জীবনের সুখের জন্য - পর্ব ২৯ (Jiboner Sukher Jonno - Part 29)

প্রায় আধঘণ্টা পরে আমি আবার এলাম বিদিশার বেডরুমে। ওরা দুজন তখন ঘুমের জগতে। চিত্তকে জড়িয়ে বিদিশা শুয়ে আছে পাশাপাশি। বিদিশার পা চিত্তর কোমরের উপর উঠানো। বিদিশার যোনী দেখা যাচ্ছে। চুলগুলো লেপটে রয়েছে যোনীর চারপাশে।

চিত্ত শুয়ে আছে বিদিশার একটা স্তন মুখের ভিতর নিয়ে। আমি ধীরে দিরে ওদের ডিস্টার্ব না করে শুয়ে পড়লাম। সারাদিন বড় খাটাখাটনি গেছে শারীরিক মানসিক দুটোই। শুয়ে পড়া মাত্র ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘড়িতে টাইম দেখলাম প্রায় সাড়ে তিনটে বাজে। দুঘণ্টা ঘুমানো যাবে।
ঘুম থেকে যখন উঠলাম তখনো দুজনে ঘুমিয়ে। পজিশন চেঞ্জ হয়েছে ওদের। বিদিশা চিত হয়ে শুয়ে আছে আর চিত্ত ওকে জড়িয়ে। বিদিশার হাত ওর লিঙ্গের উপর এখন যেটা ছোট আর নরম। চিত্তর পা বিদিশার যোনীর উপর তোলা।
আমি বিদিশাকে নাড়ালাম, ও জেগে উঠলো। ধরফর করে উঠে বসল। দেখল চিত্তকে। চিত্তকে জাগিয়ে তুলল। বলল, ‘ওঠ রে সময় অনেক হোল। তোর দাদাকে চা দিতে হবে না?’
চিত্ত উঠে বসল। চোখ কচলিয়ে বলল, ‘চা না কফি বানাবো?’
আমি জবাব দিলাম, ‘যেটা ইচ্ছে বানা। তোরা যা ঘুমচ্ছিলি তাতে তোদের না ডাকলে বোধহয় রাত কাবার করে দিতি। আমাকে যেতে হবে না?’
বিদিশা আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল, ‘আজ রাতটা থেকে গেলে হতো না গৌতম? আবার এতদুর যাবে?’
আমি বিদিশার চিবুক ছুঁয়ে বললাম, ‘নাগো বন্ধু, কাল আবার অফিস আছে। যাওয়া দরকার। নাহলে এমন মধুর মুহূর্ত ছেড়ে কে যেতে চায় বোলো।‘
চিত্ত কফি বানাতে বেড়িয়ে গেছে। বিদিশা আবার আমাকে জড়িয়ে বলল, ‘আজ তুমি যা দিয়ে গেলে জীবন থাকতেও ভুলবো না।‘
আমি হেসে বললাম, ‘আমি কে বিদিশা? আমি তো নিমিত্ত মাত্র। যা হয়েছে সব তোমার ভাগ্যের জোরে। পাওয়ার ছিল পেয়েছ।‘ আমি ওর মাথায় হাত দিয়ে বললাম।
বিদিশা বলল, ‘যদি স্বামী বলার ক্ষমতা থাকতো তাহলে বলতাম সারা জীবন আমার কাছে থেকে যাও। আমার অনেক কিছু পাওয়ার ছিল, কিছু পেয়েছি, এখনো অনেক কিছু পাওয়ার আছে।‘
আমি ওর মাথা আমার কাঁধে ঠেকিয়ে বললাম, ‘যদি পাওয়ার থাকে তাহলে কেউ তোমাকে পাওয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। ভেবেছিলে কোনদিন এইসব পেতে পারো? পেলে তো। সব কপালের লিখন। তিন লকির। যা লেখা আছে ওতেই আছে। ওর বাইরে কিছু পাবে না।‘
চিত্ত কফি দিয়ে গেল। ও এখন প্যান্ট পরে নিয়েছে। কফি দিয়ে দাঁড়ালো না। ঘরের বাকি কাজ সেরে নিতে চলে গেল। বিদিশা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘বাপরে, ওর ভিতর এতো ক্ষমতা আছে জানতাম না যদি তুমি সাহায্য না করতে।‘
আমি বললাম, ‘মাই প্লেজার। আমি গর্বিত তোমায় হেল্প করতে পেরে।‘
বিদিশা বলল, ‘তোমার সাথে দেখা হবার পর বাঁচার তাগিদ খুঁজে পাচ্ছি। এখন জীবনকে আর একটা অতীত মনে হবে না।‘
আমি জামা কাপড় পরতে পরতে বললাম, ‘তাড়াতাড়ি আমি একটা ট্যুরের প্রোগ্রাম করবো। তৈরি থেকো।‘
বিদিশা কাপড় পরতে পরতে বলল, ‘আর আমি তোমাকে একটা মস্ত সারপ্রাইজ দেবো। তুমিও তৈরি থেকো।‘
কে আর জিজ্ঞেস করলাম না সারপ্রাইজটা কি, কারন আমি জানি বিদিশা হয়তো পরে বলবে চিত্তকে আমি তোমার থেকে সেক্সে আরও বেশি মাস্টার করে দিয়েছি। এটাই হয়তো ওর সারপ্রাইজ। কফি শেষ হবার পর জুতো পরতে পরতে দেখলাম চিত্ত এসে বিদিশার পাশে দাঁড়ালো। বিদিশার হাত চিত্তর মাথার উপর ওর চুলে বিলি কাটছে।
একটা ভালোদিন সবকিছু বদলে দিতে পারে। আমি আসার আগে বোধহয় বিদিশা এতো কাছাকাছি ছিল না চিত্তর আর এখন ওকে জড়িয়ে ওর মাথা ওর প্রায় স্তনের নিচে চেপে রেখেছে।
চিত্তর দিকে তাকাতে ও বলল, ‘আবার কবে আসবে দাদা?’
আমি হেসে বললাম, ‘কেন তোর কি আরও কিছু শেখার বাকি আছে? সবই তো আজকে করে ফেললি।‘
আমার কথা শুনে বিদিশা হো হো করে হেসে উঠলো। হাসলাম আমিও।
চিত্ত যেন লজ্জা পেল। অথচ ছেলেটার লজ্জা ছিল না। জীবন কি সুন্দরভাবে বদলে যায়।
চিত্ত বলে উঠলো, ‘ধ্যাত আমি কি তার জন্য বলছি। দেখছ বৌদি দাদা কেমন মজা করছে।‘
আমি বললাম, ‘আবার আসবো। সময় হলেই আসবো। ততদিন বৌদির খেয়াল রাখবি আর এ বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাবার চেষ্টা করবি না। তোর বৌদিকে তোর হাতে ছেড়ে গেলাম।‘
চিত্ত কনফিডেন্টলি বলল, ‘পাগল নাকি এই বাড়ি ছেড়ে আবার কোথাও যায়। তাছাড়া আমার আছে কে যে যাবো। তুমি কিছু ভেব না। বৌদি আমাকে যা দিয়েছে তাতে আমার মতো সুখি আর কেউ নেই।‘
আমি বাই করে বিদিশার বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে এলাম। রাস্তায় চলতে চলতে চিত্তর কথা ভাবতে থাকলাম বৌদি ওকে যা দিয়েছে। আজ বৌদি ওকে আরও অনেক কিছু দিয়েছে যেটা হয়তো জীবনে ও কারোর কাছে পেত না। কি আশ্চর্য মিল বিদিশা আর চিত্তর মধ্যে। বিদিশার সেক্স পাওয়ার কথা ছিল না আমার কাছ থেকে পেয়ে গেল। চিত্তর সেক্স পাওয়ার কথা ছিল না বিদিশার কাছ থেকে পেয়ে গেল। মধ্যে আমি ওদের মিলন স্তম্ভ হিসেবে থাকলাম। ভালো খুব ভালো। এই ভাবে জীবন গরাতে থাকলে পৃথিবীটা হয়তো আরও সুন্দর হয়ে যেত।
ট্যাক্সি ধরে আমি আমার বাড়িতে ফিরে এলাম। মিতাকে রাস্তায় ফোন করলাম। ওর খুশি দেখে মনে হোল এই জগতে তাহলে বোধহয় সবাই কোন না কোন কারনে খুশি। ওই যে কাকটা ডাকছে ও খুশি। ওই যে ছেলেটা আর মেয়েটা হাত ধরাধরি করে রাস্তা পার হচ্ছে ওরা খুশি। ভিখারিটা ওই গাড়ির লোকটা থেকে পয়সা নিল ও খুশি। তাহলে কি পৃথিবীকে আমাদের দেখার ভুল। সবাই তো খুশি। তাহলে এতো দুঃখ কেন। আমি আমার মনকে বললাম, দুঃখ তো থাকতে হয় নাহলে সুখের নাম জানব কি করে।
মিতা বলল, ‘গৌতম তুমি জানবে না আমরা কি মজা করছি। শুধু তোমার কথা মনে হচ্ছে। তোমাকে ছাড়া মজা করছি ভাবতে ভালো লাগছে না।‘
আমি ভাবলাম এটাই দুঃখ নাহলে ও সুখটা বুঝত না যদি না দুঃখটা পেত। আমি বললাম, ‘তোমার তো তাহলে যাওয়া উচিত ছিল না ঘুরতে যদি আমার কথা মনে করে সুখটা বিসর্জন দাও।‘
মিতা বলল, ,না সে কথা না। মনে হচ্ছে আমি আনন্দ করছি আর তুমি বেচারা হাত পুড়িয়ে খাবার খাচ্ছ। আর আমাকে দেখ সময় মতো খাবার আসছে খাচ্ছি, সারাদিন ঘোরা আনন্দ করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই।‘
আমি জবাব দিলাম, ‘তোমার বিকিনি ব্রা সব ঠিক আছে তো? ওইদিকে বেশি খেয়াল রেখো আমার দিকে না রাখলেও চলবে।‘
মিতা হেসে বলল, ‘যা অসভ্য। তুমি শুধু ওই নিয়ে পরে থাক। একদিন কি না হয়েছে তোমার মাথার মধ্যে ঢুকে গেছে।‘
আমি হেসে বললাম, ‘আরে বাবা মজা করছিলাম। খুললে তোমার খুলবে আমার থোরি খুলবে।‘
মিতা উত্তর দিলো, ‘সব বলব তোমাকে এসে। কাল আবার একটা বিচে যাবো সকাল সকাল। ওখানে চান মজা সন্ধ্যে পর্যন্ত চলবে।‘
আমি ভাবলাম তুমি আর কি বলবে। ব্যাটা বুড়ো তো সব সিডি করে রাখবে আর তোমাকে মমেন্টো হিসেবে একটা সিডি তো দেবেই। আমি ওতেই দেখে নেবো।
মিতা জিজ্ঞেস করলো, ‘বাড়ি যাচ্ছ অফিস থেকে?’
ভাবলাম বলি আজ অফিস যাই নি। তারপর ভাবলাম সেটা বললেই কেন যাই নি শরীর খারাপ কিনা সব প্রশ্ন আসবে। তারথেকে মিথ্যে বলা ভালো। ও কি আর জানতে পারবে। আমি জবাব দিলাম, ‘হ্যাঁ অফিস থেকে বাড়ি যাচ্ছি।‘
ও বলল, ‘ঠিক আছে যাও। দেখে রেখো নিজেকে আমি না আসা পর্যন্ত। ছাড়ি তাহলে?’
আমি হ্যাঁ বোলাতে মিতা ফোনটা কেটে দিলো।
মিতার আনন্দে আমি সত্যি খুশি। আর লোকটাকে বুড়ো ভাবাতে নিজেকে দোষী মনে হোল। বুড়ো তো আমিও। আমি যেটা মিতাকে দিতে পারিনি সেটা তো অনির্বাণ দিচ্ছে। তাহলে ওকে বুড়ো বললাম কেন। নিজেকে গালাগালি দিতে ইচ্ছে হোল। দিলামও। মিতা ওর শেষ জীবনে এসে একটা খুশীর জীবন পেয়েছে। বিদিশার মতো। অনেকের অনেক কিছু পাওয়ার থাকে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সময় সবাইকে সব দেয়। আমরা অপেক্ষা করতে শিখি নি। মুরগির সোনার ডিমের মতো সব একেবারে পেতে চাই। তাই তো আমরা মানুষ। ডিসকভারি চ্যানেলে তো দেখি শিকারের অপেক্ষায় বাঘ বা সিংহ কতক্ষণ অপেক্ষা করে থাকে। শেষে পায়ও। আমরা যদি পশু হতে পারতাম। আমার ইচ্ছে পাখি হতে। তাহলে ডানা মেলে কতো দূর দুরান্তে ঘুরে বেড়াতে পারতাম। ধুর এসব কি বাজে বাজে চিন্তা করছি। আমি বাড়ি চলে এলাম।
(চলবে)

Post a Comment

0 Comments