কথায় কথায় নেশাটা কমে এসেছিল... কিন্তু নতুন করে ওয়াইনটা পেটে পড়তেই আবার চাগাড় দিয়ে উঠলো সেটা...... বেশ হাল্কা লাগে মাথাটা... ভালো লাগাটা ছেয়ে থাকে মনের মধ্যে... সেই সাথে নিজেকে তার ভালোবাসার মানুষটার কাছে মেলে ধরতে পেরে নিজেকেও যেন খুব হাল্কা মনে হয় পৃথার... দরকার ছিল... এটার খুব দরকার ছিল... এই ভাবে ভেতরের সমস্ত কিছু উগরে দেওয়ার... মনে মনে ভাবে। হাতে ধরা ছবিটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সে... কে জানে, এটা হয়তো এক ধরণের পাগলামীই তার... কিন্তু এই পাগলামীটাও তার একেবারেই নিজস্ব... সম্পূর্ণভাবে শুধুই তার... এ পাগলামী সে জানে এই চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমা বদ্ধ থাকবে চিরদিন... বাইরের পৃথিবীর কেউ জানবেও না তার মনের মানুষের কথা হয়তো, কখনও। হয়তো এটাই প্রয়োজন, সমস্ত মানুষেরই... মনের মধ্যে কোথাও একটা এই রকম পাগলামী রেখে দেওয়ার... যাতে ভেতরের জমে থাকা সমস্ত ভার সেই মানুষটার কাছে উগড়ে দিয়ে নিজে হাল্কা হওয়া যায়।
ভালোবাসা... পৃথা কি সত্যিই কখনও ভেবেছিল যে ও কখনও কারুর প্রেমে পড়বে? কই, ভাবে নি তো? কতই না ঘুরেছে জীবনে... কতই না মানুষের সাথে আলাপ হয়েছে তার... হয়তো শারীরিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছে কারুর সাথে... কিন্তু মন?... আগে তো কখনও সে এই ভাবে ভাবেই নি... নিজেও খুব সহজ খোলা মেলা জীবন কাটিয়েছে... সেই ভাবেই বড় হয়েছে ও... কিন্তু কি যে ঘটে গেল ছবির ওই মানুষটাকে দেখে কে জানে... তাও কি না এমন একজনের প্রেমে পড়ে গেল, যে নেই... যার কোন অস্তিত্বই নেই তার চারপাশে... তবুও সেই তাকেই সে মনটা দিয়ে ফেলল। ও জানে, মা যদি ওর এই পাগলামী জানতে পারে, কি যে করবে কে জানে... নাঃ, কেউ জানবে না... দ্বিতীয় কোন প্রানীও জানবে তার মনের কথা... কোনদিনও না... এ শুধু তার... শুধুই তার... হয়তো ছবির মানুষটাও জানতে পারবে না কখনো!
ভাবতে ভাবতে হাতের মধ্যে ধরা ছবিটার দিকে তাকায় পৃথা... গাঢ় গলায় বলে ওঠে... ‘তুমি শুনতে পাচ্ছো? বুঝতে পারছো কি করেছ আমার মনটার... হ্যা, হ্যা... এটাই সত্যি... আমি শুধু তোমার... এই তিতির শুধু তোমার... আর কারুর হবে না কখনও। জানি তুমি হয়তো বলবে, এখনও জীবনটা পড়ে রয়েছে... ভবিষ্যতে হয়তো আরো অনেকের সাথে আলাপ হবে... কারুর সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠতেই পারে... ব্যাগারা, ব্যাগারা... অনেক কিছুই বলতে পারো তোমার তিতিরকে, কিন্তু একটা জিনিস শুনে রাখ... যেই আসুক কখনও আমার জীবনে, কিন্তু তুমি... তুমি সারা জীবন আমার থাকবে... শুধুই আমার... আর কারুর না... আমার এই বুকের মধ্যে রেখে দেবো তোমাকে... এই ভাবে...’ বলতে বলতে ছবিটা চেপে ধরে নিজের পায়রার মত নরম বুকগুলোর ওপরে, পরম ভালোবাসায়... ধরেই থাকে চেপে নিজের বুকের সাথে।
নেশার প্রকপে বেশ ভারী হয়ে উঠেছে চোখদুটো... মেলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে... বরং চোখগুলোকে বন্ধ করে মাথাটা বালিশে হেলান দিয়ে রাখলে বেশ ভালো লাগছে... তাই মাথাটাকে বালিশের ওপরে হেলিয়ে রেখে চোখ বন্ধ করে রাখে পৃথা... বিড় বিড় করে বলতে থাকে... ‘তুমি কি ভাবো? আমি বুঝতে পারি না? সব বুঝতে পারি... জানো... আমরা মেয়েরা না যেটা সহজেই বুঝে যাই... তোমরা সেটা ভাবতেই পারো না... বোঝা তো দূরের কথা... বুঝেছ? আরে বাবা... গন্ধটা? তোমার গায়ের গন্ধটা কোথায় যাবে?... প্রতিটা পল আমি অনুভব করি তোমার উপস্থিতি আমার চারপাশে... সত্যি... বলি না কেন? ইচ্ছা হয় না... ওটা একেবারে আমার ভেতরের অনুভূতি... হ্যা... নিশ্চয় ভাবছ নেশার ধুমকিতে ভুলভাল বকছি... না গো... নেশা হয়েছে ঠিকই... কিন্তু ভুল বকছি না... আমি বুঝতে পারি... যখনই ঘরে ফিরি... তুমি থাকো... ঠিক আমার কাছটাতে... তাই তো বিশ্বাস কর... আমার এতটুকুও একা থাকতে ভয় লাগে না এখানে... আমি তো জানি, আমার জন্য তুমি আছো... তাই না গো?’
মাথাটা বালিশ থেকে জোর করে প্রায় তুলে চোখ বন্ধ করা অবস্থাতেই হাতের গ্লাসটাকে মুখের কাছে এনে তরলে চুমুক দেয় সে... তারপর ফের পেছন দিকে হেলিয়ে রেখে বলে... ‘আচ্ছা... একটা প্রশ্ন করবো... বৌদি জানে আমার কথা... প্লিজ... বৌদিকে রাগ করতে বারণ করো, কেমন... আসলে কি জানো... আমি চাই নি কিন্তু এই ভাবে মনটা আমার তোমাকে দিয়ে ফেলি... কিন্তু কি করে যে কি হয়ে গেল... কে জানে? বৌদির কাছে না আমার হয়ে সরি বলে দিও... কেমন... বলো যে পৃথা একদম খারাপ মেয়ে নয়... ও খুব ভালো মেয়ে... সত্তি সত্তি খুব ভালো মেয়ে... তোমাকে খুব ভালোবাসে... বলো... হ্যা... প্লিজ বৌদিকে রাগ করতে বারণ করো... বলবে তো আমার হয়ে?’
খানিক চুপ করে থাকে পৃথা... তারপর ফের বলে ওঠে প্রায় অস্ফুট স্বরে... ‘খুব গায়ে পড়া মেয়ে ভাবছ... না? অবস্য তোমাকে দোষ দেওয়া যায় না... ভাবাটাই স্বাভাবিক... এই ভাবে তুমি না চাইতেও তোমাকে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে যাচ্ছি... এতে নিশ্চয়ই আমাকে ভিষন সহজ লভ্য একটা মেয়ে ভেবে নিয়েছ... ঠিক যেমন রমেশ ভেবেছিল... ভেবে... ও... তোমাকে তো রমেশের কথাই বলা হয় নি এখনও... আসলে বোলতাম ঠিকই... এবারেই তো রমেশের কথায় আসতাম... দাঁড়াও... একটা সিগারেট ধরিয়ে নিই আগে...’ বলতে বলতে ছবিটা বিছানায় রেখে উঠে বসে পৃথা... উঠে গিয়ে টেবিল থেকে সিগারেটএর প্যাকেটটা খুলে সিগারেট নিতে যায়... ‘এ বাবা... আর মাত্র তিনটে পড়ে রয়েছে... ঠিক আছে... এখন একটা খাই... কালকের পটির জন্য একটা থাকলেই হবে... সেখানে দুটো থাকবে... যথেষ্ট...’ সিগারেট ঠোঁটে লাগিয়ে লাইটার দিয়ে জ্বালিয়ে নেয়। কি মনে করে নিজের বুকের ওপরে হাত রাখে পৃথা... নরম বুকদুটোকে হাতের তালুতে ধরে ওজন নেবার মত করে তুলে ধরে সে... ‘বেশ ভারী হয়েছে ব্রেস্টদুটো... আজ তারিখ কত হলো? কে জানে... আজ আর ধুমকিতে মনেও পড়ছে না তারিখের কথা, আর সেই সাথে ক’দিন ধরে মাঝে মধ্যেই তলপেটটা কেমন টেনে খিঁচে ধরছে... মনে হচ্ছে খুব শিগগিরই শরীর খারাপ হবে...’ ভাবতে ভাবতে ফিরে আসে বিছানায়... সাথে অ্যাস্ট্রেটা আনতে ভোলে না...
বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে গ্লাস থেকে আরো খানিকটা ওয়াইনে সিপ করে সে... তারপর সিগারেটএ একটা টান দিয়ে ভালো করে উঠে বসে...
সেবার আমাদের চৌরিখ্যাঙ্গ বেস ক্যাম্প অবধি এক্সপীডিশন ছিল... হুমমমম... অগস্ট মাস ছিল বোধহয়... দারুন ওয়েদার ওই সময়টায় ওখানে... আমরা সব শুদ্ধু ছিলাম যত দূর মনে পড়ছে প্রায় জনা কুড়ির দল... চৌরিখ্যাঙ্গ জানো তো... ওটা এভারেস্টের সাউথের দিকে পড়ে... কত?... প্রায় ধরো সাড়ে পাচ হাজার মিটার হাইট হবে... নেপাল হয়ে যেতে হয়... দুর্দান্ত জায়গা... আমরা শুরু করেছিলাম ইয়োকসাম থেকে... সেখান থেকে স্যাচেন... তারপর বাখিম... বাখিম পৌছে ওখান থেকে যেতে হয়েছিল শোকা... শোকা থেকে ফেড্যাং হয়ে জংগ্রি... তারপর চৌরিখ্যাঙ্গ... একদম নির্ঝঞ্ঝাট গিয়েছিলাম, জানো... পথে কোন বিপদ আপদ, কিচ্ছু হয় নি। পুরো রুটটা আমরা কি দারুন মজা করতে করতে গিয়েছিলাম তোমাকে কি বলবো... এতটুকুও কষ্ট মনে হয় নি ওই পুরো পথটা... ওই টিমেই আমাদের টিম লিডার ছিল রমেশ... একেবারে স্টাউট চেহারা... একটু কম কথা বলতো... মাউন্টেনিয়ারিংএর ব্যাপারে একেবারে চৌখশ ছেলে... আর তুমি তো বুঝতেই পারছো... আমি কেমন বাচাল মেয়ে... সবার সাথেই হইহই করতে ভালোবাসি... এর পেছনে লাগছি... ওর পেছনে লাগছি... প্রত্যেককে খুব জ্বালাতাম... অবস্য তাতে কারুর আমার প্রতি কোন অবজেকশন ছিল না... বেশ এঞ্জয়ই করতো ওরা... বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল সবার সাথে... ওই টিমে তো দুজন সুইডিশ মেয়েও ছিল... আমার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক তৈরী হয়ে গিয়েছিল। সবই ঠিক চলছিল... কিন্তু গন্ডগোলটা হল ফেরার সময়। জংগ্রি থেকে রুটটা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে... একটা ফিরে গেছে আবার ফেড্যাংএর দিকে আর ওখান থেকেই আর একটা রুট ঘুরে চলে গেছে গোয়েছালার দিকে। আমরা জংগ্রি এসে এগোবো... হটাৎ উঠল ঝড়... সে ঝড় তোমাদের এখানকার মত নয়... একবারে তুষার ঝড়... সে যে কি জিনিস না দেখলে বুঝতে পারবে না... চতুর্দিক সাদা... কিচ্ছুটি নজরে আসে না... কে যে কোথায় ছিটকে গেলাম সেই মুহুর্তে জানি না... যখন ঝড় থামলো তখন দেখি শুধু আমি আর রমেশ... আর কেউ কোথাও নেই... এদিকে অন্ধকার নেমে আসবে আর কিছুক্ষনের মধ্যেই... পাহাড়ে অন্ধকার নামে একেবারেই ঝুপ করে... বেশ বুঝতে পারছিলাম আমরা দুজনে যে আসল রুট থেকে সরে এসেছি... এখন ফেরত যাওয়া এই সময় সম্ভব নয়... রমেশ অনেক করে চেষ্টা করল রেডিওতে ওদের ধরতে... কিন্তু সিগন্যালও পাচ্ছিলো না... সে এক বিদিগিচ্ছিরি অবস্থা... আমি তো জীবনেও এই রকম পরিস্থিতির মধ্যে পড়িনি... সেটাই আমার প্রথম বেস ক্যাম্প এক্সপীডিশন্... রমেশকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘এখন কি হবে?’
ও কিন্তু অদ্ভুত ভাবে মাথা ঠান্ডা করে রেখেছে দেখি... যেন কোন টেনশনই নেই ওর মধ্যে... কি রকম নিরুদ্বিগ্ন গলায় বলল, ‘ডোন্ট ওয়রি... একটা রাত একটু কষ্ট করতে হবে... কাল সকাল বেলায় আমরা আবার ঠিক রুটে ফিরে যাবো... এখন এগোনো সম্ভব নয়... আর কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ধকার হয়ে যাবে... তখন এগুতে গেলে অনেক বিপদ... তার চেয়ে আজকের রাতটা এখানে ক্যাম্পিং করে কাটিয়ে দেওয়ায় যাবে’খন।’
ও টিম লিডার... তার ওপরে যথেষ্ট এক্সপীরিয়েন্সড্... তাই ওর ওপর নির্ভর করা ছাড়া আমার দ্বিতীয় পথও নেই... আমরা পীঠ থেকে সব মাল পত্র নামিয়ে ওখানেই টেন্ট খাটিয়ে ফেললাম... ও তাও বেশ কয়েক বার ট্রাই করে গেল রেডিও সিগন্যাল পাবার আশায়... কিন্তু কোথায় কি... ঝড় না হলেও, আবহাওয়া এতটাই খারাপ যে কিছুতেই সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছিল না... অগত্যা... সে রাতের জন্য তৈরী হলাম টেন্টে থাকার জন্য।
সাথে তো আমাদের ড্রাই ফুড থাকেই... সেটা দিয়েই মোটামুটি ডিনার করে নিলাম টেন্টের মধ্যে বসে... রমেশের হোভারস্যাকে রামের বোতল ছিল... ও মাঝে মধ্যেই একটু একটু করে মারছিল বোতলটার থেকে... আমি প্রথমে ঠিক চাইতে পারিনি... কিন্তু এত ঠান্ডা যে কি বলবো... মনে হচ্ছিল যেন হাত পা জমে যাবে... গায়ের ওপর অত মোটা সুট্ থাকা সত্তেও... ওই বাড়িয়ে দিল বোতলটা আমার দিকে... বলল... ‘এটার থেকে একটু মেরে নাও... ঠান্ডাটা কাটবে একটু...’
আগে কখনও কোনদিন লিকার টেস্ট করি নি... মুখে নিতেই মনে হল যেন বমি হয়ে যাবে... ইশ্... কি তেঁতো... ওই টুকু মুখে পড়তেই যেন মনে হল গলাটা জ্বলে গেল আমার... তাড়াতাড়ি রমেশের হাতে বোতলটা ফিরিয়ে দিয়ে বললাম, ‘ইশ্, কি বিচ্ছিরি খেতে... আমি খেতে পারবো না...’
রমেশ কিন্তু বোতলটা ফিরিয়ে নিল না আমার হাত থেকে... বলল... ‘যতই খারাপ লাগুক... তবুও... একটু একটু করে খাও... নয়তো এই ঠান্ডায় জমে যাবে... অসুধের মত করে অন্তত খেয়ে নাও...’
ও বলা সত্তেও, ভেবেছিলাম খাবো না... কিন্তু সত্যিই এত ঠান্ডা লাগছিল যে ওর কথা আর ফেলতে পারলাম না... বোতলটা নিয়ে ফের চুমুক দিলাম আরো একবার... মিথ্যা বলবো না... এবারে আর অতটা খারাপ লাগলো না... গন্ধটা নাকে লাগলো ঠিকই... কিন্তু টেস্টটা আগের মত অতটা বিচ্ছিরি মনে হল না... তারপর আরো বেশ কয়একবারই চুমুক মারলাম বোতল থেকে।
এরপর কথায় কথায় আরো কতবার যে চুমুক মেরেছি ওর হাত থেকে নিয়ে খেয়াল নেই... কিন্তু খানিক পর থেকেই বুঝলাম সেই আগের মত ঠান্ডা আর কিন্তু লাগছে না আমার... বরং মোটা পশমের জামার ভেতরে বডিটা বেশ হিটেড হয়ে উঠেছে... খুব বকবক করছিলাম, জানো... সেটা যে নেশার ধুমকিতে সেটা অবস্য বুঝিনি... মাথাটাও বেশ ভার ভার লাগছিল আমার... মনটা যেন খুব খুশি হয়ে গিয়েছে।
খানিক পর রমেশ আমাকে বলল, ‘শুয়ে পড়... শুধু শুধু বসে থেকে লাভ কি? কাল খুব সকালে বেরিয়ে পড়তে হবে...’
আমিও কোন দ্বিমত না করে শুয়ে পড়লাম স্লিপিংব্যাগটা খুলে নিয়ে... ওটার ভেতরে আর ঢুকলাম তখনই... কারণ রামের এফেক্টএ তখন গরম না লাগলেও, ঠান্ডাও লাগছে না আর। শুয়েই বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম... যতই হোক... সারাদিনের পীঠের ওপর অতটা লোড নিয়ে ট্রেকিংএর ক্লান্তি তো আছেই... তার ওপর অতটা রাম পেটে গেছে... ভাবলাম পরে যদি ঘুম ভাঙে, ঠান্ডা লাগে, তাহলে না হয় ব্যাগের মধ্যে ঢুকে যাব’খন।
কতক্ষন ঘুমিয়েছিলাম বলতে পারবো না... হটাৎ মনে হল আমার জামার ফাঁক গলিয়ে বুকগুলো কেউ ধরে টিপছে... ধড়মড় করে উঠে বসার চেষ্টা করলাম আমি... কিন্তু পারলাম না... আমার শরীরের ওপরে তখন রমেশ চেপে বসে আছে... জোর করে শুইয়ে দিল আমাকে... দেখি কখন আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে জ্যাকেটের চেনটা টেনে নামিয়ে দিয়েছে... ভেতরের মোটা জামাটাও তুলে দিয়েছে গলা অবধি... ব্রাটাও খোলা... উদলা ব্রেস্টগুলো হাতের মুঠোয় ধরে জোরে জোড়ে চটকাচ্ছে... আমি চেষ্টা করলাম ওকে সরিয়ে দিতে... কিন্তু ওর শক্তির কাছে আমি যেন তুচ্ছ... আর তার ওপরে পেটে রামের প্রভাব... ইচ্ছা থাকলেও যেন হাত পায়ে সে জোর পাচ্ছিলাম না... বার বার করে চিৎকার করে ওকে বারণ করতে লাগলাম... আমার সাথে ওই রকম না করতে... কিন্তু ওর মধ্যে তখন যেন কি এক আসুরিক শক্তি ভর করেছে... আমার হাত দুটোকে মাথার ওপরে চেপে ধরে মুখ নামিয়ে একটা নিপিল মুখের মধ্যে পুরে নিয়ে চোঁ চোঁ করে চুষে যেতে থাকলো... উফফফ... কি বলবো তোমাকে জানি না... সেটা রামের এফেক্ট না চোষার... আমার সারা শরীরটা যেন আমার বশে নেই... কি অদ্ভুত ভালো লাগতে লাগল... মুখে যতই না না বলি না কেন... জোর করে বাধা দেবার শক্তি বা ইচ্ছা, কোনটাই যেন খুঁজে পাচ্ছিলাম না আমি... কেমন ওর কাছে নিজের শরীরটাকে ছেড়েই দিয়েছিলাম... আর সেই সুযোগে ও আমার ব্রেস্ট বদলে বদলে চুষে যেতে থাকলো আমার নিপিলগুলোকে... পরে কখন আমার হাত ছেড়ে দিয়ে হাতের মুঠোর ব্রেস্টগুলো চেপে ধরে চটকাতে শুরু করেছে জানি না... আমি কিন্তু হাত তুলেই রইলাম ওর মলেস্টেশনের কাছে... বাধা দেবার কথাও যেন ভুলে গিয়েছিলাম সেই মুহুর্তে... একটা ভিষন ভালো লাগা ছেয়ে ফেলেছিল আমার দেহটাকে।
এর ফাঁকেই ও আমার ট্রাউজারটা বেল্ট থেকে খুলে হিঁচড়ে টেনে নামিয়ে দেয় খানিকটা... একটা পায়ের থেকে খুলে নেয় ওটাকে... সেই সাথে প্যান্টিটাও খুলে ফেলে এক ঝটকায় ওই প্যান্ট খোলা পা দিয়ে... আমি তখন বাধা দেব কি... ওর সাথে যেন আমিও সঙ্গত করে যাচ্ছিলাম... শরীর থেকে পোষাকগুলো খুলে ফেলতে সাহায্য করছিলাম দেহটাকে তুলে ধরে... তখন আমার পরনের একটা পায়ে প্যান্টের পা আর প্যান্টির অংশটা আটকে রয়েছে... দুই দিকে আমার পা দুটোকে ধরে ছরিয়ে দিয়ে আমার ওপর আবার উঠে পড়ল... শুয়ে পড়ল বলা যেতে পারে আমার শরীরটার ওপরে... হাত বাড়িয়ে নিজের ট্রাউজারের চেনটাকে টেনে নামিয়ে দিয়ে বের করে নিয়ে এল ওর পেনিসটা... আমি বুঝতে পারছি এবার কি হতে চলেছে... কিন্তু বাধা দেবার চেষ্টাও করলাম না... ততক্ষনে আমার মধ্যে সেন্স ফিরে এসেছে... ভেবে দেখলাম... এখন যদি বাধা দিই... কোন ফল হবে না... ওই রকম একটা ডেসার্টেড জায়গায় কেউ নেই আমাকে বাঁচাবার... অথচ কাল রমেশের সাহায্যেই আমাকে ফিরতে হবে... তাই চুপ করে পড়ে রইলাম আমি... আর ও, ওর পেনিসটাকে আমার ভ্যাজাইনার মধ্যে ঢুকিয়ে দিল... আহহহহ... কোঁকিয়ে উঠলাম আমি... কি করবো... তখনও তো ওখানটা শুকনোই... সেই ভাবে তো ভেজেই নি... তাই ও ভাবে ঢোকাবার চেষ্টা করলে হয় না কি?
রমেশও বোধহয় বুঝলো যে এ ভাবে হবে না... দেখি ফের উঠে বসল ও... তারপর আমার নীচের দিকে নেমে গিয়ে পা দুটোকে দুই দিকে টেনে আরো ফাঁক করে দিয়ে গুঁজে দিল ওর মুখটাকে আমার ওখানটায়... আহ্... ওখানে রমেশের মুখ পড়তেই যেন কারেন্ট মারল আমার শরীরের মধ্যে... আমি নিজের থেকেই পা দুটোকে বুকের কাছে টেনে তুলে ফাঁক করে মেলে ধরলাম ওর মুখের সামনে... রমেশ প্রাণ ভরে চুষে চলল আমার ভ্যাজাইনাটাকে... জিভ দিয়ে চেটে দিতে লাগল ওটাকে ওপর থেকে নীচ অবধি... জিভটাকে নাড়াতে লাগলো আমার ক্লিটটার ওপরে... আমার মনে হল যেন পাগল হয়ে যাব আরামে... আমি হাত বাড়িয়ে খামচে ধরলাম রমেশের মাথাটা আমার ওখানটায়... নিজেই কোমরটাকে তুলে ধরলাম নীচ থেকে... বুঝতে পারছিলাম... ওখান থেকে ভিষন ভাবে রস বেরুতে শুরু করেছে ততক্ষনে... হড়হড়ে হয়ে উঠেছে ওটার পুরো ভেতরটাই... শেষে নিজেই বলে উঠলাম... ‘আর চুষতে হবে না... নাও স্টার্ট ফাকিং মী... আই অ্যাম ওয়েট এনাফ... পুট ইট ইন্সাইড মী...’
এতটা বোধহয় ও’ও আশা করে নি... আমাকে এই ভাবে বলতে দেখে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো ও... তারপর আর দ্বিতীয়বার আর কিছু বলতে হল না... উঠে এসে নিজের পেনিসটাকে আবার সেট করল আমার ওখানটায়... এবারে আর লাগল না আমার, একেবারেই... এক নিমেশে ঢুকে গেল রমেশের পেনিসটা আমার ওখানটার মধ্যে... উফ্... ওই রকম একটা ফাঁকা জায়গায়... বরফের মাঝে... টেন্টের মধ্যে... সত্যিই বলছি... কি ভিষন ভালো লাগছিল করতে... যতটা পারলাম পা দুটোকে দুই পাশে মেলে ধরে ওর ইনসার্সনটা নিতে থাকলাম নিজের শরীরের মধ্যে... ওকে জড়িয়ে ধরলাম আমি দুই হাতে... পা দুটোকে কম্বোলের ওপরে ভর রেখে তুলে তুলে ধরতে লাগলাম কোমরটা ওর কোমরের দিকে... কিন্তু বেশিক্ষন সুখটা পেলাম না, জানো?... আমার হবার আগেই ও হটাৎ শক্ত হয়ে গেল... ঠেসে ধরল ওর কোমরটাকে আমার শরীরের সাথে... অনুভব করলাম গলগল করে ইজ্যাকুলাট করছে আমার মধ্যে... আমি পা দিয়ে ওর শরীরটাকে কাঁচি মেরে ধরলাম... চেষ্টা করলাম নিজের শরীরটাকে ওর সাথে যতটা সম্ভব ঘসে আরামটাকে নিয়ে আসা যায়... কিন্তু ও ইজ্যাকুলেট করেই কেমন নেতিয়ে গেল... কেমন যেন পুরো ব্যাপারটা শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে গেল... তারপর আমাকে ছেড়ে উঠে পড়ল।
আমি ওই ভাবেই আরো বেশ খানিকক্ষন শুয়ে রইলাম... মনে মনে ভাবলাম যদি আমাকে এই ভাবে দেখে আরো একবার করে... কিন্তু কোথায় কি... ও ওর স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে ঢুকে শুয়ে পড়ল... একবারের জন্যও আমার দিকে ফিরে তাকালোও না।
আমি আস্তে আস্তে উঠে বসে একটা রুমাল বের করে ভ্যাজাইনাটাকে মুছে নিলাম... হড়হড়ে রসে ভরে গেল রুমালটা... সেটাকে ফেলে দিলাম ছুড়ে এক পাশে... তারপর জামা প্যান্ট পড়ে আমিও স্লিপিংব্যাগের মধ্যে ঢুকে শুয়ে পড়লাম... শুয়ে পড়লাম ঠিকই কিন্তু ঘুম আর এলো না... জেগেই কাটিয়ে দিলাম বাকি রাতটা।
সকালে উঠে রমেশ একেবারে নরমাল... যেন কিছুই ঘটে নি রাত্রে... রেডিও চালিয়ে সিগন্যাল পাবার চেষ্টা করল একটু... সিগন্যালটা পেয়েও গেল... আমাদের লোকেশন জানিয়ে মেসেজ করে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল... ‘নাও... গেট রেডী... উই হ্যাভ টু মুভ ফাস্ট... দে আর ওয়েটিং ফর আস...’ বলে নিজের হ্যাভারস্যাক গুছিয়ে নিতে লাগল...।
আমিও আর একটাও কোন কথা তুললাম না রাতের ব্যাপারে... চুপচাপ নিজের লাগেজ গুছিয়ে নিলাম... টেন্ট ভেঙে ফোল্ড করে আমরা রওনা হয়ে গেলাম টিমের উদ্দেশ্যে।
মুখে কিছু না বললেও, রমেশ নিশ্চয় ভেতর ভেতর একটু টেন্সডই ছিল... আমরা যখন টিমের সাথে মিট করলাম, ও দেখি একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে আমাকে... কিন্তু আমি ব্যাপারটায় আর কোন গুরুত্ব দিই নি... কেনই বা দেবো... আমিও যেন কিছুই হয় নি, এই ভাবেই বাকিদের সাথে মিশে গিয়েছিলাম... কয়েক জন অবস্য আমাকে প্রশ্ন করেছিল যে রাত্রে কোন অসুবিধা হয়েছে কি না সেই জন্য... আমি এড়িয়ে গিয়েছি তাদের প্রশ্ন... কি হতো বলো তো ব্যাপারটা নিয়ে জল ঘোলা করে? আর এটা তো ঠিক, আমারও তো সমর্থন ছিল... প্রথম দিকে না হলেও... পরে তো আমিও রমেশের সাথে কোয়াপোরেট করেছি... মেলে দিয়েছিলাম নিজেকে ওর কাছে... ও সুখ দিতে পারেনি আমাকে, সেটা ওর অপারগতা... অ্যাম আই রং? হোয়াট ডু ইয়ু থিঙ্ক?
বাড়ি ফিরে যে একেবারে টেনশনে ছিলাম না তা বলবো না... মা’কে কিছু বলতেও পারছি না... অথচ এক্সপীডিশন থেকে বাড়ি ফিরতে প্রায় আরো দিন সাতেক লেগে গিয়েছিল... এর মধ্যে কোন কন্ট্রাসেপ্টভ পিল খাবো... সেটাও সম্ভব হয় নি। কিছু দিন পর পিরিয়েড হতে যেন নিশ্চিন্ত হলাম... একটা বিরাট বোঝা নেবে গিয়েছিল মাথা থেকে... আসলে যদিও জানি যে আমার মোটামুটি সেফ টাইমই চলছিল... আগের পিরিয়েডটা বেশ অনেক দিন আগেই হয়েছে... তবুও... টেনশন তো হয়ই... না?
কথা বলতে বলতে বড় বড় হাই ওঠে পৃথার... হাতের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখে তখনও গ্লাসের নীচে একটু ওয়াইন পড়ে রয়েছে... কি মনে করে আর খায় না সেটা... গ্লাসটাকে কোনরকমে পাশে হেলে, রেখে দেয় বেডসাইড টেবিলটার ওপরে... সিগারেট অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল... তাই অ্যাশট্রেটাও ঠেলে কাছ থেকে খানিক দূরে সরিয়ে দেয় বিছানায়... তারপর হড়কে নেমে যায় নীচের পানে... বালিশটাকে কোন রকমে মাথার নীচে টেনে নিয়ে ঢলে পড়ে পাশ ফিরে... হাত পা ছড়িয়ে এলিয়ে দেয় শরীরটাকে নাইট ল্যাম্পের নিলাভো রঙে রাঙানো বিছানার ওপরে... জড়ানো গলায় কোনরকমে বলে ওঠে... ‘গুড নাইট সোনা... আর পারছি না... এবার একটু ঘুমাবো...’
ছবিটাকে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে হারিয়ে যায় গভীর ঘুমের রাজ্যে... ওই ভাবেই বেঁকে চুড়ে পড়ে থাকে বিছানার ওপরে... ঘরের নিলাভো আলোয় সাদা বিছানার ওপরে একেবারে জন্মদিনের পোষাকে... দেখে যেন মনে হতে লাগলো একটা নীল পরি শুয়ে রয়েছে রাতের শেষে।
ঘুমের মধ্যেই পৃথা শুনতে পায় একটা গভীর স্বর বহু দূর থেকে তার নাম ধরে খুব চাপা গলায় থেমে থেমে যেন ডাকছে... ‘তিতির... তিতির... ঘুমালে?’
‘উ...’ সাড়া দেয় পৃথা... ঘুমের মধ্যেই...
তার মনে হয় যেন স্বরটা তাকে বলছে... ‘এ ভাবে ঘুমালে হাতে ব্যথা হবে তো... ভালো করে শোও...’
‘হু...’ বলে ফিরে চিৎ হয়ে যায় পৃথা... বুকের মধ্যে তখনও ধরা থাকে ছবিটা।
তার মনে হয় কেউ যেন আস্তে আস্তে, খুব সাবধানে ওর বুকের ওপর থেকে হাত ছাড়িয়ে ছবিটাকে টেনে বের করে নিচ্ছে... হাতের মুঠো আলগা করে দেয় ঘুমের মধ্যেই... হাতগুলোকে শরীরের দুই পাশে মেলে ভালো করে শোয়... বিড়বিড় করে বলে... ‘আমি জানতাম তুমি আছো... আই ক্যান ফিল ইয়ু... তোমার গায়ের ওই ভিষন অ্যাট্রাক্টিভ ম্যানলী গন্ধটা... আই ক্যান স্মেল ইয়ু...’
বলে ঘুমের ঘোরে... কিন্তু কোন উত্তর পায় না...
‘ইয়ু আর স্টিল দেয়ার... না?’ ফের বিড়বিড় করে ওঠে পৃথা... নেশা আর ঘুম যেন জড়িয়ে ধরেছে তাকে... ‘টাচ মী... প্লিজ... জাস্ট টাচ মী ওয়ান্স... ওন মাই টিটি...’
পৃথার কথায় কি সত্যিই কোন কায়াহীন হাত ইতস্থতঃ করে তাকে ছুঁতে?
আবার ঘুমের মধ্যেই বলে ওঠে পৃথা... ‘প্লিজ হানি... প্লিজ... জাস্ট টাচ মাই টিট্... আই ওয়ান্ট টু ফীল্ ইয়ু ওন মী... প্লিজ...’
এবার যেন সত্যিই তার মনে হয় একটা হাতের ছোয়া লাগে মেলে রাখা বুকের একটায়... খুব আলতো... কিন্তু ভিষন ভাবে যেন সত্যি... চোখ বন্ধ থাকলেও ঠোটের ওপরে একটা নরম হাসি ভেসে ওঠে পৃথার... ‘হুম্... ইয়েস... জাস্ট লাইক দ্যাট... আহ্... আই ক্যান ফীল ইয়ু... নীড দেম... নীড মাই টিট্স...’
অশরীরি হাত আলতো চাপ দেয় যেন তার খোলা বুকে... ভিষন... ভিষন ভালো লাগায় ভরে যায় পৃথার মনটা... বিড় বিড় করে আবার বলে ওঠে সে... ‘নাও... সাক ইট... সাক মাই নিপি... আই ওয়ান্ট ইয়ু টু ডু দ্যাট... সাক ইট... লিক ইট উইথ ইয়োর টাং...’
পৃথার মনে হয় তার সুগঠিত বুকের একটা বোঁটা ভিজে ওঠে একটু... একটা অদ্ভুত উষ্ণ ভেজা ছোয়া লাগে নিজের বুকের বোঁটাটায়... ‘আহ্, আই লাভ ইয়ু হানি... লাভ ইয়ু...’ বলতে বলতে আরো গভীর ঘুমের মধ্যে ঢলে পড়ে সে... হারিয়ে যায় ঘুমের অতলে...
ক্রমশ...
0 Comments