"আমিও প্রথমে বুঝিনি। ভাইয়া ইদানিং উনার এক্সপেরিয়েন্স মাঝেসাঝে আমার সঙ্গে শেয়ার করে। কথাটা অনেকদিন চেপে রাখার পর সেদিন জিজ্ঞেস করেই ফেললাম - বউ শেয়ারিং করে ফ্রেন্ডশীপ পাকা হয় কিকরে? ভাইয়া হেসে বলল, তুই গেলেই বুঝতে পারবি। এক বিছানায় তোর সামনেই তোর বৌয়ের মাঙ মারবে আরেক লোকে। তবুও তোর মেজাজ খারাপ হবেনা। কারণ ঐ ব্যাটার বৌয়ের ভেতরে তো তুই ও ঢুকে বসে আছিস.. হাহা হাহাহা..."
"ভাইয়া সেদিন যেসব ভাষায় কথা বলল তাতে বুঝতে পারলাম তার মতিগতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। উনাদের সোয়াপিং শুরু হওয়ার পর থেকে দুই ফ্যামিলির রিলেশনের দ্রুত উন্নতি হয়েছে। ব্যবসা নিয়ে গ্যাঞ্জাম ট্যাঞ্জাম যা ছিল তা এখন নেই বললেই চলে। এই সোয়াপিং জিনিসটা বুঝলে রবিন, বিয়ে ছাড়া একমাত্র পথ যা দুটো ফ্যামিলির মধ্যে ডীপ রিলেশন তৈরি করে। টিকে থাকতে হলে যার খুব দরকার।" বলে কৌতুকপূর্ণ চোখে আমার দিকে তাকালেন সোহেল ভাই।
মিনিট দুয়েক চুপচাপ থেকে কথাগুলো হজম করলাম।
"কিন্তু, আপনি তো পড়ালিখা করেছেন, ভাল জব করতেছেন। চাইলে ফ্যামিলির কথা নাও মানতে পারেন।" আমি বললাম।
"হ্যাঁ, তা পারি। কিন্ত এ থেকে মুক্তি তো মিলছেনা। ক্রিসমাস আসছে। অফিসের পার্টিতে বৌ নিয়ে না গেলে কি ঝামেলায় পড়তে হবে তার ঠিক নেই। সুবর্ণা মফস্বলের মেয়ে, টিপিক্যাল বিলাসী হাউসওয়াইফ না। ফ্যামিলির বৌ শেয়ারিংয়ের কথা ও জানে। কিন্তু অফিসের পার্টিতে নেয়ার জন্য ওকে রাজি করানো কঠিন হবে। ফ্যামিলি সোয়াপিংটা যদি করি, তাহলে হয়তো রাজি করানো সহজ হবে।"
"তা ঠিক" আমি বললাম।
"আরেক ব্যাপার কি জানো? তুমি বুঝতে পেরেছো কিনা জানিনা, আমি একটু এডভেঞ্চারাস মাইন্ডের। বড় ভাবীর উপর আমার ক্রাশ অনেক দিনের। বীরেশের বড় ছেলের বৌটিও সোনায় সোহাগা। পুরুষ মানুষ হিসেবে লোভ লেগে যাওয়ার যে একটা ব্যাপার আছে তা বোঝই।"
"আহ হা! তাহলে আপনার খায়েশ আছে পুরাপুরি!" বলে হেসে ফেললাম আমি।
"হাহাহা.. তা বটে। আর তোমারো যে একটু আধটু এদিক ওদিক চেখে দেখার অভ্যাস আছে তা কিন্তু আমি জানি!"
কথাটা শুনে আমার মুখ মুহূর্তে রক্তশূণ্য হয়ে গেল। উনি কি লুনার সাথে দেখা করেছেন? লুনা কি আমার কথা বলে দিয়েছে?
"ভয় পেলে নাকি? ধুর মিয়া! আমি কি তোমাকে ভয় দেখাতে চেয়েছি নাকি? সোহাগের সাথে আমার পরিচয় আছে, আমরা একই পথের পথিক।" বলতে বলতে আমার কাঁধ ধরে ঝাঁকিয়ে দিলেন।
"শোন, আমাদের বৌদের আমরা যেমন ইনোসেন্ট ভাবি তেমন কিন্তু না। ওদেরও কিন্তু লাস্ট আছে। কাল আমি যখন ওদের ডেকে আনতে ঘরে গিয়েছি, দরজার কাছে দাঁড়িয়ে দেখি ওরা হাসাহাসি করছে। দুইজনে খাটে বসে শাড়ী ঠিকঠাক করতে করতে কেমন 'মজার' একটা ঘটনা ঘটল তা নিয়ে কথা বলছে।"
"অহ! তাই নাকি? আমাদের সামনে তো কেমন শাই শাই ভাব দেখাল।"
"হ্যাঁ। ওভাবেই সোসাইটি মেয়েদের ইমোশন লুকাতে শিখিয়েছে। তবে লুনার মত কিছু অনেস্ট মেয়ে ঠিকই আছে!" বলে আমার দিকে চেয়ে চোট টিপলেন সোহেল ভাই। এবার দুজনেই একত্রে হেসে ফেললাম।
সোহেল ভাইয়ের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে বাড়ি ফিরে এলাম। ঘরে ঢুকতে গিয়ে কিসের সঙ্গে যেন ধাক্কা খেলাম।
"এ্যই! এ্যই! দাঁড়াও!" ভেতর থেকে সাদিয়া হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে আসছে। আমাকে এড়িয়ে ঘর থেকে দুই পা বেরোল। তারপর ঝট করে ঘরে ঢুকে পড়ল। কেমন বিব্রত লাগছে দেখতে। বাইরে উঁকি দিয়ে দেখলাম আমার কোমর সমান উচ্চতার একটা ছেলে হাফপ্যান্ট পড়ে উঠোন ধরে আড়াআড়ি দৌড় দিয়েছে, হাতে কিছু একটা ধরা। খিলখিল করে বেশ হাসছে। উঠোন ভরা মানুষজন সেদিকে তাকিয়ে আছে।
"কে এইটা?" সাদিয়া বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করল।
"রুবী আপার ছেলে। কি হইছে?" কৌতুহলী হয়ে বললাম।
"আরে, বইলোনা.. কাল রাতে প্যান্টিটা রাখছিলানা বালিশের উপর? সরাইতে মনে নাই। এই ছেলে ঘরে ঢুকে এদিক ঐদিক দেখতে দেখতে ওটা হাতে নিল। আমি মানা করতেই দিল দৌড়!" শুনে আমি হো হো করে হাসতে শুরু করলাম।
"হাস কেন বেহায়ার মত? উঠানে এত লোক, সবাই দেখে ফেলল!" রাগ করে গাল ফুলিয়ে ফেলেছে বৌ।
0 Comments