পরভৃত by কামদেব – ৬৪

ভোরে স্কুল বেলা অবধি ঘুমালে চলবে না।বন্দনা ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসল।পাশে কেদরে শুয়ে আছে ধনেশ।লুঙ্গি উঠে গেছে কোমরে।তলপেটের নীচে নেংটি ইদুরের মত নেতিয়ে রয়েছে ধনেশের বাড়া।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।একসময় বাড়ার জন্য বন্দনার মনে ছিল আকুলতা।এখন ভাবনা বদলে হয়েছে আরেকটু বড় মোটাসোটা হলে ভাল হতো।চাহিদার শেষ নেই।
ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গল এমার।উঠে টেবিলের উপর থেকে হাত বাড়িয়ে ফোন নিয়ে কানে লাগিয়ে বলল,বলুন ড.হালদার–হ্যা যাচ্ছি–মিটে গেছে–হি-হি-হি–রাখছি–হ্যা-হ্যা বলুন আপনি আমার পিতৃতুল্য–আপনি কি বললেন?–কোমরে মৃদু আঘাত–উনি আবার সব কথা মমকে রিপোর্ট করেন–ভাল করেছেন–রাখছি?
ঋষির মাথাটা টেনে কোলে তুলে নিতে হাত দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরল।বারাসাতে তিনটে অপারেশন আছে।ঋষি বেরিয়ে গেলে যাবে।ম্যানেজারবাবু খবর নিয়েছেন আমার ঠিক কি হয়েছে? এমা নিজের মনে হাসল।
ঋষির নিঃশ্বাস লাগছে ওখানে।বিছানার দিকে নজর পরতে আতকে উঠল।বা-হাত দিয়ে দেখল তখনো চটচট করছে।ইস-স কাল একদম খেয়াল করেনি।কাল ওয়াশ না করেই ঘুমিয়েছে সেজন্য হয়তো চুইয়ে পড়েছে।ঋষির মাথা নামিয়ে রেখে বিছানা থেকে নেমে লুঙ্গি জড়িয়ে নিল।হ্যাঙ্গার হতে জামা নিয়ে গায়ে দিয়ে ভাবল ঋষিকে ডাকবে।পরে মনে কাল অনেক রাত অবধি জেগে ছিল ঘুমোচ্ছে ঘুমোক।
একটা চাদর দিয়ে ঋষিকে ঢেকে দিয়ে বাথ্রুমে গেল এমা।কমোডে বসে শুশু করে ভাল কোরে আঙুল ঢুকিয়ে ধুয়ে ফেলল।সোমু সময় নেয় বেশি।
কালও সোমু চা এনে খাইয়েছে।এমা রান্না ঘরে গিয়ে চা করতে থাকে।নিজের আঙুলে নীলা বসানো আঙটির দিকে নজর পড়তে একটা চিন্তা মাথায় এল। কিছু একটা বাধন থাকা ভাল।ঘরে ঢুকে দেখল ঘুম থেকে উঠে লুঙ্গি পরে বসে আছে সোমু ।চায়ের কাপ টেবিলে রেখে চোখাচুখি হতে হাসল।সোমুর হাত ধরে আঙুল্গুলো দেখতে লাগল এমা। তারপর নিজের আঙটি খুলে একটা আঙুলে পরিয়ে দিল।
ঋষি বলল,একী?
–আঙটি দেখে মনে পড়বে আমাকে।
–এমনিই তোমাকে ভুলতে পারবো না।
–তাহোক এটা আমার চিহ্ন।
ঋষি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আঙটিটা দেখতে থাকে।ম্যাডাম খিন তাকে পছন্দ করেনি।এমা ভুল করছে নাতো?ম্যাডাম খিন স্বামীর প্রতি বিরূপ,ভদ্রলোক বাঙালী সেজন্য বাঙালীকে পছন্দ করেন না ম্যাডাম খিন।কানাঘুষোয় শুনেছে এসব কথা।
এমা টেবিল হতে চায়ের কাপ এনে ঋষির হাতে দিল।ঋষি বলল,এমা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
–আমাকে খুব সেক্সি মনে হয়েছে?
–না তা নয়।তোমার মায়ের নাম খিন।এর অর্থ কি?
–আমার গ্রাণ্ড মম কিল।আমাদের নামের সঙ্গে মায়ের নাম থাকে।যেমন আমার মম খিন কিল আমার নাম এমা খিন।খিন মানে friendly.
–তোমার নাম?
–এমা মানে beloved.তোমার নামের অর্থ কি?
–ঋষভ সোম।
–অর্থ বলো।
ঋষি ইতস্তত করতে থাকে।এমা বলল,বলো।
ঋষি বলল,Bull.
এমা খিল খিল করে হেসে উঠল বলল,রিয়ালি ইউ আর এ্যা বুল।আই লাইক ইট।তুমি রেস্ট নেও আমাকে রান্না করতে হবে।
–ক্যাণ্টিন থেকে আনলে হবে না?
–তোমার জন্য রান্না করতে ভাল লাগে।এমা চলে গেল।
ঋষি একা হতেই মনের মধ্যে ছেড়া ছেড়া মেঘের মত ভাবনা গুলো ভাসতে থাকে।তার জীবন অবশেষে এক বর্মী ডাক্তারের সঙ্গে জুড়ে গেল।এমার গর্ভে বেড়ে উঠবে তার সন্তান।ছোড়দিকে নিয়ে চিন্তা নেই।অনেক উদার বাস্তববাদী।তার ভাইটা এম.এ পড়েছে শুনলে খুশি হবে।কাকে বিয়ে করল তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই।ভাই সুখী হয়েছে ভাল আছে তাতেই তার আনন্দ।চিন্তা হয় বড়দিকে নিয়ে।বড়দি এমন ছিলনা সুনীলদার জন্যই অনেক বদলে গেছে বড়দি।কি করছে রান্নাঘরে এমা?
ঋষি উঠে চুপিচুপি রান্নাঘরে গিয়ে এমার পিছনে গিয়ে দাড়ালো।এমা বুঝতে পেরে মুচকি হাসল।কিন্তু পিছন ফিরে তাকালো না।সোমু কখন আসবে বোধহয় সেকথাই ভাবছিল।
ঋষি ঘাড়ের কাছে মুখ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,তোমার মম যদি রাজি না হয়?
এমা ঘাড় ঘুরিয়ে হেসে বলল,তুমি মন দিয়ে পড়াশুনা করবে।সমস্ত ভাবনা চিন্তা সমস্যা আমাকে দিয়ে নিশ্চিন্তে তোমার কাজ করবে।ভাল রেজাল্ট চাই।ওকে?
ঋষি বুঝতে পারে বর্মী সমাজ কেন ফিমেল ডমিনেটেড।বাস্তবের আঁচ তার গায়ে লাগতে দিচ্ছে না।দু-দিন কেমন এ্যাক্টিং করল ভেবে হাসি পেল ঋষির।সত্যি খুব ঘাবড়ে গেছিল।নার্সিং হোমের সবার চোখে দেখেছিল উদবেগ।
–একদিন তোমার দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাবো।এমা বলল।
বড়দির সঙ্গে এখনি নয় বরং ছোড়দির সঙ্গে দেখা করা যেতে পারে।ঋষি বলল,ছোড়দি অনেক দূরে থাকে লিশহর।
–অনেক দূরে গেছি।কল্যাণী চেনো?কল্যাণীতে অপারেশন করতে গিয়েছি।
এমাকে অনেকে গাইনি বলে জানলেও আসলে ও একজন দক্ষ সার্জেন।
বন্দনাদি অনেক বদলে গেছে আগের মত নেই।কঙ্কাকে কত কথা বলতো এক একসময় বিরক্তিকর লাগতো সেই বন্দনাদি এখন গম্ভীর।দেখা হলে মৃদু হাসি ব্যাস।কথা বলেনা ভালই হয়েছে কঙ্কারও বেশি কথা ভাল লাগেনা।টিচারস রুমে একপাশে চুপচাপ বসে থাকে,ক্লাস থাকলে ক্লাসে যায়।একটু দূরে শিউলি আর ডলি নিজেদের মধ্যে
কথা বলছে।ওদের একটা কথা কানে যেতে সজাগ হল কঙ্কা।সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাবার পর একদম অন্যরকম।কঙ্কার সঙ্গে চোখাচুখি হতে হাসল ডলি।কঙ্কা জিজ্ঞেস করল,কাকে সাইক্রিয়াটিস্ট দেখালে?
–আমার ননদ।ডলি হেসে বলল।
–কেন কি হয়েছিল?
–তেমন কিছু নয়।সারাদিন চুপচাপ থাকতো।কারো সঙ্গে কথা বলতো না।ছোটো ননদের বিয়ের পর কেমন খিটখিটে মেজাজ।
–এর বিয়ে হয়নি?
–বিয়ে হবে কি?কোন ছেলেকেই পছন্দ হয়না।এর ভাল চাকরি নয় ওর শিক্ষাগত যোগ্যতা কম।একটা না একটা বাহানা– বাধ্য হয়ে শ্বশুরমশায় ছোটমেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলেন।ওরও তো বয়স হচ্ছে।
–কাকে দেখিয়েছো?
–ড.বৈদ্যনাথ হালদার।আমার হাজব্যাণ্ডের এক কলিগ ওর কথা বলেছেন।ডলি বলল।
–এখন ভাল হয়ে গেছে?
–বার পাঁচেক দেখাবার পর একেবারে নরম্যাল।তারপরই তো বিয়ে হল।শুনেছি ভালই আছে।শ্বশুরবাড়ির লোককে অবশ্য এসব কথা বলা হয়নি।
–সত্যি মানুষের মন খুব জটিল।শিউলি বলল।
কঙ্কা মৃদু হাসল।সত্যি মানুষ নিজেকে নিজেই কতটা চেনে?
ছুটির পর পথে যেতে যেতে কঙ্কাই জিজ্ঞেস করল,বন্দনাদি তোমার বাড়ী কতদুর হল?
–শেষ হয়ে এল।আমি ওখানে ফিরবো না।
–ভাইয়ের সঙ্গে থাকতে চাও না?
বন্দনা বলল,তোকে বলিনি অবশ্য কাউকেই বলিনি।আমি বিয়ে করেছি।
কঙ্কার মুখে কথা যোগায় না।বন্দনাদি রসিকতা করছে নাকি?বন্দনা বলল,মজা করছিনা।ভাবলাম শেষ বয়সে একজন সঙ্গে থাকা খুব দরকার।ধনেশকেই বিয়ে করলাম।
–তোমাদের প্রোমোটার?
–এখন আমার হাজব্যাণ্ড।বন্দনাদি লাজুক হাসল।
শুষ্ক মুখে হাসি টেনে কঙ্কা বলল,এতো ভাল খবর।
ক্লাস শেষ বলা যায়।আর একটা ক্লাস ছিল শুনলো হবে না।ঋষি বেরিয়ে ফুটপাথে বুকস্টল গুলো ঘুরে দেখছে।দেখাই সার বই কেনার মত টাকা নেই।এমার কাছে চাইলেই দেবে কিন্তু ঋষি পারেনা।হঠাৎ খেয়াল হয় পাশে দাঁড়িয়ে কল্পনা।ঋষি জিজ্ঞেস করল,বই কিনতে এসেছেন?
–আপনাকে দেখে এলাম।ক্লাস শেষ?
–হ্যা তা বলা যায়।ঋষি বলল।ফোন বাজতে বলল,এক মিনিট।হেসে কানে লাগিয়ে বলল,বলো–ঠিক আছে ক্লাস শেষ হলেই–না আড্ডা দেবোনা–পাশে কেউ নেই–রাখছি?
ঋষি ফোন রেখে হাসলো।কল্পনা বলল,কফি খাবেন?
একটু ভেবে ঋষি বলল,চলুন।
দুজনে কফি হাউসে ঢূকে একটা নির্জন কোনে বসল।কল্পনা বেয়ারাকে ডেকে কফি পকোড়া ফরমাস করল্ল।যতটা উৎসাহ নিয়ে ঋষিকে কফি হাউসে এনেছে কল্পনা এখন কিভাবে শুরু করবে ভেবে পায়না।
বেয়ারা কফি পকোড়া দিয়ে গেল।কল্পনা চামচ দিয়ে কফি নাড়তে নাড়তে বলল,আপনি তো আশিসের ব্যাপার জানেন?
–দেখুন কেউ যদি মনে করে তার ভুল হয়েছে সেটা সংশোধন করা দোষের নয়।
–অনেকে ভাবে সন্দীপের অবস্থা ভাল বলে আমি আশিসের সঙ্গে বেইমানি করেছি।আসল ঘটনা কিন্তু তা নয়।আশিস আমার সর্বনাশ করতে চেয়েছিল।কিভাবে সেদিন ওর হাত থেকে বেচেছি ভগবান জানে।
–যাক সেসব অতীত ভুলে যান।বেচে গেছেন এটাই বর্তমান।ঋষি হালকাভাবে বলল।
কল্পনা ফ্যাচ ফ্যাচ করে কেদে ফেলল।হঠাৎ কান্নার কি হল ঋষি বুঝতে পারেনা।ঋষি খারাপ কিছু তো বলেনি।ঋষি বলল,কল্পনা প্লীজ–সবাই দেখছে।খারাপভাবে কিছু বলিনি আপনাকে বিশ্বাস করুন।
কল্পনা রুমাল বের করে চোখ মুছল।তারপর নাকে রুমাল দিয়ে নাক ঝাড়া দিয়ে কফিতে চুমুক দিল।এই এক অমোঘ অস্ত্র মেয়েদের কথায় কথায় কেদে ফেলা।যাক কান্না থেমেছে।
কল্পনা বলল,আপনি খুব ভাল।আপনার কথায় কিছু মনে করিনি।আপনি বললেন বেচে গেছেন শুনে কান্না এসে গেল।
ঋষি কথার মাথামুণ্ডূ কিছু বুঝতে পারেনা।কল্পনা বলল, ঋষি এখন মনে হচ্ছে আগুণ হতে বাচতে জলে পড়েছি।
ঋষি বুঝতে পারে কল্পনার মনে কিছু কথা জমে আছে যা কাউকে বলতে পারছে না।নিজে মনে মনে দগ্ধ হচ্ছে।ঋষি বলল, কল্পনা আমাকে বিশ্বাস করলে সব খুলে বলতে পারেন।
–আপনাকে বিশ্বাস করিই বলেই এখানে আজ ডেকে এনেছি।
কল্পনা ধীরে ধীরে সেদিনের রিসর্টের কথা রেজিস্ট্রি বিয়ের কথা সব বলল।
–সন্দীপ কি বলছে এখন?চিন্তিত গলায় জিজ্ঞেস করে ঋষি।
–পরিস্কার করে কিছু বলছে না।আবার বিষয়টা আমল দিচ্ছেনা।
–মাসীমা-মেশোমশায় জানেন?
–এখনো জানে না কিন্তু কতদিন চেপে রাখা সম্ভব বুঝতে পারছি না।
–মানে?
–ওর বাচ্চা–।নিজের পেট দেখিয়ে আবার কেদে ফেলে কল্পনা।
–ইস এতবড় ভুল কেউ করে?অবশ্য ভুল তো ভুল জেনে বুঝে করলে আর ভুল হল কোথায়?
কল্পনা ভেঙ্গে পড়বেন না।আপনি সরাসরি ওর বাবাকে বলুন।
–সেটাই তো যদি অপমান করে মানতে না চায়?একা একটা মেয়ে ঋষি আমি কিছু ভাবতে পারছিনা–।কি করে যে সবার কাছে মুখ দেখাবো?বাবা যদি জানতে পারে আত্মহত্যা করবে আমি নিশ্চিত।
ঋষি সান্ত্বনা দেবার জন্য বলল,নিজেকে একা মনে করবেন না।আমি আছি আপনার পাশে।একটু ভেবে লল,কাগজ পত্রগূলো আমাকে দিতে পারবেন?
–সব ওর কাছে।কি করে জানবো শেষে এই অবস্থা হবে?
–সমস্যা নেই।আপনি ওর বাপের নাম ঠিকানা আমাকে দিন।
নাম ঠিকানা নিয়ে কল্পনাকে বিদায় দিয়ে রাস্তায় নামে।তাড়াতাড়ি ফিরতে বলেছে।আর দেরী করবে না।যাবার পথে সাধুরমোড় ঘুরে যাবে একবার।
কার্তিকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বেরিয়ে গেছে।কিছু টাকা বাবুয়া দেবে বাকীটা ব্যাঙ্কলোন নিয়ে ট্যাক্সি কেনার তোড়জোড় চলছে।বাবুয়ার সঙ্গে সন্দীপের ব্যাপারেও কথা হল।ছেলের নাম দিয়েছে ঋতম।কোহিনূর এইনাম পছন্দ করেছে।সাধুর মোড় হতে নার্সিংহোমের কাছে আসতে ঋষি ইতস্তত করে।সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই প্রশ্ন, এতক্ষন কোথায় ছিলে?তুমি জানোনা আজ আমার চেম্বার নেই?
কোনো উত্তর না দিয়ে ঋষি দুহাতে এমাকে বুকে চেপে ধরল।কিছুক্ষন ধরে রাখার পর এমার উত্তেজনা প্রশমিত হল।এমা বলল,চেঞ্জ করো আমি চা টিফিন নিয়ে আসছি।
খাবার করাই ছিল,গরম কোরে নিয়ে এল।চা খাওয়া শেষ হতে এমা এক অদ্ভুত কাণ্ড করল। পকেট হতে একটা প্যাকেট বের করে একটা সিগার ঋষির ঠোটে গুজে দিল।
ঋষি বলল,আমি কোনোদিন খাইনি।
–জানি।আমার অনুরোধ ছেলেরা খেলে বেশ স্মার্ট লাগে।
–তুমি ডাক্তার হয়ে একথা বলছো?
–কম খাবে প্লীজ?এমার চোখে আকুতি।
–কোনোদিন সিগারেট খাইনি আবার চুরুট?কিছু হলে আমি জানিনা কিন্তু?
এমা লাইটার জ্বেলে আগুণ ধরিয়ে দিল।ঋষি দিব্যি টানতে লাগল।যেমন ভয় পেয়েছিল এমন কিছু হলনা।এমা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।ঋষি জিজ্ঞেস করল,কোথায় পেলে?
–ড্যাডের সিগারের নেশা।আগেরবার এসে রেখে গেছিল।
ঋষি চুরুটে টান দিয়ে একমুখ ধোয়া ছাড়ল।এমা জিজ্ঞেস করে,এবার বলো কোথায় ছিলে?
ঋষি সমস্ত কথা বলল কল্পনার সঙ্গে কি কি ঘটেছে বিস্তারিত সব।এমা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,এসব তোমাকে ভরসা করে বলল? তুমি কি করবে এখন?
–কাল ছেলেটার বাবার সঙ্গে কথা বলবে।কাজ নাহলে আইনের পথে যেতে হবে।
সোমুর মুখে সম্পুর্ণ ঘটনা শুনে এমার মন বিষন্ন হয়।উঠে রান্নাঘরে চলে গেল।সমুকে মেয়েরা বিশ্বাস করে ওর চোখের দৃষ্টিতে কোনো মালিণ্য নেই।প্রথম যেদিন দেখেছিল কেমন যেন আপন মনে হয়েছিল।বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল চেনে না জানে । মনের ইচ্ছে মাথা চাড়া দিতে পারেনি।যখন জানল ভদ্রঘরের লেখাপড়া জানা ভাল ছেলে মনের রুদ্ধ ইচ্ছেটা বন্যার জলের মত আছড়ে পড়ে বাইরে।উপযাচক হয়ে বলেছিল I love you.সমু অবাক হয়ে গেছিল।মনে পড়ল প্রথম যেদিন ওর সঙ্গে কথা হয়।হাতে চোট মাথায় ব্যাণ্ডেজ কেমন করুণভাবে বলছিল আমাকে একটা কাজ দেওয়া যায়না এখানে?কথাটা মনে পড়তে মনে মনে হাসে এমা।
টেবিলে রাখা ফোন বেজে উঠতে ঋষি ফোন নিয়ে এমাকে দিল।এমা কানে লাগিয়ে বলল,বলছি…অফিসে কথা বলুন।ফোন কেটে দিল।
(চলবে)

Post a Comment

0 Comments