সুযোগের সদ্ধ্যবহার by riddle Page:- 41



মহিলা কেন তার সাথে দেখা করতে চাইতে পারে তা ঠাহর করতে পারলেন না আফসার সাহেব। নিজেকে টনেটুনে সোজা করে মুখে গম্ভীর হাসিখুশি ভাব আনতে চেষ্টা করলেন। মিনিটখানেক পর দরজায় উঁকি দিল একটা মুখ,

- স্যার, আসবো?

সাধাসিধে, চশমা পরা সেই মুখ। তবে বর্তমানে যতটা না কঠিন তার চাইতে বেশি দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ বলে মনে হল।

- হু, আসুন, প্লীজ বসুন।

- আমি শিরিন আক্তার। আপনি চেনেন কিনা ঠিক জানিনা। বাট বেশ কয়েকবছর কলেজ কমিটিতে ছিলাম

- হ্যাঁ, অফকোর্স। আপনাকে কে না চেনে। আমি তখন পদে ছিলামনা বলে সম্ভবত আপনার সাথে কথা হয়নাই।

- আ, হ্যাঁ, তাই হবে।




নার্ভাস ভঙ্গিতে হাসলেন মহিলা।




একথা সেকথার পর আসল কথায় আসলেন আফসার সাহেব। ঠিক কি দরকারে একান্তে দেখা করতে চান এই মহিলা?

উত্তরটা খুব অপ্রত্যাশিত আর একাধারে সুবিধাজনক।







- ওহহো, এমন হল কেন?

জিজ্ঞাস করলেন প্রিন্সিপাল।

- আসলে স্যার তুমনের শরীরটা খারাপ ছিল এক্সামের সময়।এমনিতেই ও পড়াশোনায় কিছুটা দুর্বল। তার ওপর এই সমস্যায়.....

- হুম, আচ্ছা, আমি ওর মার্কশীটটা দেখি।




রতনকে ডেকে শিরিন আপার ছেলে তুমনের রেজাল্ট শীটটা আনিয়ে দেখতে লাগলেন আফসার সাহেব। একবার চোখ বুলিয়েই বুঝে গেলেন কোন গবেটের জন্যে সুপারিশ করতে এসেছেন এই মহিলা।

এরকম বিদুষী নারীর এই জাতের ভোদাই ছেলে কিভাবে হয়! গত বছরেও উপরের সুপারিশে পাশ করিয়ে দেয়া হয়েছিল। এবার সে ক্লাস ফাইভে। বরাবরের মতই প্রথম পার্বিকে ডাব্বা মেরেছে। বছরের মাঝখানে পড়াশোনার কারণে টিসি দেয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকেন আফসার সাহেব। নিজে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নিশ্চিত করেন নূন্যতম সুযোগ দেয়া যায় কিনা। এই গবেট সেক্ষেত্রে কোন সুযোগ পাওয়ার দাবি রাখেনা। বাংলা, ইংরেজি, সমাজ বিজ্ঞান তাও একটা পর্যায়ে আছে। ম্যাথে একেবারে গোলআলু। ধর্মের অধর্ম করে ফেলেছে যা মনে চায় তাই লিখে।

- আই অ্যাম সরি ম্যাডাম, কিন্তু ওর অবস্থা এত শোচনীয় যে আমি কি করতে পারি বুঝতে পারছিনা।

- প্লীজ স্যার, অন্তত এই বছরটা চালিয়ে নিতেই হবে।

- দেখুন ম্যাম, ওকে স্পেশাল কেয়ার নেবে এরকম প্রাইভেটে দিন। জেলা কলেজে ওর পড়াশনাই হবেনা। ওর আসলেই স্পেশাল কেয়ার দরকার।

- সেটা আমিও বুঝতে পারছি স্যার। বাট এই বছরটা না চালাতে পারলে খুব প্রবলেম হয়ে যাবে। ওর বাবা আমাকে খুব চাপ দিচ্ছে। ব্যবসার কাজে ঢাকা থেকে আসতে পারছেনা ঠিকই কিন্তু ফোন করে ছেলেকে শাশাচ্ছে। বাসায় এসেই পিঠের চামড়া খুলে নেবে বলে। তুমনের খাওয়া দাওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে।




বাপটা নিশ্চয়ই আস্ত হাঁদা। পয়সা থাকলেই সুন্দরী বউ পাওয়া যায় রসগোল্লার মত। ঐ ব্যাটার মাথার গোবরই নিশ্চয়ই ছেলের মাথায় জায়গা করে নিয়েছে। ঢাকায় বসে কার বাল ছেঁড়ে কে জানে!




আফসার সাহেব মহিলাকে যতই বোঝানোর চেষ্টা করেন তার পক্ষে হস্তক্ষেপ করা কতটা অসম্ভব ততই মহিলা মরিয়া হয়ে ওঠেন।

শেষে একেবারে উৎকোচের প্রস্তাবই দিয়ে বসলেন শিরিন আপা।

- দেখুন ম্যাডাম, মানি ক্যান্ট বাই এভরিথিং। এই কাজ করাটা আমার জন্যে খুব অসুবিধার হতে পারে।

- স্যার, আপনি চাইলে কেউ কিছু বলতে পারবেনা। এমাউন্ট নিয়ে কোন আপত্তি আমি করবনা।




টাকার নেশা বহু আগেই কেটে গেছে আফসার সাহেবের। তাই এই প্রস্তাবে গা করলেন না তিনি। তবে মহিলার বেপরোয়া ভাব দেখে একটা দুর্ধর্ষ আইডিয়া এল মাথায়। যদিও এযাবৎ কালে এতটা ঝুঁকি নেননি কখনো, তবু সব কিছুরই তো শুরু আছে!




- দেখেন, শিরিন আপা, পয়সা নিয়ে কাজ করা আমার ধাতে নাই। জাস্ট আপনি বলছেন বলে আমি ট্রাই করতে পারি। তবে নিশ্চয়তা দিতে গেলে খুব হার্ড হয়ে যাবে।

- প্লীজ গিভ মি শিওরিটি এন্ড আই'ল গিভ হোয়াটেভার ইট টেকস।

আকুতি ঝরে পরছে তার কন্ঠে।




- দ্যান ইট উইল টেক মোর দ্যান ইওর থট।

- কি চাচ্ছেন আপনি?




আশান্বিত দেখালো শিরিন আপাকে।

- দেখুন, এটা আমার ডিমান্ড। রাজি হওয়া না হওয়া আপনার ব্যাপার - আমি আপনার সাথে একান্তে কিছু সময় কাটাতে চাইছি।

- মানে?

ভ্র কুঁচকে গেল মহিলার।

- একজন পুরুষ একজন নারীর সাথে একান্তে কিছু সময় কাটাতে চাওয়ার মানেটা মনে হয় আপনি বোঝেন

কাঁপা গলায় কিন্তু জোর দিয়ে বললেন আফসার সাহেব।

Post a Comment

0 Comments