বাবার সঙ্গে কথা বলে বিভা আরো কিছুক্ষণ লাফালাফি করল ঝলমলে কাগজে মোড়ানো গিফট আনবক্স করতে করতে। একসময় ক্লান্ত হয়ে সোফার উপর ঘুমিয়ে পড়ল বার্থডে গার্ল। আপা মেয়েকে বিছানায় শুইয়ে দিতে গেল। আমার বেশ ক্ষুধা লেগেছে, রীমা আপুও তাই বলল। মেহমানদের জন্যে রাঁধা বিরিয়ানি গরম করে দুজনে খেতে বসলাম। তুতুল আপা যোগ দিল কিছুক্ষণ পর। আজকের পার্টি নিয়ে আলোচনা করতে করতে খাওয়া শেষ করলাম। রাত বাড়ছে, বেশি দেরি হলে মা চিন্তা করবে। যদিও জানে আপুর সঙ্গে বেরিয়েছি, তবু দ্রুত ফেরা উচিত।
ভদ্রভাবে বললাম। তুতুল আপা অবশ্য বালিশ হাতে ধরিয়ে বলল কোনরকম লাজ শরম দেখানোর প্রয়োজন নেই, দরকার হলে ঘুমিয়েও পড়তে পারি। আমি বালিশে কনুই রেখে মাথায় হাত দিয়ে কাৎ হয়ে শুলাম।
- ওহ.. তুমি কি ঘুমায়ে পড়ছিলা? ঘুমাও তাহলে, সারাদিন অনেক কাজ করছ..
- না, না, ঘুমাই নাই। আমি খেলব।
আমার ক্লান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মত পরিবর্তন করে ফেলছে দেখে দ্রুত চোখ বড়বড় করে বোঝালাম, ঘুম পায়নি। আপু আশ্বস্ত হয়ে কার্ড ডীল করতে শুরু করল। রীমা আপু খাটের হেডবোর্ডে ঢেলান দিয়ে পা লম্বা করে বসেছে, তুতুল আপা তার বিপরীত পাশে খাটের কোণে, আর আমি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসেছি। আমার ভুলভাল চাল দেখে তুতুল আপা হাসাহাসি করছে। প্রথম গেম অর্ধেক খেলার পর তারা বুঝল আমি কার্ডে আনাড়ি। তুতুল আপা বেশ উৎসাহ নিয়ে আমাকে শেখানোর চেষ্টা করল। তবে দু গেম খেলতে খেলতে ঘুম আরো ভালভাবে চৈতন্য লোপ করতে শুরু করেছে।
- এদিকে আয়!
দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে রীমা আপু হাত বাড়িয়ে ডাকল। হামাগুড়ি দিয়ে আপুর পাশে খাটের পাখায় পিঠ ঠেকিয়ে পা লম্বা করে বসলাম।
- তুই দেখ, হু? পরে আরেকদিন আমরা খেলব একসাথে।
বলতে বলতে আপু আমার মাথা তার বাম কাঁধে রাখল। ময়ুরের পেখমের মত মেলে থাকা কার্ডগুলোর দিকে তাকালাম। কিন্তু প্রথমেই চোখে পড়ল কামিজের গলার দিকটায় গভীর বুকের খাঁজ। থার্ড গেম শেষে আপুরা সিদ্ধান্ত নিল কার্ড আর খেলা হবেনা, দুজনে জমছেনা। দাবার বোর্ড নিয়ে বসার পর ঘর অনেকটা চুপচাপ হয়ে গেল। হাত খালি হওয়ায় আপু মাঝেমাঝে আমার চুলের ভেতর ধীরে ধীরে হাত চালিয়ে দিচ্ছে। কার্ড খেলার সময় তীক্ষ্ম নারীকন্ঠের চেঁচামেচিতে ঘুমানো যাচ্ছিলনা। এখন নির্জনতায় চোখ বুজে ফেললাম।
মিনিটপাঁচেক হয়েছে এমন সময় মনে হল কি যেন ঠিকঠাক নেই। ঝট করে চোখ খুলে ফেললাম। বুক ধকধক শুরু হল। তুতুল আপা গুরুত্বপূর্ণ একটা চাল নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন। রীমা আপু দাবার বোর্ডের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। কিন্তু দৃষ্টি ওদিকে হলেও ডান হাত যেন তাকে না জনিয়েই আমার তলপেটের নিচে ঘোরাঘোরি করছে। পাতলা গ্যাভার্ডিনে ফুটে থাকা উরুতে মোলায়েমভাবে হাত বুলাতে বুলাতে মাঝে মাঝে নরম অন্ডকোষে চাপ দিচ্ছে। তুতুল আপার দৃষ্টি এখনো বোর্ডে নিবদ্ধ। মিনিটখানেক চুপচাপ অবস্থা বিবেচনা করে দু পা চেপে নিলাম। রীমা আপু অন্ডকোষ মুঠো করে ধরতে ব্যর্থ হয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকাল।
- কি হইছে?
কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করল।
-হাঁ?
তুতুল আপা ভাবল তাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে।
- আপনাকে না, ওরে বলছি।
বলে দুপায়ের সংযোগস্থলে জোরে চাপ দিয়ে বসল। এবার ওদিকে তাকাল তুতুল আপা। অস্বস্তিতে গলা শুকিয়ে গেল। রীমা আপু আবার পাগলামি শুরু করেছে। তবে এবার বেশি রিস্কি হয়ে যাচ্ছে। তুতুল আপা কি ভাববে?
আমাকে অবাক করে দিয়ে আপুর এরকম উদ্ভট আচরণে কোনরকম প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে "ওহ.." শব্দ করে আবার বোর্ডের দিকে তাকাল তুতুল আপা।
- আকাশ, পা সরা..
আপু গমগম গলায় বলে উঠল। আমি তবু দু পা একসঙ্গে চেপে বসে আছি। এবার তুতুল আপা সোজা আমার দিকে তাকিয়ে হাসল।
- কোন সমস্যা নাই, আকাশ। আমি কাউকে বলবনা!
বলেই চোখ টিপলেন। আমার নিবোর্ধের মত চেহারার দিকে তাকিয়ে হাসলেন, তারপর বিছানা থেকে নেমে ওয়ার্ডরোব থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করলেন।
- প্রবলেম হয়, আকাশ?
লম্বাটে সাদা শলাকা দু আঙুলের ফাঁকে রেখে জিজ্ঞেস করলেন। আমি ঘাড় নেড়ে বোঝালাম, সমস্যা নেই।
0 Comments