পরভৃত by কামদেব – ৪৯

ত্রিদিবেশ মাইতি নিজের ঘরে বসে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছেন।কিছুতেই মেলাতে পারছেন না অঙ্কটা।সোমকে কোনো দায়িত্ব দেবার দরকার নেই তাহলে বেতন দেবেন কিভাবে?ম্যাডাম বললেন,বেতন দিতে হবে না শুধু ওর খাওয়া দাওয়া ক্যাণ্টিনে ফ্রি কোরে দিন।ত্রিদিবেশবাবুর মনে হল তাহলে ভজার দলবল কি ম্যাডামকে ভয় দেখিয়েছে?মনে হল এতক্ষনে অঙ্ক মিলেছে তারপরই খটকা লাগে ম্যাডাম তো ভয় পাওয়ার পাত্রী নয়।
ঋষি দরজার কাছ থেকে জিজ্ঞেস করল,আসতে পারি?
মুখ তুলে ঋষিকে দেখে খুশি হয়ে বললেন,আসুন–আসুন।বসুন।
ত্রিদিবেশ বুঝতে পারে সোম কেন এসেছে?সোজা বোলে দেবেন তার কোনো কিছু করার নেই।যা বলার ম্যাডামকে গিয়ে বলুন।
ঋষি সামনের চেয়ারে বসে জিজ্ঞেস করল,একটা পারশোন্যাল ব্যাপারে কথা বলতে পারি?
ত্রিদিবেশের উত্তর তৈরী।সোমকে সবাই বস বলে।দেখতে শুনতে নিরীহ অথচ ভজার দলবল খুব সমীহ করে।ম্যাডামও ওকে প্রশ্রয় দেন।মুখে হাসি এনে বললেন,অবশ্যই বলতে পারেন জিজ্ঞেস করার কি আছে?আমার সাধ্যের মধ্যে হলে অবশ্যই করব।
–আপনার অনেক জানাশোনা শুনেছি।
–দেখুন হাসপাতাল চালাতে গেলে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে হয় এই আরকি?
–বাবুয়া গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছে শুনেছেন নিশ্চয়ই?
সোম অন্য কথা বলছে ত্রিদিবেশ ধাঁধায় পড়ে যান।বাবুয়ার কথা বলায় ত্রিদিবেশ বললেন, ভেরি স্যাড ছেলেটা একসময় হাসপাতালের জন্য অনেক কিছু করেছিল।ম্যাডামও জানে।
আমার কি মনে হয় জানেন?একজন ভাল ল-ইয়ার দাড় করানো উচিত।কিছু কিছু কানে এসেছে বাবুয়ার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি।পুলিশই কেসটা শুরু করেছে।জোরালো কোনো প্রত্যক্ষাদর্শীর খোজ পাওয়া যায়নি যে বাবুয়াকে খুন করতে
দেখেছে।ত্রিদিবেশ ভাবছেন,সোম কি এসব কথাই বলতে এসেছে?
–আপনি তো সুন্দর বললেন।
ত্রিদিবেশ খুশি হয় বলে দেখুন আমি আইনজ্ঞ নই তবু বয়স তো কম হলনা মানুষও কম দেখিনি।
–ভাল উকিল বলতে আপনি কার কথা বলতে চান?
–অনেক নামই বলতে পারি।তবে–।
–তবে?
–শুনুন সোম আপনাকে ভাল লেগেছে তাই বলছি।আপনি ঘুনাক্ষরে কাউকে আমার নাম বলবেন না।
–ছি ছি এ আপনি কি বলছেন?
–বুঝতেই পারছেন সবদিক মানিয়ে চলতে হয়।তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে গলা নামিয়ে বললেন,হরিমাধব গুপ্ত।লিখে দিচ্ছি না ডকুমেণ্ট রাখতে চাইনা।ফোন করে বলে দেবো।ওর সঙ্গে কথা বলুন।
–অনেক ধন্যবাদ।ঋষি উঠে দাড়ালো।
ত্রিদিবেশ বললেন,কি হল জানাবেন।
ত্রিদিবেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।ম্যাডামের নির্দেশ সোমকি মেনে নিয়েছে?আদার ব্যাপারী জাহাজের খবরে দরকার কি?
জোর কদমে চলছে কোহিনুর ফার্মেসীর কাজ।প্রায় শেষ হবার মুখে।বেলার দিকে একবার যাবে ভাবল ঋষি।হাসপাতেলে ঋষির নির্দিষ্ট কাজ নেই।অলিখিত সুপার ভাইজার বলা চলে।ঘুরে ঘুরে কাজ দেখে।কেউ অনুপস্থিত হলে তার কাজ করে দেয়।শিক্ষাগত যোগ্যতা বা ঋষি নাম কেউ জানে না।ম্যাডাম বলতে নিষেধ করেছে।বেতন নেই শুধু খাওয়া?খাওয়াটাই সব আনুষঙ্গিক আর কোন খরচ নেই?
ম্যাডামকে বলতে হবে।
সন্দীপ ইউনিভসার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হতাশ হয়ে ফোন করে জানিয়ে দিল সবাইকে আজ হবে না।কল্পনা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কল্পনা এলনা কেন? অসুস্থ যদি হয় জানাবে তো?ফোন করছে সুইচ অফ।রেজিস্ট্রি করবে ভেবেছিল আজ,কথা বলে
সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল কিন্তু কল্পনা একী করল?ওর বাবার ঠিক করা সেই সুব্রতকেই বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেল?
আগেও একটা ছেলেকে দাগা দিয়েছিল।তার ফোনে কিছু ছবি সেভ করা আছে।দেখি সুব্রতকে কিভাবে বিয়ে করে?সন্দীপের ভালটাই দেখেছো অন্যরূপ দেখোনি। চরম সিদ্ধান্ত নেবার আগে একবার সরাসরি কথা বলা দরকার।
ড.এমা সকালে বেরিয়ে গেছে।ঋষির নিজেকে হালকা লাগছে। নার্সিং হোমে ম্যাডাম থাকলে কেমন যেন নজরবন্দীর মত মনে হয়।বিকেলের দিকে বেরিয়ে পড়ল।হাটতে হাটতে পৌছে গেল সাধুর মোড়।ঘরে কোহিনূর নেই গেল কোথায় সামনে গিয়ে দেখল দোকানের কাজ শেষ।মিস্ত্রীরা ফিনিশিং টাচ দিচ্ছে।ঋষী জিজ্ঞেস করল,বিশ্বনাথবাবু কোথায়?
–সাইন বোর্ড আনতে গেছে।একজন বলল।
বিশ্বনাথবাবু লোকটা বেশ কাজের আছে।এবার ওষুধ স্টক করে দোকান উদবোধন করে দিলে হয়।প্রথমে ভেবেছিল একদিন দোকানে পুজো করবে পরে সিদ্ধান্ত বদল করে।গণেশ বা সত্য নারায়ণ পুজো কোহিনূরের পক্ষে করা সম্ভব কিনা ভেবে ঠিক
করল দক্ষিনেশ্বরে পুজো দিয়েই শুরু করবে।
ভিতর থেকে খ্যাদানিপিসি ডাকতে ভিতরে গিয়ে দেখল কোহিনূর চৌকিতে বসে মুখে মাথায় জল।হাতের তালুতে ভর দিয়ে মেঝের দিকে তাকিয়ে।ঋষি জিজ্ঞেস করল,কোহিনূর আপনার শরীর খারাপ?
খ্যাদানিপিসি বলল,হারে আমার পোড়া কপাল!বলে কিনা কি হয়েছে? এইমাত্র বাথরুম থেকে বমী করিয়ে আনলাম।
–কেন বমী করল কেন?
–মেয়েরা ক্যান বমী করে ওনারে বুঝোয় বলতি হবে।জিজ্ঞেস করো কোন সুখে বমী করল?
খ্যাদানিপিসি চলে গেল।কোহিনূর চোখ তুলে তাকাতে পারেনা।ঋষি এতক্ষনে ব্যাপারটা বুঝতে পারে।
–খ্যাদানিপিসি কি বলল?কোহিনূর আপনি আমাকে তো বলেন নি?
মাথা নীচু করেই বলল,অনেকবার চেষ্টা করেছি সরমে বলতে পারিনি বস।
–বাবুয়া জানে?
মাথা নাড়ে কোহিনূর।বলল,আপনি যেইরাত্রে চলে গেলেন সেইরাত্রেই–সকালে পুলিশ ওকে নিয়ে গেল।ওকে বলার সময় পেলাম কই?
ঋষি মনে মনে হিসেব করল প্রায় ছমাস হতে চলল।এভাবে সন্তান বয়ে বেড়াচ্ছে কোহিনূর।না ডাক্তার না ধায়ীমা একেমন দুঃসাহসী মহিলা।কোহিনূরকে ডাক্তার দেখাতে হবে।বাবুয়াকে যেভাবেই হোক খবর দেওয়া দরকার।শুনেছে দমদমে রাখা হয়েছে বাবুয়াকে।বাইরে ঘোটঘট শব্দ হচ্ছে বেরিয়ে দেখল বিশ্বনাথবাবু দাঁড়িয়ে নির্দেশ দিচ্ছে মিস্ত্রীরা সাইনবোর্ড লাগাচ্ছে।ঋষী দেখতে থাকে কোথাও বানান ভুল হল কিনা?বিশ্বনাথবাবু পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল,কেমন হয়েছে বস?
–আপনি অসাধ্য সাধন করেছেন।
বিশ্বনাথ কচলানো হাসি টেনে বলল,মহিলা মালকিন আমাকে তো করতেই হবে।বস কাল বাগরি মার্কেট যাবো সঙ্গে দুজন লোক লাগবে।
–কেন লোক লাগবে?
–অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে কাল ফুল পেমেণ্ট করতে হবে।অতটাকা নিয়ে যাবো।ম্যাটাডোরে আনবো পথে কত ঝামেলা থাকতে পারে।
–হিসেব পত্র?
বিশ্বনাথ দোকানে ঢুকে একটা ড্রয়ার খুলে ফাইল নিয়ে এল।
ঋষি বলল,এখন না পরে দেখবো।ফ্রিজ কি চালু হয়েছে?
–ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি এসে লাইন করে দেবে তারপর চালু হবে।দোকানেও কিছু কাজ আছে।
ঋষির মনে কোহিনূরের কথা।ওকে ইমিডিয়েট ডাক্তার দেখানো দরকার।
সন্ধ্যের মুখে দুটো বাইক এসে পৌছালো।সন্তু নেমেই বলল,আই বস হেভি হয়েছে।
ভজাকে ডেকে ঋষি বলল,কাল বিশুবাবু ওষুধ আনতে যাবে।ওর সঙ্গে দুজনকে যেতে হবে।
–বস চিন্তা কোরো না আমিই যাবো,সঙ্গে কেতোকে নিয়ে যাবো।ভজার খুব উৎসাহ।
–না তুমি যাবে না।অন্য দুজন পাঠাও।
–কেন বস?
–তোমাকে অন্য কাজ দেবো।পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে ভজার হাতে দিয়ে বলল,এই ঠীকানায় গিয়ে হরিমাধব বাবুর সঙ্গে কথা বলবে।
–উনি কি কেস নেবে?
–তুমি বলবে মাইতিবাবু পাঠিয়েছে।ভুজঙ্গবাবুকে বলবে উনি হরিমাধব বাবুর সঙ্গে থাকবেন।
–বস দুজন উকিল?ঋষির চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,আচ্ছা আছা ঠিক আছে।বস তুমি যা বলবে।
–কি হল আমাকে খবর দেবে।কোহিনূরের উপর বেশি জুলুম কোরনা ওর শরীর ভাল নয়।
ঋষি ভিতরে যেতে কোহিনূর চা এগিয়ে দিল।একটা ট্রেতে কাপ সাজিয়ে দোকানে মুখ বাড়িয়ে ভজাভাই বোলে ডাকতেই ভজা এসে ট্রে হাতে নিয়ে বলল,বস বলছিল তোমার শরীর ভাল না।
–বস ঐরকম বলে।মুচকি হেসে কোহিনূর বলল।
কোহিনূর ফিরে এসে চা নিয়ে একটা টুলে বসল।ঋষি বলল,আপনি চৌকিতে বসুন।এখন একটু সাবধানে থাকতে হবে।
লাজুক হেসে কোহিনূর চৌকিতে বসল।সোমবার আপনাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবো।বিকেল বেলা তৈরী হয়ে থাকবেন।
কোহিনূর ঘাড় কাত করে সম্মতি জানায়।
চারপাশে আলো জ্বলে ওঠে।ড.এমার চোখ কাকে যেন খুজছে।একজন মহারাজ মন্দিরের দিকে যাচ্ছেন দেখে ড.এমা এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,এক্সকিউজ মি আত্মানন্দ মহারাজকে কোথায় পাবো বলতে পারেন?
মহারাজ এক পলক এমাকে দেখে বললেন,ওই গাছের পাশ দিয়ে চলে যাও দেখবে ঐখানে একটা গাছের নীচে বসে আছেন।
এমা ধন্যবাদ বোলে সেদিকে এগিয়ে গেল।বেশ কিছুটা হেটে যাবের পর নজরে পড়ল একটা কৃষ্ণচুড়া গাছকে ঘিরে সিমেণ্টের বেদী করা।তার উপরে আত্মানন্দ মহারাজ উদাসভাবে বসে আছেন।এমাকে দেখে চিনতে পেরে বললেন,এসো ডাক্তার তোমার কথাই ভাবছিলাম।
এমা বেদীতে আসন কোরে বসল।
মহারাজ বললেন,গত শনিবার তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে মানুষ গোপন করে কেন?বলেছিলাম অপরাধবোধ থেকে গোপন করে মনে আছে?
এমা হেসে সম্মতি জানালো।মহারাজ বললেন,তুমি যাবার পর মনে হল,গোপন করা এবং প্রকাশ না করা দুটো কাছাকাছি হলেও কিছুটা পার্থক্য আছে।প্রকাশ না করা গোপন করার মত হলেও তার অন্য কারণ থাকতে পারে।নিজেকে জাহির না করা।
ড.এমা জিজ্ঞেস করল।মহারাজ আপনি বলেছিলেন ভক্তি বিষয়ে বলবেন।
মহারাজ হাসলেন।কিছুক্ষন চিন্তা করে বললেন,একটা হচ্ছে ভয়ে ভক্তি আরেকটা শুদ্ধাভক্তি।কোনো প্রত্যাশা না করে প্রাণ মন ঈশ্বরে সমর্পন শুদ্ধা ভক্তি।প্রেম ভালবাসা সব ক্ষেত্রেই একই।মহারাজ হেসে বলল,একটী ছেলে পাত্রী খুজতে বেরিয়েছে।যেতে যেতে দেখল একটি লাবণ্যময়ী তরুণি গান গাইতে গাইতে ঢেকিতে পাড় দিচ্ছে।
ছেলেটি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে।তুমি কোথায় থাকো?তরুণী হাত দিয়ে দূরে একটা কুড়ে ঘর দেখিয়ে দিল।কুড়ে ঘর দেখে ছেলেটি সেখান থেকে চলে এল।আবার যেতে যেতে দেখল একটি গাছের নীচে একটি রমণী বসে আছে।ছেলেটি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,তোমার বাড়ী কোথায়?রমণী হাত দিয়ে বিশাল একটি বাড়ী দেখিয়ে দিল।ছেলেটী বলল,বাড়ী যাবে না?
রমণী বলল,গাড়ী না আনলে যাব কি করে?অতটা পথ হাটতে পারব না।ছেলেটি জিজ্ঞেস করল,বেলা হল তোমাকে রান্না করতে হবে না?রমণী বলল,রান্না করতে পারিনা বামুনমা রান্না করে।
মহারাজ হেসে বললেন,কাকে বিয়ে করবে পাত্রী না তার বাড়ী গাড়ীকে?
এমা বলল,মহারাজ অনেক শিক্ষিত মানুষও এই ভুল করে।
–তুমি শিক্ষিত কাকে বলছো?ঠাকুর বলেছেন জ্ঞানীর লক্ষণ কি জানিস?কেউ কেউ দু-পাতা পড়েই নিজেকে খুব জ্ঞানী মনে করে।জ্ঞানীর মনে অহংকার রাগ দ্বেষ থাকেনা তাদের আচরণ বালকের মত।লোহার খড়্গ ছুলে সোনা হয়ে যায়।সোনার খড়্গে
হিংসা হয়না।
ড.এমা কিছুক্ষন চুপ করে বসে থাকে।মনের মধ্যে তোলপাড় চলে।মহারাজ বুঝতে পেরে বললেন,ভাবছিস,কি করে চিনবো?
ড.এমা লাজুক হাসলো।
–তাহলে একটা গল্প বলি।একবার একজনের মাঝরাতে তামুক খাবার ইচ্ছে হল।লণ্ঠন নিয়ে বের হল প্রতিবেশির বাড়ীতে টিকে ধরাবার জন্য।সবাই তখন ঘুমোচ্ছে।অনেক ডাকাডাকির পর প্রতিবেশি ঘুম থেকে উঠে বাইরে এসে জিজ্ঞেস করল,কি
ব্যাপার?লোকটি বলল,এই টিকেটা ধরিয়ে দেবে?প্রতিবেশি অবাক হয়ে বলল,তোমার হাতে লণ্ঠন আমার কাছে এসেছো টিকে ধরাতে?মহারাজ হা-হা করে হেসে উঠলেন।ড.এমাও সেই হাসিতে যোগ দিল।
ঋষি নার্সিং হোমের সামনে রাস্তায় পায়চারি করছে।আজ অনেকগুলো কাজ হল।একটা কাজের জন্য মনটা খুতখুত করে।সোমবারের লিস্টে কৌসল করে কোহিনূরের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে।কোহিনূরকে ইমিদিয়েট দেখানো দরকার।নজরে পড়ল ম্যাডামের গাড়ি আসছে।গাড়ী থামতে ম্যাডাম নেমে গটগট করে ভিতরে ঢুকে গেল।ঋষি এগিয়ে এসে রোহনজীকে জিজ্ঞেস করল।ম্যাডামের মুড কেমন?রোহনজী হেসে বলল,বহুৎ খুশ ম্যাডাম।
ঋষির মনে হল এই মওকা।ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা ফয়শলা করা দরকার।
একটু সময় দিয়ে ঋষি উপরে উঠে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞস করল,আসতে পারি?
ভিতর থেকে জানতে চাইল,কি ব্যাপার?
–ম্যাডাম একটা জরুরী কথা ছিল।
–এসো ভিতরে এসো।
ঋষি ভিতরে ঢুকে দেখল ম্যাডাম পোশাক বদলায়নি সোফায় বসে।কাঞ্চা চা দিয়ে গেল।ম্যাডাম চা নিয়ে জিজ্ঞেস করল,চা খাবে?
–এত রাতে?
–এই নেও ধরো।নিজের কাপ এগিয়ে দিল।
ঋষি চায়ের কাপ হাতে নিতে বলল,বসো।
ঋষি সোফায় বসল।কাঞ্চা আর এককাপ চা এনে ম্যাডামকে দিল।
ম্যাডাম চায়ে চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করল।বলো কি তোমার জরুরী দরকার?
ঋষি ইতস্তত কোরে বলল,ম্যানেজারবাবু বলছিলেন আমার বেতন বন্ধ।
–তুমি তো বলেছিলে বেতন চাইনা শুধু থাকা খাওয়া হলেই চলবে।কি বলোনি?
–হ্যা বলেছিলাম।কিন্তু খাওয়া ছাড়া যদি কিছু হাত-খরচার ব্যবস্থা করতেন–।
ঋষির দিকে তাকিয়ে মিট্মিট কোরে হাসতে থাকে।কিন্তু গম্ভীরভাবে বলল,তোমার যখন যা লাগবে আমার কাছে চাইবে।ঠিক আছে?
–আপনার কাছে?
–কেন লজ্জা করবে?
–না না আপনার কাছে লজ্জা কি?ম্যাডাম আমি তাহলে আসি?
ঋষির চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ড.এমা মনে মনে ভাবে একেবারে ছেলেমানুষ।
(চলবে)

Post a Comment

0 Comments