দূরদর্শন by riddle Page:- 07



রোজার ঈদে অনেকেই ভীড়ে চ্যাপ্টা হয়ে গ্রামে না গিয়ে ঘরে বসে আরাম করে বা ঢাকার দুষ্প্রাপ্য খোলা রাস্তায় গাড়ি চড়ে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘোরাঘোরি করতে যায়। ঈদের তৃতীয় দিন বিকেলে উদ্ভট পরিবারের তিন সদস্যকে দেখা গেল সেজে গুজে কোথাও যাবে বলে তৈরি হচ্ছে। দৌড় দিয়ে নিচ নেমে এলাম। নতুন শাড়ী পড়া পুরানো বৌ, ফিটফাট টাকমাথা আর ঝলমলে লাল লেহেঙ্গা পড়নে লুৎফা বেরিয়ে এল। লম্বা ওড়না দিয়ে মসৃণ পেট ঢাকা। কিন্তু পেছন থেকে বাঁকানো পিঠটা জ্বলজ্বল করছে। ঈদের পরপর এলাকায় মানুষজন নেই। নইলে রাস্তার আশপাশের ছেলেরা নির্লজ্বের মত তাকিয়ে থাকত। দূরত্ব বজায় রেখে পেছন পেছন হাঁটছি। মোড়ে এসে দুটো রিকশা নিল টাকমাথা। এখানে আর রিকশা নেই। থাকলেও "ঐ দুইটার পিছে পিছে চালান" বলার মত ডিটেকটিভ সাহসকিতা আমার নেই। হয়তো কোন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যাচ্ছে। কলিগ বা বন্ধু-বান্ধবের বাসায়ও যেতে পারে। তাহলে তো শুধু শুধু সময় নষ্ট করছি। তবে পড়ন্ত বিকেলে রহস্যময় পরিবারের সদস্যরা ভারী সাজগোজ করে সমাজে নিন্দনীয়, এমন কোন কাজে যাচ্ছে বলে ভেতর থেকে আওয়াজ আসতে লাগল।

মনস্থির করে পাশের গলিতে ঢুকে একরকম দৌড়ে দৌড়ে শর্টকাট পথে যে রাস্তা দিয়ে বেরোলাম সেটি ময়নাদির বাড়ির সামনে এসে মিশেছে। হাঁপাতে হাঁপাতে টং দোকানে এসে বসলাম। সরু রাস্তায় রিকশা ধীরে চালাতে হয়। লুৎফারা দু মিনিট পর বাড়ির সামনে এসে নামল। দু গ্লাস পানি ঢকঢক করে গিলে চা-কলা খাচ্ছি আর গাছপালায় ছাওয়া একতলা বাড়িটির সাদা গেটে চোখ রাখছি। প্রায় সোয়া এক ঘন্টা পর গেট খুলে গেল। বেরিল এল সাদা পাঞ্জাবি পড়া সরকার পাড়ার বড় ব্যবসায়ী জয়নাল সরকার। বিশাল বপু, ইয়া লম্বা দেহ। হাতের একেক আঙুলে একেক রকম আঙটি। মুঠোয় ধরা তখনকার সময়ে বড়লোকি দেখানোর অন্যতম হাতিয়ার, পেট ফোলা এন৭০। এদিক ওদিক তাকিয়ে কি যেন খুঁজল। তারপর পেছন দিকে কয়েক গজ হেঁটে নিজের প্রাইভেট কারে উঠে পড়ল। নীল গাড়িটা বাড়ির গেটের সামনে এসে দাঁড়াল। টাকমাথা পরিবার নিয়ে বেরিয়ে এল। জয়নাল সরকার ড্রাইভারের পাশের সীট থেকে নেমে দুলতে দুলতে পেছনে গিয়ে বসল। লুৎফার মুখে এখন আর ভারী মেকআপ নেই, শুধু ঠোঁটে লিপস্টিক। লেহেঙ্গার লো কাট ব্লাউজ আর নাভীর অনেকটা নিচে কোমরে জড়ানো স্কার্টের মাঝে লোভনীয় নাভী ফুটে আছে। এদেশে মেয়েরা স্কার্টের সঙ্গে লো কাট টপ পড়েনা। খোলা ফর্সা পেট যে কারো বুকে কামনার উদ্রেক করতে বাধ্য। ভারী ওড়নাটি ভাবী আলগা হাতে ধরে আছে। একে একে লুৎফা আর ভাবী পেছনে, জয়নাল সরকারের সঙ্গে গাড়িতে উঠে বসল। টাকমাথা আধখাওয়া বিড়ি ড্রেনে ফেলে সামনে এসে বসার পর গাড়ি ভোঁ টান দিয়ে খোলা রাস্তার মাথায় হারিয়ে গেল।

******




ময়নাদির রসলীলার আসর যে বাড়িতে বসে, তার মালিক জয়নাল সরকার। অল্পকিছু মানুষ ছাড়া এলাকাবাসীর কাছে এই বাড়ির রহস্য রহস্যই রয়ে গেছে। রোমেল ভাইয়ের সঙ্গে ঘোরার ফলে আমার সাথে ময়নাদির ভাল পরিচয় আছে। পরদিন বিকেলে সোজা বাড়িতে ঢুকে পড়লাম। দাড়োয়ানের সঙ্গে কিছুক্ষণ খেজুরে আলাপ করে ভেতরে গেলাম। বাড়ির জায়গা অনেকটা, তবে রুম বেশি নেই। ভেতর থেকে নারী-পুরুষের হাসাহসির আওয়াজ শুনে বুঝলাম "গেস্ট" আছে। এখানে সাধারণত কাস্টমার আসে বড়লোক, প্রভাবশালী গোছের। ভেতরের গাছপালা, পেছনের খোলা উঠোন আর কিছুটা মজার সময় কাটানোই লক্ষ্য।

সদর দরজা পার হলেই ময়নাদির "অফিস"। ভেতরে উঁকি দিলাম। বরাবরের মত পাতলা শাড়ী পড়ে পায়ের উপর পা তুলে সিগারেট খাচ্ছে। পাতলা গড়ন ময়নাদির, বয়স পঁয়ত্রিশের আশপাশে। ওকে সবাই "দিদি" বলে সম্বোধন করে কেন, তা বলতে পারিনা। অন্য কেউ বলতে পারে বলেও মনে হয়না। আমাকে দেখে গোলাপী ঠোঁটে হাসি ফুটল। একটা চেয়ার টেনে ওর পাশে বসলাম। আমাকে পেলেই এক হাতে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে অন্যহাত চুলের ভেতর চালাতে থাকা তার অভ্যাস। অনেকদিন পরে আসলাম, তবে পুরানো অভ্যাস বদলেনি। দিদির হাতে যেন যাদু আছে, চুলের গোড়ায় এমনভাবে মাসাজ করে দেয়, ঘুমিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। করিডোরের ওপাশের ঘর থেকে জোরেসোরে নারী-পুরুষের হাসাহাসির শব্দ আসছে। দরজা খুলে গেল। শুধু পেটিকোট পড়া একটা মেয়ে উচ্চস্বরে হাসতে হাসতে ময়নাদির অফিসে ঢুকে পড়ল। বয়স ২৫/২৬ হবে, শ্যামলা ছিপছিপে গড়ন। তার মধ্যে কালসী বুকদুটো কচি ডাবের মত শক্ত হয়ে একটু ঝুলে আছে। কুচকুচে বোঁটার চারপাশ ঠেলে বেরিয়ে আসছে। ব্যতিক্রমী স্তনজোড়ার দিকে তাকালে চোখ ফেরানো মুসকিল। ময়নাদির পাশে আমাকে দেখে হাসির দমক কমাল অর্ধনগ্ন গণিকা। পেছন পেছন পুরুষটিও হাসতে হাসতে দরজার সামনে চলে এল। মাঝবয়সী গাল ফোলা নগ্ন লোকটি মজার কিছু একটা বলার জন্যে এসেছিল। আমাকে দেখে হাসি থামিয়ে চুপচাপ দরজার সামনে থেকে সরে গেল। মেয়েটিও পেছন পেছন বেরিয়ে গেল।

"হারামজাদা আজকে ভালই মাস্তি করতেছে। কালকে তো মাথা খাইয়া ফেলছিল।"

ময়নাদি খেদ নিয়ে বলল।

Post a Comment

0 Comments