এবারে কিছুটা বোধগম্য ঠেকছে। তবু মেয়েকে নিয়ে আসাটা কিছুতেই মাথায় ঢুকছেনা। সবকিছু শেয়ার করলেও পরপুরুষের সাথে রাত কাটাতে যাওয়ার প্ল্যান কেউই তো নিজের মেয়েকে বলবেনা। যা বোঝা যাচ্ছে, আজ কোন ঠেকায় পড়ে মেয়েকে সাথে নিয়ে আসতে হয়েছে এবং আজকে খোশোগল্প করা ছাড়া কিছুই হবেনা।
- ওহ, আই সী, আপনি খুব লাকী বলতে হবে।
- হ্যাঁ, তা বলতে পারেন।
- ম্যাম, ডিনারের সময় তো হয়ে এল, আপনারা সময় নিয়ে এসেছেন নিশ্চই? কি খাবেন বলুন আনিয়ে নিচ্ছি।হ্যাঁ, সময় আছে হাতে। ডিনার হলে মন্দ হয়না। এক কাজ করি, আমিই যাই - আপনি বরং আনিকার সাথে একটু কথাবার্তা বলুন।
স্তব্ধ রাত, ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। নিরবতা ভাঙলেন আফসার সাহেব,
- মামনি, কোন গ্রুপে পড়ছ তুমি?
- সায়েন্স
- হুম, ভেরি গুড।
- স্যার
- হ্যাঁ, বল।
- কলেজটা ঘুরে দেখা যাবে?
- ইয়েস, শিওর। আসো তোমাকে ঘুরে দেখাই
বলে হাঁটতে হাঁটতে দুজনে তিনতলা পর্যন্ত উঠে গেলেন। সায়েন্স বিল্ডিংযের বায়োলজি ল্যাবের জানালার কাচ দিয়ে ফ্লাডলাইটের আলো ভেতরে গিয়ে পড়ছে। সেই আলোয় ভেতরের কঙ্কালটা ঝকমক করে উঠছে। এক হাত নেই প্লাস্টিকের কাঠামোটির। হঠাৎ দেখেই ভয়ে আঁতকে উঠল আনিকা। খপ করে আফসার সাহেবের হাত চেপে ধরল। এর মধ্যেই কথা বলতে বলতে অনেকটা ফ্রী হয়ে এসেছেন দুজনে,
- আপনি একটা কঠিন প্রবলেমে আছেন, তাইনা?
- নাতো, তোমার কেন তাই মনে হল?
অবাক হলেন তিনি।
- আপনি বুঝতে পারছেন না আম্মু কেন আমাকে এখানে আনল, তাইনা?
- হাহা, আরে না, তা হবে কেন, তুমিতো আসতেই পার।
- হুম, আম্মু এখানে কেন এসেছে বলেন তো?
- এইত্তো, ফ্রেন্ডলি ভিজিট বলতে পার।
- উঁহু, আমাকে ভুল বলে লাভ নাই। আমি ঠিকই জানি। আম্মুই বলেছে।
- মেবি ইউ আর গেসিং সামথিং রং?
- জ্বী না, আম্মু এসেছে আমার ছোট ভাইয়ের এডমিশন সেভ করতে। সেজন্যে আপনার সাথে খারাপ খারাপ কাজ করতে হবে। আমি জানি।
- এসব তোমাকে কে বলল? কি যা তা ভাবছ তুমি?
অবাক হবার ভান করতে হলনা, আসলেই অবাক হয়েছে বুড়ো প্রিন্সিপাল।
- হাহা, আম্মু যে বলল আমরা অনেক ক্লোজ, একেবারে ক্লোজ ফ্রেন্ডের চেয়েও ক্লোজ। এটা শুনে কিছুই বোঝেন নি?
- উনি তো বললেনই, তোমার গ্রান্ডপ্যারেন্টস এগ্রি করেছিলেন।
- হুম, কিন্তু আমার বাবা চায় নাই মা পড়ুক। আসলে কি জানেন, বাবা, দাদা-দাদু, নানা-নানু কেউই চায় নি আম্মু আরো পড়ুক ।বিয়ের পর পড়ার দরকার কি! এই যুক্তিতে সবাই ছিল একজোট।
- তাই নাকি! তাহলে এই পরিস্থিতে আরো ছয় সাত বছর পড়লেন কিভাবে?
- হুম, সেটাই তো সিক্রেট। আমার বাবা অনেক বছর থেকেই ঢাকায় দাদুর বিজনেস দেখেন। দাদুর উপরে কথা বলার সুযোগই নেই। হঠাৎ করেই দাদু রাজি হয়ে গেলেন, সবাই অবাক হলেও সত্যি কথা হল আম্মু আরো পড়তে পারল।
- ভেরি স্ট্রেইঞ্জ!
- আমি কিন্তু সিক্রেট ব্রেক করে ফেললাম। আমার বয়স যখন দশ, দাদী ক্যান্সারে মারা যান। আগে থেকেই দেখতাম আম্মুকে দাদু খুব আদর করে। দাদীর ডেথের পর আদর আরো বেড়ে গেল। আমি বড় হয়ে গেছি এই অযুহাতে আমাকে আলাদা রুম দেয়া হল। আম্মু কিন্তু একা ঘুমাত না। শোবার সময় হলেই দাদু চলে যেত আম্মুর রুমে। যখন এসব বুঝতে শিখলাম ততদিনে বুঝতে পারলাম দাদুর সাথে আম্মুর রিলেশনটা অস্বাভাবিক। আরো বড় হলে ধরে নিলাম এটাই ছিল আম্মুর সেক্রিফাইজ, পড়াশোনা চালিয়ে নেবার জন্যে।
0 Comments