খাবারের প্যাকেট হাতে নিচ তলায় এসে দাঁড়িয়েছেন শিরিন ম্যাম। এদিক ওদিক খুঁজে দুজনের কাউকে না পেয়ে টেবিলের উপর প্যাকেটগুলো রেখে অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ করেই মাকে দেখতে পেয়ে আনিকা আফসার সাহেবকে বলল তাদের এখন নিচে নামা উচিত। কিছু না বলে কিশোরির পেছন পেছন সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামতে শুরু করলেন। নিজেকে সেয়ানা ঘুঘু মনে করতেন এতদিন। এখন দেখছেন বয়সে অর্ধেক হয়নি এমন পোলাপানের অভিজ্ঞতার মাত্রা তার পক্ষে ছোঁয়া কোন কালেও সম্ভব না। নামতে নামতে আনিকা জিজ্ঞেস করল,
- স্যার
- হা, বল
- আপনি তো জানতেই চাইলেন না আমি আম্মুর সাথে এখানে কেন এলাম?
- জানিনা। কেন?
- আপনি তো তুমনের এডমিশন টা বাঁচিয়ে দেবেন, তাইনা?
- হ্যাঁ। সেরকমই তো কথা
- কিন্তু সেকেন্ড সেমিস্টারে তো ও আবার ডাব্বা মারবে।
অবাক হলেন আফসার সাহেব।
- কেন? এমন হবে কেন! তোমার মা তো বললেন ভাল টিউশন করাবেন?
- হহুম, তা করাবে। তবুও ওর পক্ষে পাশ করা পসিবল হবেনা।
- কি বল! তাহলে তো বোর্ড এক্সামেও ফেল করবে!
- ইয়েস। তা হলে তো আপনার কলেজের র্যাঙ্কিং অনেক পেছনে চলে যাবে।
- স্ট্রেইঞ্জ! তুমি এসব বলছ কেন? এখন যদি আমি কাজটা না করি?
- হাহা, করবেন না কেন? শুধু এখনি না, নেক্সট এক্সাম এবং বোর্ড এক্সামেও আপনি রেজাল্ট পাল্টে দেবেন!
- আ'ম নট ম্যাড। প্রশ্নই আসেনা!
- হুম। ইউ উইল বি ম্যাড। আমার একটা প্রপোজাল আছে। সেটা শুনে ডিসিশান দিন।
- হোয়াট?
- আপন হয়ত ভাবছেন, তুমন কেন পাশই করতে পারবেনা বললাম? আসলে ও কোন কালেই পাশ করেনি। কয়েক বছর আম্মুই ওর রেজাল্ট প্রভাবিত করেছে। আপনি হয়ত টের পাননি। আপনার ক্ষমতা তখন আরো কম ছিল। এবারে আর আম্মু সামাল দিতে পারেনি। আম্মু যখন প্র্যাগন্যান্ট ছিল, দাদু তখনো খুব রাফ সেক্স চালিয়ে গেছে। যার ফলে ওর ব্রেইনে কিছুটা ডিফেক্ট তৈরি হয়েছে। বাবাকে সেটা জানানো হয়নি। তাই ওকে কোন স্পেশাল কলেজে এতদিন দেয়া হয়নি। নেক্সট ইয়ারে তাই করা হবে। বাবা তো এমনকি এও জানেনা, তুমন তার ছেলে কম, ভাই বেশি।
- হোয়াআট!?
- হুম, দাদু একবার মুখ ফসকে আমাকে বলে ফেলেছিল। আম্মু চেয়েছিল এবরশন করিয়ে ফেলতে। কিন্তু দাদু করাতে দেয়নি।
- হোলি শিট!
যাই হোক, ওকে একবার পাশ দেখাতেই আমার আত্মা বেরিয়ে যাবার যোগার হয়েছে। আরো দুবার করা সম্ভব হবেনা।
- আমি জানি। কিন্তু, এমন যদি হয়, আপনি আম্মুর সাথে যা যা করবেন, আমিও তা এলাও করলাম। নিচ তলার সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আচমকা থেমে গিয়ে পেছন দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে আফসার সাহেবের চোখে চোখ রেখে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল আনিকা।
আবারো গলার কাছে শূন্যতা অনুভব করছেন তিনি। কয়েক সেকেন্ড পর বললেন,
- ওকে। কিন্তু, তোমার মা রাজি হবেনা।
- আম্মুকে নিয়ে আপনার ভাবা লাগবেনা।
বলে অট্টহাসি দিয়ে সোজা বারান্দা ধরে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল আনিকা।
এক লাইনের এই কথোপকথনের মানে বুঝতে কয়েক ঢোক কোল্ড ড্রিংক্স ব্য্যয় করতে হল প্রিন্সিপাল স্যারের। কোনরকমে বিষম খাওয়া থেকে রেহাই পেলেন।
খাওয়া দাওয়া সেরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে নিতে সাড়ে নয়টা বেজে গেল। উপজেলা শহরের ব্যস্ত রাস্তাও শান্ত হয়ে এসেছে। গাড়ির হর্ণ থেমে গেছে। দশটা বাজার আগে রিকশার টুংটাং পর্যন্ত বিলীন হয়ে যাবে। নড়েচড়ে উঠলেন শিরিন ম্যাম।
- এবার তাহলে কাজের ব্যাপারে আসি।
- ও, হ্যাঁ, রাত বেড়ে যাচ্ছে। আপনাদের কি রিকশা করে দেব?
- না, আমরা যে কাজে এসেছি তার কথাই বলছি।
- বেশি রাত হয়ে গেলে সমস্যা হবেনা আবার?
- না, বাসায় আমাদের জন্যে তো আর কেউ পথ চেয়ে বসে নেই।
0 Comments