সুযোগের সদ্ধ্যবহার by riddle Page:- 57



কলেজের কাছেই মোড়ে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাইভার.. ফোন করছে..

অনির সাথে পড়ালেখা বিষয়ক আলাপ করতে করতে গেটের কাছে পৌঁছালেন। ফ্লাডলাইটের আলোয় সেই নীল ঢলঢলে পাজামায় শিরিনকে দেখে একবার পাছাটা আচ্ছামত টিপে দিলেন। পেছন ফিরে প্রথমে অবাক হলেন শিরিন ম্যাম। তারপর হো হো করে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেলেন মেয়ের হাত ধরে। অনি একবার পেছন ফিরে দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বলল,

- বাই, স্যার। গুড নাইট।

- হ্যাঁ। গুড বাই। সী ইউ এগেইন...

মেয়েটাকে আরেকদিন পেলে ভাল হত, কিন্ত শুধু সুধু মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই, তার চেয়ে বরং পিচ্চি আবালটার টিসি ঠেকানোয় মনোযোগ দেয়া যাক কাল থেকে......




*************************










কলেজের সেকেন্ড ব্যাচটা নিয়ে আবারো ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রিন্সিপাল সাহেব। আগেরবারের চাইতে এবারে স্টুডেন্ট কিছুটা বেশি। নিম্নমাধ্যমিক পাশ করে কয়েকশ ছেলে-মেয়ে। কিন্তু কলেজের বেলায় সব সিটির দিকে ছোটে। নতুন কলেজ হিসেবে গত বছর ভালই রেজাল্ট এসেছে। এবারেও হাবিজাবি বুঝিয়ে বিশেষ করে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ধরে-বেঁধে রেখে দিয়েছেন। গাধা থেকে জ্ঞানী বানানোর প্রকল্পে টিচারদের মত আফসার সাহেব নিজেও প্রচুর খাটছেন। এক্সাম সামনে চলে আসায় ঝটিকা রাউন্ডে বেরিয়ে পড়েন। হঠাৎ করে কোন এক ক্লাসরুমে ঢুকে পড়েন। টিচার কেমন বোঝাচ্ছে তা খেয়াল করেন। নিজে ইংরেজির ক্লাস নেন আর্টসের। এরা একটু বেশিই দুর্বল। দুয়েকজন ব্রিলিয়ান্ট আছে, ওদের ওপরে ভর করে যদি পার পেয়ে যায়!

এসবের মাঝে অবৈধ এডভ্যাঞ্চারের খোঁজখবর খুব একটা রাখা হয়নি। আর্টসের ক্লাসটাও নিয়েছিলেন সুযোগ করে - যদি লাস্ট ইয়ারের রুমানার মত দু একটা বের করে আনা যায়... তাহলে এই স্ট্রেসের সময়টাতে একটু মজা করা যাবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ক্লাসে ঢুকে পড়াতে পড়াতেই সময় শেষ। কারোদিকে মনযোগ দিয়ে তাকানোরও সময় নেই। এবারেও মেয়ের সংখ্যা বেশি। বাপ-মাকে ভুংভাং বুঝিয়ে মেয়েদের রেখে দেয়াটা তুলনামূলক সহজ।

"মেয়েকে এত দূরে দিবেন, বাসা থেকে আসতে যাইতেই তো টাইম শেষ! পড়বে কখন? মেয়ে তো খারাপ হয়ে যাইব শহরের পোলাপানের সাথে মিইশা। "

এত মেয়ে নিয়েও কিছু করতে পারছেন না দেখে হা হুতাশ করারো সময় নেই। এর উপর আরেক ঝামেলা এসে জুটল। কমিটি থেকে সিদ্ধান্ত হল, এবারে সব টীচারকে কয়েকজন করে স্টুডেন্ট দেয়া হবে, তাদের সার্বিক পড়ালেখার অগ্রগতি নিয়মিত চেক করার জন্য। সব টীচারের কাছেই আট-দশজন করে পড়ল। পদ্ধতিটা ভালই। টেস্টের পরের সময়টাতেই বেশি জোর দেয়া উচিত। এখন আর ইচ্ছে করেও কেউ ফাঁকি দিতে পারবেনা। যথারীতি প্রিন্সিপালের ভাগ্যেও কয়েকজন পড়ল। তবে কমিটি তাকে এই দায়িত্ব দিয়ে সময় নষ্ট করতে চাইলনা স্টুডেন্ট লিস্ট হয়ে যাবার ক'দিন পর। ইতোমধ্যে দশজনের ব্যাচটাকে পড়ানোও শুরু করে দিয়েছিলেন। তবে কিছু স্টুডেন্ট অবশ্য আবদার করল আফসার স্যারের কাছেই পড়বে। শেষমেষ স্যার নিজে তিনজকে রেখে দিলেন। এই তিনজনেরই ফার্স্ট ক্লাসের সম্ভাবনা বেশী। ঘটনাক্রমে তিনজনই মেয়ে। আর্টসের ডেইজি, সায়েন্সের শেফালী আর - রূম্পা। হুম, গুলবাহার মালীর মেয়ে। গতবছর রুমানাদের সাথে মাধ্যমিক দিয়ে পাশও করেছে। অল্পের জন্যে ফার্স্টক্লাস মিস করায় সবাই শকড হয়েছিল। শেষে রুম্পার বাবাকে আফসার সাহেব নিজেই বলেছিলেন,

- কাকা, ওরে এইবার ইম্প্রুভ দেওয়ান। শিওর ভাল করবে। এইবার ভার্সিটি কোচিং করুক। এইচ.এস.সির জন্যে বাসায় পড়ুক, আর আমি তো আছিই।

জুনিয়রদের সাথে ক্লাস করতে লজ্জ্বা লাগে রুম্পার। তবে টেস্টের পর স্যারের চাপে সপ্তাহে তিনদিন ক্লাস করে সে। ঐ তিনদিনই তিন ছাত্রীকে নিয়ে পড়তে বসেন সচেতন প্রিন্সিপাল।




ব্যাপারটার ফ্রয়েডীয় ব্যাখ্যা আছে কিনা কে জানে, তবে সব স্টুডেন্টেরই বিপরীত লিঙ্গের টিচারদের প্রতি দুর্বলতা থাকে। সেটা ছেলে হোক আর মেয়ে। সবচাইতে হট ম্যাডাম থেকে শুরু করে আনস্মার্ট, অপেক্ষাকৃত অসুন্দর ম্যাডামদের প্রতিও ছাত্রদের আকর্ষণ কাজ করে। মোটা চশমা পরা, গম্ভীর, কদাকার ম্যাডামটিরও অনেক আকাঙ্খী আছে। হয়তো সিল্কি চুলের কিউট চেহারার তরুণী আপাটির মত সবাই তার দিকে অন্য দৃষ্টিতে তাকায় না, তবু তাকে নিয়ে কল্পনায় বাসর-হানিমুন করে ফেলে অনেকে। ব্যাপারটা সমানভাবে মেয়ের ক্ষেত্রেও সত্যি। ইয়াং, হ্যান্ডসাম টীচারটির প্রতি যেমনি অনেক মেয়ে বিমান এয়ারলাইন্সের মত বেপরোয়া ক্রাশ খায়, ভুড়িওয়ালা খিটিখিটে গলার পানখোর টীচারটিকেও কেউ না কেউ মনে মনে কামনা করে। ক্লাসে মেয়েরা যেভাবে তার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে, এই বয়সেও সুযোগ নেয়ার আত্মবিশ্বাসটা ওখান থেকেই আসে আফসার সাহেবের।

সব টীচারেরা সপ্তাহে তিনদিন ক্লাস শুরুর আগে তাদের এক্সট্রা ক্লাস নিয়ে নেয়। কিন্ত সকালে ব্যস্ত থাকায় আফসার সাহেব তার তিন সম্ভাবনাময়ী ছাত্রীকে পড়ান কলেজ ছুটির পর - রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি।

বৃহস্পতিবার কলেজ ছুটি হয়ে যাবার পর অনেক সময় থাকে। বেশি সময় নিয়ে সেদিন মেয়েদের পড়াতে পারেন। কলেজ বিল্ডিংযের নিচতলায় ছোট্ট একটা রুমে কার্যক্রম চলে। তিন চারটি বেঞ্চ আর একটি চেয়ার। বৃহস্পতিবার পড়াশোনা যেমন বেশি হয় দুষ্টুমিও চলে বেশি বেশি। ছেলেমেয়েদের পছন্দের টিচার হতে পারার অন্যতম রহস্য হল তাদের সাথে প্রচুর মজা করা। তিন ছাত্রীও হল তার অন্ধ ভক্তদের মধ্যে অন্যতম। প্রায়ই চারজনে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে। প্রথম প্রথম জুনিয়রদের সাথে ক্লাস করতে লজ্জ্বা পেত রূম্পা। তবে দুই মজার বান্ধবী পেয়ে এখন নিয়মিত ক্লাস করছে। তারপরো অন্যদের চাইতে একটু গম্ভীর হয়ে থাকারই চেষ্টা করে। মাঝে মাঝে ওর দিকে তাকান আফসার সাহেব। গায়ে গতরে বেড়ে উঠেছে এই কয়মাসে। আগে তো নিয়মিত গোসল করা দেখতেন। এখন স্টাফদের জন্য বাথরুমের ব্যবস্থা হয়ে যাওয়ায় কিছুই দেখা যায়না। গত বছরের ড্রেস পড়েই কলেজে আসা যাওয়া করে।

Post a Comment

0 Comments