ণা, কান দুটো লাল হয়ে ওঠে যেন তার... কথাটা গলার কাছে এসেও কেমন দলা পাকিয়ে আটকে যায় যেন... চোখ নামায় টেবিলের ওপরে...

‘কোই... বল...’ তাড়া দেয় তৃষ্ণা...

‘আসলে...’ চকিত দৃষ্টি তুলে দেখে নেয় সে চারপাশটা... তারপর আগের মতই ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে, ‘কাল না... আমি... আমি বোধহয় মাস্টার্বেট করেছি...’ কথাটা প্রায় উগড়ে দেয় যেন মুখ দিয়ে...

তৃষ্ণা প্রায় মিনিট খানেক চুপ করে বন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে... তারপর খিলখিল করে হেসে ওঠে সে... হাসির দমকে দুলে উঠতে থাকে তার সারা শরীরটা... ভ্যাবলার মত চেয়ে থাকে হাসতে থাকা বন্ধুর মুখের পানে সুদেষ্ণা... বুঝতে পারে না তার কথায় এই ভাবে হাসার কি কারণ ঘটল বলে...

হাসির দমক কমলে, কৌতুক ভরা চোখে বলে ওঠে তৃষ্ণা, ‘ওহ! কংগ্রাচুলেশন ডিয়ার... তা কেমন লাগল শুনি?’

‘কনফিউজিং...’ অপ্রস্তুত মুখে উত্তর দেয় সুদেষ্ণা।

‘তাই? কিন্তু কনফিউজিং কোন জায়গাটা?’ সুদেষ্ণার উত্তর পেয়ে বুঝতে পারে একদম মন থেকেই উত্তরটা দিয়েছে বন্ধু।

‘আসলে... ঠিক বুঝতে পারছি না... এটা কি নরমাল ব্যাপার? মানে মেয়েরা কি এই সব করে? এটা করা ঠিক তো? আর যদি করে, তবে কি ভাবে? বা কতটা? আমি... আমি ঠিক বুঝতে পারছি না জানিস... মানে ব্যাপারটা আমার কাছে একেবারেই নতুন বলতে পারিস... আসলে যে ভাবে হটাৎ করে...’ বলতে বলতে থমকায় সুদেষ্ণা, কি বলবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না সে... অস্বস্থি হয় কেমন একটা কথাটা বলে ফেলে তার...

‘আচ্ছা... আচ্ছা... ঠিক আছে... আর কিছু বলতে হবে না তোকে... তুই বরং জলটা খা... দম নে একটু...’ বলতে বলতে টেবিলে রাখা জলের গ্লাসটা এগিয়ে দেয় সুদেষ্ণার দিকে তৃষ্ণা।

জলের গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢক ঢক করে খানিকটা জল সত্যিই খেয়ে নেয় সুদেষ্ণা... তারপর গ্লাসটা নামিয়ে রেখে প্রশ্ন ভরা চোখে তাকায় বন্ধুর দিকে।

একটু দম নেয় তৃষ্ণাও... খানিক চুপ করে থেকে তারপর ধীর কন্ঠে বলে সে, ‘শোন তাহলে... তবে মন দিয়ে শুনবি, কারণ যেটা বলবো এখন সেটা ইম্পর্টেন্ট...’ বলে ফের থামে সে খানিক, তারপর আবার বলতে শুরু করে, ‘দেখ, আমি একটা জিনিস তোকে বলে দিতে চাই যে তুই, মানে আমার বন্ধু সুদেষ্ণা, একজন যুবতী আর স্বাস্থবতী নারী... স্বাস্থবতী কথা বললাম তার কারণ আছে... টিন এজ থেকে ধর মোটামুটি চল্লিশ অবধি একটি নারীর সেক্সুয়াল চাহিদা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার... যে কোন পুরুষের থেকে এতটুকুও কোন অংশে কম নয়... ওই বয়সী সমস্ত নারীর একটা সুস্থ লিবিডো বা যাকে বলে যৌন ক্ষুধা থাকে, এটা খুব সুস্থ একটা লক্ষণ, এ নিয়ে কোন দ্বিমত নেই...’

‘কিন্তু...’ তৃষ্ণার কথার মধ্যেই বলে ওঠে সুদেষ্ণা... ‘কিন্তু সাধারণতঃ ছেলে্দেরই তো মেয়েদের থেকে বেশি ওই সব... মানে ওই যেটা বললি, সেটা বেশি থাকে...’

‘হু... খারাপ বলিস নি... আমি বলবো, হ্যা আর না...’ চেয়ারে একটু সোজা হয়ে বসে তৃষ্ণা... ‘নারীর যে কোন পুরুষের মতই একই রকম যৌন ইচ্ছা থাকে... না বেশি, না কম... একেবারে ওদের মতই একই রকম... কিন্তু আমরা, মানে নারীরা যে সমাজে বাস করি, সেটা পুরুষশাসিত... এখানে তাই আমাদের মানে নারীর যৌন ইচ্ছা, বা বলতে পারিস সেই যৌন চাহিদার প্রকাশ যদি ঘটে, তখন সেই নারীর ওপরে একটা ব্যাভিচারিনীর বা যাকে বলে লুজ ক্যারেক্টারের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়... আর সেই কারণেই মেয়েরা মানে ওই বয়সী মেয়েরা নিজেদেরকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে সেই যৌনক্ষুধাটাকে চেপে রাখতে বাধ্য হয়... তাদের সেই সাধারণ ইচ্ছা অনিচ্ছাগুলোকে চেপে রাখতে বাধ্য হয় বলতে পারিস... তারা মনে করে যে একমাত্র বিয়ের পরই তাদের স্বামীরা এই সমস্ত অবদমিত যৌনক্ষধা নিবৃত্ত্য করবে...’

‘সেটা তো খারাপ নয়... ক্ষতি কি তাতে?’ প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা।

‘ওপর থেকে দেখলে কোন ক্ষতি নেই বলা যেতে পারে...’ উত্তর দেয় তৃষ্ণা... ‘কিন্তু একটু যদি তলিয়ে দেখা যায়, তাহলে আমরা দুটো জিনিস দেখতে পাই যেটা ভিষন ভাবে ক্ষতিকারক। প্রথমতঃ দেখা যায়, যতদিন না সেই মেয়েটির বিয়ে হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সে একটা সেক্সুয়াল ফ্রাস্ট্রেশনএর মধ্যে দিয়ে যায়, কোন কিছুতেই ঠিক মত মনোনিবেশ করতে পারে না সেই মেয়েটি... আর ঠিক মত কনসেন্ট্রেট না করতে পারার কারণে মেয়েটি হয়ে ওঠে মুডি... আসলে শারীরিক ভাবে তার মধ্যে একটা হরমোনাল ইম্‌ব্যালেন্স কাজ করে, যেটা দেহের পক্ষে ক্ষতিকারক বলতে পারিস। আর একটা ব্যাপার জেনে রাখ, এই যৌন ক্ষুধাটা ঠিক মত মেটাতে পারলে ওটা একটা খুব সুন্দর স্ট্রেস রিলিভার হিসাবে কাজ করে... সেই জন্য দেখবি আগেকার দিনে মেয়েদের অনেক ছোট বেলায় বিয়ে হয়ে যেতো... অস্বীকার করলে হবে না, সেই আচারগুলোর পেছনে একটা সায়েন্টিফিক ইকোয়েশন কাজ করতো সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না...’ বলে একটু থামে তৃষ্ণা... ‘কিন্তু আজকাল মেয়েরা বেশি বয়সে বিয়ে করছে, তাই এর ফলে তাদের সেই সেক্সুয়াল নীডটা পুরণ হতে সময় নেয়, ডিলেড হয়... যেটা মেয়েদের মানসিক ইমব্যালেন্সএর একটা প্রধান কারনও বলতে পারিস... যারাই এই ধরনের শারীরিক যৌন ক্ষুদা নিজের ভেতরে লোকলজ্জার ভয়ে চেপে রাখে, তারা কেমন অদ্ভুত একটু খিটখিটে স্বভাবের হয়ে দাঁড়ায়...’

‘হুম... খুব একটা খারাপ বলিস নি...’ বোঝদারের মত মাথা নাড়ে সুদেষ্ণা... তারপর প্রশ্ন করে... ‘আর দ্বিতীয়টা?’

‘দ্বিতীয়টা হচ্ছে এই রকম...’ ফের বলতে শুরু করে তৃষ্ণা... ‘সচারাচর দেখা যায় আমরা, মানে ভারতীয় মেয়েরা আমাদের যৌনাত্বক পরিতৃপ্তিটা তুলে দিই আমাদের স্বামীদের হাতে... তাতে ব্যাপারটা সতীসাবিত্রী মার্কা হয়ে ওঠে ঠিকই কিন্তু এক দিক দিয়ে দেখতে গেলে পুরো ঘটনাটা একটা ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।’

‘ঝুঁকি? কি ভাবে?’ আশ্চর্য হয় তৃষ্ণার কথায় সুদেষ্ণা...

‘ঝুঁকি বইকি... পৃথিবীর সমস্ত পুরুষ মনে করে তারা বিছানায় প্রত্যেকেই এক একজন স্টাড... যৌনক্রিড়ায় অসম্ভব পারদর্শী... আসলে কিন্তু সত্যটা একেবারেই তা নয়... প্রতিটা পুরুষ বিভিন্ন... বিভিন্ন তাদের যৌন ক্ষমতা, তাদের লিঙ্গের পরিমাপ, এবং সর্বপরি তাদের নারীকে চরম সুখের শিখরে পৌছে দেওয়ার ক্ষমতা... বলছি না যে প্রতিটা পুরুষই অক্ষম বা অপারদর্শী... কিন্তু যতটা নিজেদের ক্ষমতাশীল মনে করে তার একশ ভাগের পাঁচ ভাগেরও কিনা সন্দেহ... এবং সেই কারনেই একটা নারীর প্রকৃত যৌনক্ষুধা একশ শতাংশ নিবৃত্ত্য করা কোন পুরুষের পক্ষেই সম্ভব হয় না... যার ফল স্বরূপ সেই নারীর মধ্যে দেখা দেয় ফ্রাস্ট্রেশন... এমন অনেক পুরুষ আছে, যে হয়তো ফোরপ্লে কি, তাই জানে না... হয়তো ভাবে আমাদের ওখানটায় খানিকক্ষন মুখ দিয়ে চুষলেই ফোরপ্লে করা হয়ে গেলো... এতো এক রকম বললাম, দেখতে গেলে এই রকম লিস্টের শেষ নেই... আর সেই কারনেই বলছি, যে নারী সম্পূর্ণ ভাবে স্বামীর ওপরে নির্ভর করে নিজের যৌন ক্ষুধা মেটানোর, সেটা একরকমের জুয়া ছাড়া আর কিছুই নয়... হতেও পারে, আবার নাও পারে... না হওয়াটাই এক্ষেত্রে মাত্রাধিক বলে ভাবতে পারিস...’

‘তাহলে উপায়?’ চিন্তিত মুখে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা...

‘ঠিক যেটা গতকাল রাতে তুই করেছিলিস...’ উত্তর দেয় তৃষ্ণা।

‘হুমমম...’ কয়েক সেকেন্ড ভাবে সুদেষ্ণা, তারপর প্রশ্ন করে, ‘তাহলে ভার্জিনিটি? সেটা?’

‘সেটা আবার কি?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে তৃষ্ণা সুদেষ্ণাকে।

‘না, মানে, আমি বলতে চাইছি যে... ওই যে... আমাদের হাইমেন...’ গলা নামিয়ে চাপা স্বরে বলে ওঠে সুদেষ্ণা... ‘ওটার যদি কিছু হয়, মানে কিছু ভাবে ওটা ড্যামেজ হয় বা ফেটে যায়...’ বলতে বলতে চিন্তান্বিত হয়ে ওঠে তার মুখ... ‘মানে সে ক্ষেত্রে বিয়ের রাতে নিজেকে ভার্জিন, সেটা কি করে প্রমাণ করবো?’

‘ওহ! গড! সুদেষ্ণা...’ বড় বড় চোখ করে তাকায় তৃষ্ণা... ‘তুই কোন শতাব্দীতে বাস করছিস রে? হ্যা?’

এই ভাবে ওকে বলাতে বোকা বোকা মুখে তাকায় সুদেষ্ণা... তৃষ্ণার কথায় নিজেকে কেমন বাচ্ছা মেয়ের মত মনে হয় তার...

সুদেষ্ণাকে অপ্রস্তুত করতে চায় না তৃষ্ণা, স্মিত হেসে বলে, ‘আচ্ছা, বেশ... প্রথমত ভার্জিনিটি বলতে তুই যেটা বলতে চাইছিস, সেটা হলো যে একটা পুরুষের সাথে সেক্সুয়াল ইন্টার্কোস না করা... তাই তো? সেটাই আসল কথা... ঠিক কি না?’

ঘাড় হেলায় সুদেষ্ণা সসংকোচে... সঠিক উত্তর খুঁজে পায় না সে...

‘ভুল বলিস নি... কতকটা তাই বলতে পারিস... আর তোর কথা মত হাইমেন ভার্জিনিটির প্রমান সেটা ছিল আগের যুগে, এখন নয়... আগেকার দিনে মেয়েরা বাড়িতে বসে থাকতো, সেই রকম কোন ফিজিকাল কাজ কর্ম তাদের করতে হতো না... কিন্তু আজকের দিনে দেখ... মেয়েদের বেঁচে থাকতে কি পরিমান লড়াই করে যেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত... শুধু তাই বা কেন? আমরা মেয়েরা ছেলেদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কোন কাজে হাত লাগাই না? এমনকি রীতিমত সমস্ত রকম স্পোর্টসএও পার্টিসিপেট করছি... তাই নয় কি? তাই যে কোন ফিজিকাল অ্যাক্টিভিটির ফলে আমাদের শরীরের মধ্যের হাইমেন যখন তখন ছিড়ে যেতেই পারে... তাই আজকের যুগে হাইমেনএর অনুপস্থিতি কখনই কোন নারীর লুজ ক্যারাক্টারের সঙ্গা হতে পারে না... হতে পারে না ভার্জিনিটির প্রমান...’

কথাটা ঠিক মত হৃদয়গ্রাহ্য হয় না সুদেষ্ণার... ‘কিন্তু যদি সে প্রশ্ন করে বিয়ের রাতে?’ জিজ্ঞাসা করে বন্ধুকে।

‘যা সত্যি, তাই বলবি...’ হাসে তৃষ্ণা... ‘বরং উল্টে তার ভার্জিনিটির প্রমাণ চাইবি! দেখ সুদেষ্ণা, বিবাহটা সম্পূর্ণ বিশ্বাসের ওপরে গড়ে ওঠে, ওটা একটা ছোট্ট চামড়ার টুকরো নয়... যেটার থাকা না থাকার ওপরে সব কিছু নির্ভর করবে... যদি সে তোকে বিশ্বাস না করতে পারে, তাহলে সে আশা করে কি করে যে তুইও তাকে বিশ্বাস করবি অন্ধের মত? সে প্রমান করতে পারবে কি তার ভার্জিনিটি? তাহলে সে কি করে চাইবে তোর ভার্জিনিটির প্রমান?’

কিছু বলে না সুদেষ্ণা, মন দিয়ে শুনতে থাকে তৃষ্ণার কথা... যেন তৃষ্ণা ওর বন্ধু নয়, শিক্ষকের মত করে ওকে বোঝাচ্ছে...

একটু পরে অস্ফুট স্বরে জিজ্ঞাসা করে, ‘আচ্ছা, লাগে? মানে যখন ওটা ছিড়ে যায়?’

সুদেষ্ণার প্রশ্নে ওর চোখের দিকে তাকায় তৃষ্ণা, তারপর মাথা নেড়ে বলে, ‘আনফরচুনেটলি, লাগে... আর সেটা সব মেয়েদেরই একটু সহ্য করতে হয়... শুধু তাই নয়... ওটা ছিড়ে গেলে সামান্য রক্তপাতও হয়, তবে বেশিক্ষন নয়, প্রথম কিছুক্ষন, তারপর সেটা আপনা থেকেই চলে যায়... ব্যস... তারপর আর কিছু মনে থাকে না... তবে, হ্যা... প্রথমে অবস্যই একটু লাগে... সেটা অস্বীকার করার কিছু নেই...’

‘তাহলে তার প্রয়োজনই বা কি?’ ভুরু তুলে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা... ‘মানে, আমি বলতে চাইছি যে ভেতরে কিছু না করে বাইরে থেকেই যদি করা যায় আরকি... আসলটা না হয় বিয়ের জন্যই রেখে দেওয়া গেলো...’

‘সেটা দেখ একেবারেই নিজের নিজের পার্সোনাল চয়েস... যদি তাকে সেই রেস্পন্সিবিলিটি দিতে চাস, দিবি...’ কাঁধ ঝাঁকিয়ে উত্তর দেয় তৃষ্ণা... ‘কিন্তু একটা জিনিস তোকে মনে রাখতে হবে, সে কিন্তু তোর মনের খবর প্রথম থেকেই রাখবে না... সেটা সম্ভবও নয়... তাই তার পক্ষে তোর শরীরের মধ্যে তৈরী হওয়া সেই মুহুর্তের যন্ত্রনা বা ব্যথা, সেটাও তার পক্ষে অনুভব করা সম্ভব নয়... তাতে কি হবে বলতো... পরবর্তি পর্যায়ে সেই মানুষটার সাথে ইমোশানালি বা কখন সখনও ফিজিকালিও বলতে পারিস একটা ভীতির পরিবেশ তৈরী হয়ে যায়... যেটা পরবর্তী পর্যায়েও কাটে না অনেক সময়... আর সেটার জন্য সেই মানুষটাকে দোষ ও দিতে পারা যায় না সব সময়... কারণ খুব স্বাভাবিক ভাবেই ওই সময় সেই মানুষটার মধ্যেও একটা উত্তেজনা কাজ করে... তার পক্ষে তখন নিজেকে সংযত করা সম্ভব নয়... এতটাই উত্তেজিত হয়ে থাকে মিলিত হবার আশায়...’

‘মানে... মানে বলতে চাইছিস যে তাহলে ওটা প্রথমে নিজে করাই উচিত...’ চিন্তিত মুখে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা...

‘আমি কিছুই বলতে চাইছি না... সবটাই তোর নিজস্ব ব্যাপার...’ বলে ওঠে তৃষ্ণা... ‘আমি শুধু একটা কথাই বলতে পারি যে একবার তোর শরীরের মধ্যে থাকা ওই হাইমেনটা ফেটে গেলে, বাস্তবিক তোর সামনে একটা নতুন জগতের দিশা খুলে যাবে... সেক্সুয়াল এক্সপ্লোরেশন বা সুখ, যাই বল না কেন... তারপর যত দিন যাবে, দেখবি তত অভিজ্ঞতা বাড়বে এই ব্যাপারে... তাতে আরো সুখের সন্ধান পাবি একটু একটু করে...’

শুনে চুপ করে যায় সুদেষ্ণা... তৃষ্ণাও আর কিছু বলে না... বন্ধুকে পুরো ব্যাপারটা অনুধাবন করতে সময় দেয় সে...

বেশ খানিক চুপ থেকে ধীর কন্ঠে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা, ‘তুই করিস?’

‘নিশ্চয়ই...’ দৃঢ় কন্ঠে উত্তর দেয় তৃষ্ণা... ‘নিশ্চয়ই করি... আর শুধু আমি কেন? আমার জানা শোনা অনেক মেয়েই করে... শুধু মেয়ে নয়, আমি জানি অনেক বিবাহিত মহিলাও করে থাকে... আমি তো মনে করি এটা একটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার... এটাতে কোন অবাস্তবতার প্রশ্নই নেই... হ্যা, একটা কথা মাথায় রাখা উচিত, আর সব কিছুর মতই, বেশি করা উচিত নয়... ব্যস...’

‘কি করে করিস?’ প্রশ্নটা করে নিজেই অস্বস্থিতে পড়ে যায় সুদেষ্ণা... ‘না মানে বলতে চাইছি যে একদম স্পেসিফিকালি নয়, ইন জেনারাল, মেয়েরা কি ভাবে করে?’

‘কাল তুই কি ভাবে করেছিলিস?’ ফিরিয়ে প্রশ্ন করে তৃষ্ণা...

‘আমি?’ থতমত খেয়ে যায় তৃষ্ণার প্রশ্নে... ‘আমি... মানে... ওই তো... ওখানে হাত দিয়ে... মানে ওপর থেকেই আর কি... কেমন ভেজা ভেজা লাগে হাতে... হড়হড়ে... খারাপ লাগছিল না... বেশ ভালো লাগছিল... কিন্তু তারপর আর এগোই নি... সরিয়ে নিয়েছিলাম হাতটা...’ বলতে বলতে কান দুটো গরম হয়ে ওঠে সুদেষ্ণার...

‘একদম ঠিক করছিলিস...’ বলে ওঠে তৃষ্ণা... ‘শোন... এই ব্যাপারে কোন নিয়ম নেই... তোর যেটা সঠিক মনে হবে, যে ভাবে তোর ইচ্ছা করবে, আরো ভালো করে বলতে গেলে তোর শরীর যেভাবে শায় দেবে, ঠিক সেই ভাবেই এগোবি... দেখবি তোর শরীরই তোকে বলে দেবে কি করতে হবে, তোর কাজ হবে শুধু শরীরের মত করে শুনে যাওয়া... ব্যস... বাকিটা আপনা আপনিই ঘটে যাবে দেখবি...’

‘ব্যাপারটা খুব একটা কঠিন নয়... কি বলিস?’ জিজ্ঞাসা করে সুদেষ্ণা...

‘একটুও নয়... খুব সাধারণ ব্যাপার আর একদম ন্যাচারাল...’ উত্তর দেয় তৃষ্ণা...

‘আর... আর তোর হাইমেন?’ আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করে ফের সুদেষ্ণা... ‘সেটা কি... মানে কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছিস তো?’

‘হু বুঝতে পারছি...’ বলে একটু চুপ করে তৃষ্ণা... তারপর খানিক পর উত্তর দেয়... ‘ওটা আমিই নিজে নিজেই করেছি...’

‘ওহ!... কি... কি করে? মানে কি দিয়ে?’ গলা নামিয়ে ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করে সে এমন ভাবে যেন কোন ষড়যন্ত্র করছে তার বন্ধুর সাথে...

ওকে ওই ভাবে জিজ্ঞাসা করতে দেখে হেসে ওঠে তৃষ্ণা... হাসতে হাসতেই হাতের মধ্যমাটা তুলে ধরে বন্ধুর মুখের সামনে...

‘ওহ!... বুঝেছি... থ্যাঙ্ক ইয়ু... থ্যাঙ্ক ইয়ু সো মাচ...’ বলতে বলতে জড়িয়ে ধরে প্রাণের বন্ধুকে...

ওর উচ্ছাস দেখে আরো হেসে ওঠে তৃষ্ণা... সুদেষ্ণার পীঠে হাত রেখে বলে ‘ইয়ু আর মোস্ট ওয়েলকাম মাই ডিয়ার...’ তারপর ওর দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে বলে ওঠে... ‘তবে একটা জিনিস দেখিস... ইয়ু উইল লাভ ইয়োর ফার্স্ট অর্গ্যাজম...’

এরপর দুই বন্ধু তাদের পুরানো দিনের কথায় মেতে ওঠে... কলকল করতে থাকে কফি শপের মধ্যে বসে... হাসি গল্পে মুখরিত হয়ে ওঠে তাদের টেবিল।

কিন্তু শত কথার মধ্যেও সুদেষ্ণার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় বারেবার তৃষ্ণার বলা কথাগুলো... ভাবে সে... আর যত ভাবে ততই তৃষ্ণার প্রতিটা কথা তার কাছে যুক্তিগ্রাহ্য বলে মনে হয়... সত্যিই তো... ঠিকই তো বলেছে তৃষ্ণা... সে এখন পুরো মাত্রায় যুবতী... সেখানে কেন সে নিজের শরীরের সুখ খুঁজে নেবে না? কেন সীমিত করে রাখবে সেই সুখের সন্ধান? গত রাতের অভিজ্ঞতা সে অস্বীকার করতে পারে না... সত্যিই তো... এক অদ্ভুত আরামের সন্মুখিন সে হয়েছিল... তার শরীর সাড়া দিয়েছিল এক সুখের ছোয়ায়... এখন সে বুঝতে পারছে তৃষ্ণার সাথে কথা বলে যে তারও দেহের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে এক অদম্য ইচ্ছা... সুখ পাওয়ার... তাহলে আটকাচ্ছে কিসে? নাহ! মনে মনে সে স্থির করে... এবার সে নিজের মত করে সুখ খুজে নিতে কুসুর করবে না...

ক্রমশ...

Post a Comment

0 Comments