অবদমিত মনের কথা – ৫৬ (কামদেব)

মাস খানেক পরের কথা। শুভর বিয়ে হয়ে গেছে,হনিমুনে যাবার জন্য কাছাকাছি দার্জিলিং ঠিক হয়েছে। সোমলতার বিয়ে হলেও সে ডা.শরদিন্দু ব্যানার্জির কাছে ফিরে এসেছে। ওর স্বামী এফআরসিএস করতে বিলেত গেছে। কিছুদিন পর সোমলতাও যাবে তার তোড়জোড় চলছে। একটা দুঃখ জনক খবর মিসেস মুখার্জি অসুস্থ হয়ে নার্সিং হোমে ভর্তি হয়েছিলেন, খবর পেয়ে পলি মলি এসেছিল। কিন্তু এসে মাকে জীবিত দেখতে পারেনি। সৎকার করে আবার এ্যামেরিকায় ফিরে গেছে। পারমিতার বিয়েও ঠিক বিয়ের পর তাকে মুম্বাই যেতে হবে। পাত্র মুম্বাই নিবাসী। খুশবন্ত দার্জিলিং-এ এসপির দায়িত্ব নিয়েছে,আম্মীকে নিজের কাছে নিয়ে এসেছে। মুন্নির পেটে বাচ্চা আছে জেনে বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে তিনি বেশি ঘাটাঘাটি করেননি। রতিকে নিজের ছেলের মত মেনে নিয়েছেন,কেননা তার নিজের কোনো ছেলে নেই।
এখন পাড়ায় গরম খবর বঙ্কিম. সর্বত্র গুজ গুজ ফুস ফুস। বিষয়টা চ্যারিটি দপ্তরে এসেছে। উমানাথকে সমস্ত ব্যাপার বঙ্কিম খুলে বললেও উমানাথ চিন্তিত। বয়স্কদের কিভাবে বোঝাবে। সুলতা গোজ হয়েছিল,প্রথমে কিছুই বলতে চায়নি। কিন্তু দাদাদের হম্বিতম্বিতে চেপে রাখা সম্ভব হয়নি। মেজদা তিমির নরম প্রকৃতি সমীরের মত গোয়ার নয়। সে তো পারলে বঙ্কা শালাকে খুন করে। সুলতা বলল,তোমরা আমাকে মারো, বকুকে কিছু বলবে না।
তিমির বলল,সমু মাথা গরম করিস না,এখন মাথা গরম করার সময় না।
–তুমি বলছো কি মেজদা?মাথা গরম করব না?
–দেখ একহাতে তালি বাজে না। তিমির বলল।
–মেজদা আমি ভালবাসি,–। সুলতা বলল।
–চুপ কর। ভালবাসলে এই সব করতে হবে?কিছু করেনা বেকার ছেলে–।
–ও চেষ্টা করছে,কিছু একটা ব্যবস্থা হবেই।
–কি ব্যবস্থা হবে?হতচ্ছাড়ি বংশে কালি দিয়ে দিল। আমার শ্বশুরবাড়ীতে কি করে মুখ দেখাবো–? বড়দি মমতা খিচিয়ে ওঠে।
সুলতার বড় বোন মমতা। বিয়ের পর কলকাতায় থাকে। খবর পেয়ে ছুটে এসেছে।
–আঃ মমতা উত্তেজিত হলে হবে। চ্যারিটিতে খবর দিয়েছি। দেখা যাক ওরা কি করে?অনেক বিচক্ষন লোক আছেন মানুষ আছেন চ্যারিটিতে। মা কি করছে?তিমির বোনকে থামায়।
–কি করবে,কাদছে। মার কথা বলিস না মেজদা। এতকাণ্ডের পর বলছে ওর সঙ্গেই বিয়ে দিতে।
–ছোড়দি তুই আর কথা বলিস না,ভেবেছিস জানিনা কিছুই?সুলতা ফুসে উঠল।
সমীর ঠাষ করে এক চড় বসিয়ে দিল। তিমির বলল,কি হচ্ছে কি এতবড় মেয়ের গায়ে কেউ হাত তোলে?
সুলতা ককিয়ে উঠল,মেরে ফেল আমাকে মেরে ফেলো। মেজদা ঐ গুণ্ডাটাকে বলো আমাকে মেরে ফেলতে।
মমতা আর কথা বলেনা। বিয়ের আগে ঐটা ছাড়া দিব্যেন্দু কিইনা করেছে। ব্যাটা বেইমান, ব্যাঙ্গালোরে যাবার আগে বলেছিল ফিরে এসে ফয়সালা করবে। ব্যাঙ্গালোর থেকে ফিরে বাপ-মায়ের ঠিক করা পাত্রীকে বিয়ে করে বউ নিয়ে ব্যাঙ্গালোর চলে গেল। রাগে দুঃখে ভেবেছিল আত্মহত্যা করবে। মেজদা ছিল বলে সবদিক ভালোয় ভালোয় মিটে গেল।
সুবোধ ব্যাঙ্কে চাকরি করে। মমতাকে খুব ভালবাসে,ওর মাই যা দজ্জাল। কদিন আর বাচবে বুড়ি, চুপ করে সহ্য করে যায়। তবে নাতি অন্তপ্রাণ।
খুশবন্ত বেরিয়ে গেলে একমনে লিখতে থাকে রত্নাকর। দলজিৎ চা দিয়ে জামাইয়ের পাশে বসেন। বাংলা বুঝলেও পড়তে পারেন না,বড় আফশোস। রতির গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,চা পিও পুত্তর।
রতি একটু মমতার স্পর্শ পেলে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়ে। কলম রেখে দলজিতের হাত চেপে নিজের গালে বুলায়। দলজিতের খুব ভাল লাগে ওর মুখে আম্মী ডাক শুনতে।
অফিস থেকে ফিরে একে একে জড়ো হয়। চ্যারিটির অফিস জমজামাট। সুলতার মেজদা তিমির এবং বঙ্কার মামা সুরেনবাবুও এসেছেন। সকলকে অবাক করে উপস্থিত হয়েছেন ডাক্তারবাবু। সভা শুরু হতেই প্রচণ্ড বাদ-প্রতিবাদ পারস্পরিক দোষারোপ। হাল ধরলেন, অবসর প্রাপ্ত বিচারক আর এন চৌধুরী। দুজনেই ছেলে মানুষ নয় প্রাপ্ত বয়স্ক এবং যা করার নিজ নিজ সম্মতিতে করেছে। আইনের চোখে অপরাধ বলতে পারিনা। তিমির বলল,স্যার আপনি ঠিক বলেছেন কিন্তু ছেলেটি বেকার নিজের কোনো সংস্থান নেই বউকে কি খাওয়াবে?আপনারা কি বলেন বোনকে জেনেশুনে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেব?
জাস্টিস চৌধুরি হেসে বললেন,ভাই আপনি আবেগ প্রবন হয়ে পড়েছেন। আপনার মনের অবস্থা বুঝি। ছেলেটি বেকার গ্রাজুয়েট,এখন কিছু না করলেও না খেয়ে নেই। আজ বেকার কাল কোন কাজ করবে না এটা যুক্তি হিসেবে মেনে নেওয়া যায় না। তিমিরের মনে হল বিয়েটা মেনে নেওয়াই ভাল। তাছাড়া না মেনে উপায় কি?মোটামুটি সভা যখন শেষ হতে চলেছে গোল পাকালেন সুরেনবাবু। উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ভগ্নীপতি মারা যাবার পর দিদির দায় তার উপর বর্তেছে। ভগ্নীপতির পেনশন ছাড়া সংসারে দিদির কিছু দেবার সামর্থ্য নেই। কিন্তু নিজের দিদিকে তো ফেলে দিতে পারেন না কিন্তু আরেকটা মেয়ের দায়িত্ব তিনি নিতে পারবেন না,সাফকথা।
সভায় গুঞ্জন শুরু হল কেউ সুরেনবাবুর উপর বিরক্ত আবার কেউ বলল,ঠিকই আজকালকার বাজারে উনি আরেকটা সংসার কিভাবে প্রতিপালন করবেন। ওর নিজেরও সংসার আছে। সবাইকে থামিয়ে ড শরদিন্দু ব্যানার্জি উঠলেন। তিনি একটু ভেবে বললেন, আমি মেয়েটিকে চিনি না কিন্তু বঙ্কিম পাড়ার ছেলে ভদ্র নম্র, মানুষের সুখে দুখে পাশে দাড়াতে দেখেছি। আজকাল চাকরি পাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। জাস্টিস চৌধুরির সঙ্গে একমত আজ না হোক কাল পাবে। শুনলাম মেয়েটির যা অবস্থা কবে চাকরি পাবে তার জন্য বসে থাকা যায় না।
কে একজন বলল,একমাস। বেলা চৌধুরি ধমক দিল,চ্যাংড়ামী হচ্ছে?
আমি একটা প্রস্তাব দিচ্ছি,আমার কম্পাউডার আছে যদি বঙ্কিম রাজি থাকে তাহলে যতদিন চাকরি না হয় কম্পাউডারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে পারে।
উমানাথ বলল,ডাক্তারবাবু বঙ্কিম রাজী আছে।
ডাক্তারবাবুর কানে একটা কথা যেতে উনি বললেন,আমার যিনি কম্পাউণ্ডার তার দুটি বাচ্চা আছে তিনি যা পান তাতেই সংসার চলে যায়। প্রকাশ্যে বলব না কত পায়।
জাস্টিস চোউধুরী বললেন,ডাক্তার আমার এবং সভার পক্ষ হতে আপনাকে অভিনন্দন। মেয়ে কবে যাচ্ছে?
–ভিসা পেলেই চলে যাবে।
বাইরে বেরিয়েই হিমেশ ধরল,এই বঙ্কা চা খাওয়াতে হবে।
বঙ্কিমের মন ছটফট করছে সুলতার জন্য। বেচারি কত কষ্ট পাচ্ছে কে জানে। এখন বাড়ির বাইরে বেরোয় না। সবাই চায়ের দোকানে গেল,উমানাথ বেলাবৌদির সঙ্গে কি কথা বলছে বলল,তোরা যা আমি আসছি।
সুদীপ বলল,ব্যাস গেটপাস হয়ে গেল বঙ্কা এবার সরাসরি বাড়ীতে গিয়ে দেখা কর।
ভোরবেলা উঠে জিমঘরে কিছুক্ষন কসরৎ করা খুশবন্তের দৈনিক রুটিন। ঘেমে নেয়ে বেরিয়ে রতিকে না দেখে কান্তাকে জিজ্ঞেস করে,সাহেব কোথায়?
–সাহেব বড়ি মেমসাবের সঙ্গে বেরিয়েছে। কান্তা বলল।
খুশবন্ত বিরক্ত হয়ে ঘরে গেল। কান্তা ছেত্রী স্থানীয় মেয়ে বাংলোয় কাজ করে। আম্মি আসার আগে ভয়ে ভয়ে ছিল। রতিকে মেনে না নিলে কি করবে এই ছিল দুশ্চিন্তা। এখন নতুন সমস্যা,রাতে শোবার আগে ছাড়া রতিকে পায়না। আম্মি সারাক্ষন পুত্তরকে নিয়ে পড়ে আছে। নেহাৎ আম্মীর বয়স হয়েছে পায়ে বাতের জন্য খুড়িয়ে হাটে না হলে আম্মীকেই সন্দেহ করত। খুশবন্ত কথাটা ভেবে নিজেই হেসে ফেলল। কান্তা লেম্বুপানি দিয়ে গেল। কিছুক্ষন পর রতির গলা জড়িয়ে ধরে আম্মী এল।
খুশবন্ত জিজ্ঞেস করল,আম্মী কোথায় গেছিলে?
–সুবা সাম হাটাহাটি করলে সেহত কে লিয়ে আচ্ছা।
–ওর লেখালিখি করতে হয়–।
রতি বলল,না না তুমি চিন্তা কোর না–।
–তুমি চুপ করো,তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি?
–মুন্নি তুই এভাবে কথা বলছিস কেন?দলজিৎ মেয়েকে বকলেন।
খুশবন্ত ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে গেল। কান্তা চা বানাচ্ছে। রতি রান্না ঘরে গিয়ে বলল, মুন্নি আম্মীর কোনো দোষ নেই–।
–ভাগো হিয়াসে।
রত্নাকর বুঝতে পারে মুন্নির মেজাজ ঠাণ্ডা না হলে কথা বলা যাবে না। বেরিয়ে নিজের ঘরে লিখতে বসল। টেবিলের র্যাকে তার প্রকাশিত “যে কথা বলা হয়নি”-র পাঁচ কপি বই। দ্বিতীয় সংস্করণ বের হচ্ছে। “নবজন্ম” লেখা শেষ কিন্তু মুন্নি পড়ে বলেছে এখন ছাপার দরকার নেই। পাহাড়ের পটভুমিতে নতুন উপন্যাস শুরু করেছে। মুন্নি চা নিয়ে ঢুকল,টেবিলে রেখে দাঁড়িয়ে থাকে।
–তুমি বেরোবে না?রতি জিজ্ঞেস করল।
একটা চেয়ের টেনে হেসে বলল,বেরোলেই বুড়িয়ার সঙ্গে আড্ডা শুরু করবে।
–আম্মি আমাকে খুব ভালবাসে। মায়ের স্নেহ বাঙালী পাঞ্জাবী আলাদা করে বোঝা যায় না।
–আমার থেকে বুড়ীকে বেশি ভাল লাগে?
–মুন্নি আর ইউ ম্যাড?তুমি কি বলছো তুমি জানো?
রত্নাকর ভাবে মেয়েরা মেয়েদের ঈর্ষা করে তাই বলে মাকে?ধ্বন্দ্বে পড়ে যায়। ভারী চেহারা বৃদ্ধা মহিলা একটু খুড়িয়ে হাটেন,তার কাধে ভর দিয়ে সকাল সন্ধ্যে একটু হাটতে বেরোন।
–সকালে বেরোবার আগে একটু সময় পাই সন্ধ্যে বেলা বাসায় ফিরে দেখি তুমি নেই। ভাল লাগে একা একা?
–একা কেন,কান্তা থাকে তো।
–ও.কে, থাকো তুমি আম্মীকে নিয়ে। খুশবন্ত বেরিয়ে গেল।
এখানে পাহাড়ী রাস্তা খুশবন্ত নিজে গাড়ী চালায়না,ড্রাইভার বাহাদুর শিং আছে। বডি গার্ড মোহন ছেত্রী সব সময়ের সঙ্গী। বেরোবার আগে খুশবন্ত এসে রতির মাথা ধরে চুমু খেল। এটা তার নিয়মিত অভ্যাস। রতি বুঝতে পারে মুন্নির রাগ পড়েছে।
উশ্রী কদিন ধরে বলছে চলো না কোথাও ঘুরে আসি। উমানাথ বুঝতে পারে শুভ যাচ্ছে শোনার পর থেকেই নতুন বায়না শুরু হয়েছে। দাদা-বৌদিকে রেখে বউ নিয়ে বেড়াতে যাবার কথা ভাবতে পারেনা উমানাথ। মনীষা বলল,যাও না ঠাকুর-পো,কোনোদিন তো কোথাও যাওনি।
–তাহলে চলো সবাই মিলে।
–বাড়ী ফাকা রেখে?তোমার সঙ্গে যাবো কেন?গেলে আমি আর তোমার দাদা অন্য কেউ নয়।
দিদির বলার ভঙ্গী শুনে খিল খিল করে হেসে উঠল উশ্রী। উমানাথ বলল,কিন্তু শুভ যাচ্ছে এই সময়ে কি–।
–শুভ যাচ্ছে তো কি,দার্জিলিং কি এইটুকু জায়গা?যাও রতির সঙ্গে দেখা হবে,কত ভালবাসত তোমায়।
রতির কথা শুনে উমানাথ দুর্বল হয়। সেদিন ভাল করে কথা বলা হয়নি। বলল,দেখি টিকিটের কিছু করা যায় কিনা?
–তোমার বসকে বোলো,উনি তো শুনেছি পর্যটন দপ্তরে আছেন। মনীষা মনে করিয়ে দিল।
উমানাথের মনে হল অফিস থেকে বাড়িতে গেলে বিষয়টা আরো গুরুত্ব পাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। উমানাথ ঠিকানা খুজে সাহেবের বাড়িতে হাজির হল। বাড়ীতেই ছিলেন,দেখেই চিনতে পারলেন। সব কথা বলতে উনি বললেন সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে। হোটেলে উঠতে হবেনা পর্যটন দপ্তরের বাংলোয় ব্যবস্থা করে দেবেন। জিজ্ঞেস করলেন,আচ্ছা ঘোষ আপনার সেই বন্ধু স্যাণ্ডিকে পড়াতো উনি নাকি এখন লেখক?
–অনেকদিন ধরেই লেখে। এবারের পুজো সংখ্যায় ওর একটা উপন্যাস ছাপা হয়েছে।
রতির বিয়ে হয়ে গেছে বলতে গিয়েও বলল না।
শুভ রোজিকে নিয়ে চলে গেছে। বঙ্কাকে আর চায়ের দোকানে দেখা যায়না, ডাক্তার বাবুর চেম্বারেই বেশি সময় কাটে। লাইনের ধারে ঘর ভাড়া নিয়েছে। সুলতা সেখানেই থাকে,তিমির একদিন গেছিল বাড়ীর আর কেউ যোগাযোগ রাখেনা।
রাগিনী বসে আছে তার নিজের অফিস চারতলায়। আম্মাজী তার খাস কামরায় ধ্যানে বসেছেন,কিছুক্ষন পরেই সাক্ষাৎপ্রার্থীরা আসবে। কৃষ্ণকলি চারতলায় উঠে এসেছে। রাগিনীকে জিজ্ঞেস করে,আচ্ছা আনন্দকে দেখছিনা উনি আসেন না?
রাগিনী সন্দিগ্ধ চোখ তুলে কৃষ্ণকলিকে দেখে জিজ্ঞেস করে,আপনি কোন কলেজে আছেন?
–কে আমি?একটা অন্য কলেজের নাম বলল কৃষ্ণকলি।
–দেখুন সোসাইটি ঠীক করে দেবে কাকে কার সঙ্গে দেওয়া হবে। কারো পছন্দমত দেওয়া হয়না।
কৃষ্ণকলি হতাশ হয়। আগে বাস স্ট্যাণ্ডে আনন্দর সঙ্গে মাঝে মধ্যে দেখা হতো,বহুকাল দেখা হয়না। কলেজের সঙ্গে যুক্ত কিছু করতে গেলে অনেক ভেবেচিন্তে করতে হয়। পুজোর কটাদিন কীভাবে যে কেটেছে বলার মত নয়। আবার বিয়ে করবে কিনা চিন্তাটা মাথায় ঘুর ঘুর করে। কোথাও বেড়াতে যাবে ভেবেছিল কিন্তু একা একা ভাল লাগেনা।
উমানাথ ফিরতে উশ্রী খবরটা শুনে খুশী,টিকিটের ব্যবস্থা হয়ে গেছে,গোছগাছ শুরু করে দিয়েছে। মাঝে আর একটা রাত। দিদির জন্য ভাল কিছু একটা কিনে আনবে, নন্টূর জন্যও। মনীষা বলল,শীতের পোশাক নিতে ভুলোনা।

(চলবে)

Post a Comment

0 Comments