উপুড় হয়ে একভাবে রাত পার করে দেয়ার পর সকালে ঘাড় নাড়াতে পারছিনা। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসতেই কঘন্টা আগে কুমারত্ব হারানো পুরুষাঙ্গের মাথায় জ্বালা করে উঠল। রাতে বিছানার চাদরের সঙ্গে লেপ্টে গিয়েছিল। সকাল সকাল বরাবরের মত টং হয়ে থাকা অঙ্গটির দিকে তাকিয়ে একটু কচলে নিলাম। রাতের ঘটনার পর ছোট মিয়াকে একটু বাহবা দেয়া আরকি। ব্লাডার খালি করে বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখি আপু ড্রইং রুমে বসে আছে। পরনে শর্টস আর টপস। এরকম পোশাকে তাকে আগে দেখিনি। তবে কাল পোশাকহীন অবস্থায় দেখার পর আর অবাক হবার কিছু নেই।
- কাপড় পড়ে নে।
আমাকে আপাদমস্তক তীক্ষভাবে দেখে বলল। কাপড়চোপড় সুন্দরভাবে ভাঁজ করে সোফার হাতলে রাখা। আপু আরেকজনের কাপড় গুছিয়ে রাখছে, কল্পনা করাও কঠিন। তবুও এমন কিছু কল্পনা করে মনে মনে হাসলাম। জার্সি, আন্ডারওয়্যার রেখে শুধু ট্রাউজারটা পায়ে গলিয়ে নিলাম।
- খিচুরি গরম করা আছে, খেয়ে নে।
বলে আমার কোমর থেকে চোখ সরিয়ে শুভ সকাল জাতীয় কি একটা অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনায় মন দিল আপু। আবার বাথরুমে ঢুকে মুখ ধুয়ে চোখ মুছতে মুছতে কিচেনে ঢুকলাম। ওখান থেকেই খিচুরির সুবাস ভেসে আসছে। কাউন্টারের উপর প্লেট থেকে ধোঁয়া উড়ছে, খিচুরির উপর একটা ডিম ভাজি করে রাখা। দেখেই খিদেয় পেট মোচড় দিয়ে উঠল। ভাজা ডিমের কিনার থেকে মচমচে অংশ খানিকটা ভেঙে মুখে দিয়েছি এমন সময় কেউ বলে উঠল,
- পিঁয়াজ কাচামরিচ কাইটা দিব ভাই?
শুনে পিলে চমকে উঠলাম। ঝট করে পেছনে তাকিয়ে দেখি কিচেনের অপর পাশে দাঁড়িয়ে আপুদের বাসার কাজের মেয়ে, সোনিয়া। কেটলিতে পানি ফুটছে, সোনিয়ার হাতে চা পাতির কৌটা। আপনা থেকে বড় হয়ে যাওয়া চোখ সংকুচিত করে কোনরকমে বললাম, "লাগবেনা"।
খিচুড়ির প্লেট হাতে নিয়ে হুড়মুড়িয়ে কিচেন থেকে বেরিয়ে এলাম। বন্যা মির্জা খুব মনযোগ দিয়ে হারমোনিয়াম বাজাতে বাজাতে রবীন্দ্র সংগীত গাইছে। দ্বিগুণ মনযোগ দিয়ে তা শুনছে আপু।
- আপু, সোনিয়া কখন আসছে?
আপু আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ঘাড় উঁচু করল।
- কেন, কই থেকে আসবে? ও কোথায় থাকে জানিসনা?
বোকার মত কিছু বলে ফেলেছি এমনভাবে জবাব দিল আপু।
- চাচীর সাথে গ্রামে যায়নাই? তুমি না বললা বাসায় কেউ নাই!
আমি ভ্রু কুঞ্চিত করে জিজ্ঞেস করলাম।
- না।
সংক্ষিপ্ত জবাব এল।
- তাহলে কালকে রাত্রে কই ছিল ও?
- কেন? কিচেনে ঘুমাইতেছিল!
আমার বোকা বোকা মুখের দিকে একপলক তাকিয়ে আবার টিভির দিকে মনযোগ দিল রীমা আপু।
- ভূত দেখছিস নাকি, হু? ভয় পাইস না। মনে কর সোনিয়া নাই বাড়িতে। তোর চিন্তার কিছু নাই।
আরো কিছু জিজ্ঞেস করব বলে ঠিক করেছিলাম, কিন্তু এখন আপুর মনযোগ ভাঙানো উচিত হবেনা ভেবে ডিম খিচুরি সাবাড় করতে লেগে পড়লাম। খাওয়া শেষ করে জার্সি পড়ে বেরিয়ে গেলাম। বাসায় পৌঁছে গোসল সেরে তড়িঘড়ি কলেজের দিকে ছুটলাম। আজ কলেজে কোন ক্লাসেই মন বসলনা। বাংলা ম্যাডামের ঝর্ণার মত গলার আবৃত্তিও খুশি করতে পারলনা আমাকে। এক একটা ঘন্টা এক একটা দিনের মত মনে হচ্ছে। কলেজে শেষে একরকম ছুটতে ছুটতে বড় চাচার বাড়িতে ঢুকে পড়লাম। দাড়োয়ান আমাকে হুড়হুড় করে ঢুকতে দেখে অবাক হল।
আপুদের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম। শার্টের হাতা দিয়ে ঘাম মুছে চুল ঠিক করে কলিং বেল চেপে অপেক্ষা করছি। আপু বলে দিয়েছিল আজ বিকেলে চলে আসতে, তাই এত তাড়াহুড়া। পায়ের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। মুখটা হাসি হাসি করে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম।
- আসেন, ভাইয়া।
সোনিয়া দরজার হাতল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আমার হাসি মিলিয়ে গেল।
- আকাশ আসছিস?
ভেতর থেকে আপু উঁকি দিল। আমাকে দেখে খুশি হয়েছে।
- রুমে আয়।
ব্যাগটা ড্রইং রুমে রেখে ভেতরে গিয়ে আপুর নরম বিছানায় বসলাম। সুন্দর একটা গোলাপী পালাজো ধরণের পাজামা আর ঘিয়ে রঙের জামা পড়ে বসে আছে আপু। এমনিতে আমাদের সামনে এলে বুকের ওপর ওড়না ঝুলানো থাকে। তবে এখন আর আমার সামনে পর্দা টর্দা করে লাভ নেই বলে জোড়া পর্বতে আচ্ছাদন টানার প্রয়োজন অনুভব করছেনা।
- দাঁড়ায়ে আছিস কেন? কাপড় খোল। গরম লাগেনা?
ইমদাদুল হকের লুতুপুতু প্রেমের উপন্যাসের বই বন্ধ করে বলল। মোজা, শার্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি খুলে বিছানার পাশে রাখছি। আপু বিছানার অপর কোণ থেকে আমাকে দেখছে। প্যান্টের বেল্টে হাত দিয়ে দরজার দিকে তাকালাম। দরজা হাট করে খোলা। সোনিয়া মাঝে মাঝে এঘর থেকে ওঘরে হন্তদন্তভাবে যাতায়ত করছে।
0 Comments