জীবনের সুখের জন্য - পর্ব ৭৭ (Jiboner Sukher Jonno - Part 77)

বিদিশার হিসির বেগ ধীরে ধীরে কম হয়ে এসেছে। আমি মুখটা তুলে বিদিশার চুল ভর্তি যোনীর মধ্যে নিজের মুখ চেপে ধরলাম। পেচ্ছাপের একটা গন্ধ আসছে নাকে, অ্যামোনিয়া মেশানো গন্ধ। ফুলের গন্ধের থেকে সেই গন্ধ মোটেই যে কম নয়। বিদিশাও চেপে ধরল আমার মাথা ওর যোনীতে। আমি চোখ তুলে দেখলাম বিদিশার মুখ পিছন দিকে ঝোলানো। শেষ কয়েক ফোঁটা পেচ্ছাপ চেটে আমি মুখ নামিয়ে নিলাম।
বিদিশা আমার মুখের উপর বসে হেসে বলল, ‘তেষ্টা মিটল?’
আমিও হেসে জবাব দিলাম, ‘বিলক্ষণ। তবে এ তেষ্টা মেটার নয় যে বিদিশা। এ তেষ্টা সারা জীবনের। চলতে থাকবে অনন্তকাল।‘
আমি চিত্তদের দিকে নজর দিলাম। নিকিতা ওর মুখের উপর বসে পেচ্ছাপ করতে শুরু করেছে। চোখ দুটো ওর কুঁচকে বোজা, মুখ টানটান। বিদিশা উঠে দাঁড়াতে আমি কাছে গিয়ে দেখলাম।নিকিতার যোনী থেকে স্বর্ণধারা বেড়িয়ে এসে চিত্তর মুখে ঢুকছে আর চিত্ত গিলছে ওই ধারা। একসময় নিকিতার শেষ হোল, ও একটু ঝুঁকে চিত্তর মুখে আচ্ছা করে ওর যোনী রগড়ে দিলো। চিত্তর সারা মুখে নিকিতার হিসি মাখামাখি হয়ে গেলেও ব্যাটার কোন ক্ষোভ নেই। ও দাঁত বার করে হাসতে লাগলো।
নিকিতার কাছে এই পেচ্ছাপ খাওয়ার ব্যাপারটা নতুন, নতুন চিত্তর কাছেও আবার বিদিশাও জানলো সেক্সে কতকিছু আনন্দ করা যায়।
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় সাড়ে ছটা বাজে। আর দেরি করা যায় না নাহলে আবার ওদিকে লেট হয়ে যাবে। আমি উঠে তারা লাগালাম, বললাম, ‘আরে এইভাবে সময় নষ্ট করলে তো পুরী যাওয়া চৌপট হয়ে যাবে। তাড়াতাড়ি আমরা তৈরি হই।‘
সবার সম্বিত ফিরল। তড়িঘড়ি করে যে যার তৈরি হতে ব্যস্ত। আমি অর্ডার দিয়ে চা আনিয়ে নিলাম। খুব বেশি সময় লাগলো না আমাদের নিজেদেরকে তৈরি করতে। নিকিতা আর বিদিশা দুজনে সালওার কামিজ পড়ে নিলো, আমি যেরকম ড্রেস করি সেই রকমই পড়লাম, চিত্ত একটা শার্ট আর প্যান্ট পড়ে নিলো।
আমরা সব ব্যাগ গুছিয়ে ফেললাম। মধ্যে আমি ফোন করে ডেস্কের মেয়েটাকে বলে দিলাম বিল আর গাড়ি তৈরি রাখতে যাতে আমরা সময় নষ্ট না করে বেড়িয়ে যেতে পারি।
বিদিশা আর নিকিতা ওদের ফাইনাল মেক আপ করে নিয়ে আয়নায় একবার নিজেদেরকে চেক করে নিলো। খুব স্বাভাবিক ওদের বড় বেশি সুন্দরী লাগছে। নিজেকে ওদের পাশে কেমন যেন খেলো খেলো মনে হচ্ছে। কিন্তু নিজেকে তো আর বেশি সুন্দর করা যাবে না যেটা আছে সেটাই আছে। চিত্তর কথা ছেড়ে দিলাম। ব্যাটা নিজেকে কেমন দেখতে লাগছে এই ফিলিংটা আসেনি এখনো ওর মধ্যে। ও যে আমাদের সাথে ঘুরতে যাচ্ছে সেটাই ওর কাছে অনেক বেশি। তবে হ্যাঁ একটা কথা না বলে পারছি না, চিত্তকে কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না ও কোন ঘরে কাজের ছেলে। বিদিশার যত্ন ওর প্রতি এতোটাই বেশি।
ঠিক করলাম অন দা ওয়ে আমরা নাস্তা করে নেবো। বাইরে বেড়োবো অথচ ঘরের নিয়ম কানুন মেনে চলব সেটা তো হতে পারে না। আমরা ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে নিচে নেমে এলাম। বিল পেমেন্ট করে মেয়েটাকে থ্যাংকস জানিয়ে এগিয়ে গেলাম গেটের দিকে। নিকিতা বিদিশা এদের সাথে সঙ্গম করে কেন আমার মনে হচ্ছে এই মেয়েটার সাথে একবার করলে কেমন হয়। এবার নয় পরের বার দেখতে পারি।
নিজেকে ধিক্কার দিলাম, ‘ছ্যাঃ এসব কি ভাবছি মনের মধ্যে। যাকে তাকে সঙ্গম করার কথা চিন্তা করছি। মনটা নোংরা হয়ে গেছে দেখছি।‘
মেয়েটা বাই করে বলল, ‘সি ইউ এগেন স্যার অ্যান্ড ম্যাডামস। চিত্ত বাই তোমাকেও।‘ মেয়েটা একটু এগিয়ে এসে চিত্তর গালে একটা চুমু খেল। এটা আমি হতে পারতাম না কি?
চিন্তা দূর করে চলে এলাম গাড়ীর কাছে। ইনোভা গাড়ি। বড়। চকোলেট কালার। উথবার আগে ঠিক হোল, পিছনের লম্বা সিটটায় নিকিতা বিদিশা আর চিত্ত বসবে। আমি সামনের দুটো সিটের যেকোনো একটায়। আর ড্রাইভার সামনে।
এইভাবে ঠিক করে আমরা গাড়িতে উঠলাম। ড্রাইভার হেল্প করলো ব্যাগগুলো একদম পিছনে তুলে দিতে। ড্রাইভারটা স্মার্ট, বেশি বয়স নয়। তবে চুলবুলেও নয়। খুব পেশাদার। অতটুকুই কথা বলছে যতটা বলা দরকার। ও সেলাম জানিয়ে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসল। বিদিশা, নিকিতা আর চিত্ত উঠে যাবার পর আমি উঠলাম। ড্রাইভার এসি অন করে দিল।
স্টার্ট করার আগে জনক মানে ড্রাইভারটা ওর পিছনের আর আমার সামনের মধ্যে একটা পর্দা টেনে দিলো যাতে আমরা আর ড্রাইভার আলাদা হয়ে যেতে পারি। ও কেন এমন করলো বুঝলাম না। ও কি ভেবে নিলো আমরা রাস্তার মধ্যে চোদোনগিরি করবো। আমরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টালাম। আমাদের কাছে বোধগম্য নয় এই সংকেত।
গাড়ি চলতে শুরু করলো আর ধীরে ধীরে হোটেলের বাইরে বেড়িয়ে এলো। সামনে হাই ওয়ে, আস্তে আস্তে স্পিড তুলতে লাগলো গাড়ি। গাড়ি এবার তার নিজের মনে চলতে থাকলো। আমদের দিকে আর ওর নজর দেবার প্রশ্ন নেই।
আমি আমার সিটটা পিছন দিকে পুশ করে দিলাম যাতে একটু হেলান দিতে পারি। একটু কাত করে দিলাম। এইবার ওরা আমার চোখের সামনে। বিদিশা আর নিকিতার মধ্যে চিত্ত বসেছে। চিত্ত খুশি খুশি মন নিয়ে চারিপাশ দেখছে। গাড়ি ঝাড়সুগুদাহ বাই পাস দিয়ে সম্বলপুরের দিকে ছুটে চলেছে হু হু করে। রাস্তার দুপাশের গাছের সারিগুলো সাঁ সাঁ করে একের পর এক বেড়িয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে দিয়ে।
আমি ওদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আচ্ছা এই সিটিং আরেঞ্জমেন্ট কার মাথা দিয়ে বেরোল ভাই যে চিত্তর সৌভাগ্য হোল তোমাদের মধ্যে বসার আর আমি বেচারা ভবে একা দাও গো দেখার মতো এই সিটে?’
ওরা হাসতে লাগলো। ওরা মানে নিকিতা আর বিদিশা। চিত্ত হাসলে চড় লাগাতাম।
বিদিশা বলল, ‘নিজের শরীরটা দেখেছ? আমাদের মধ্যে বসলে তোমার কি অবস্থা হতো? হয় আমরা ঠিক বসতে পারতাম না নাহলে তুমি। তাছাড়া তুমি তো আবার দুপুরে মদ খাবে। তাই তোমাকে একলা ছেড়ে
দিলাম। আমি আর নিকিতাই ঠিক করেছি এইভাবে বসার।‘
আমি মনে মনে বললাম, ‘তোমরাই মালিক। যেটা ভাববে যেটা করবে তাই ঠিক।‘
বিদিশা জিজ্ঞেস করলো, ‘ডু ইউ মাইন্ড গৌতম এইভাবে বসেছি বলে?’
আমি উত্তর দিলাম সংগে সংগে, ‘আরে ছিঃ ছিঃ, এইভাবে বলছ কেন? আমি একবার জানতে চাইলাম যে এটা চিত্ত ঠিক করেছে নাকি। সেটা যদি সত্যি হতো তাহলে ব্যাটাকে এইখানে নামিয়ে দিতাম।‘
চিত্ত আমার কথা শুনে চেঁচিয়ে বলল, ‘লো, আমি আবার মধ্যে এলাম কি করে? আমি কিছু জানিই না এইসব। আমাকে দিদি বলল বসতে আমি বসে পড়লাম। তবে দাদা বড় ভালো জায়গা গো এইদুজনের মধ্যখান।‘ হাসতে লাগলো ব্যাটা।
নিকিতা বলে উঠলো, ‘স্ট্রেঞ্জ গৌতম। তুমি ভাবলে কি করে যে চিত্ত বলবে আর আমরা সেটা শুনবো? দিদি তোমার কথা চিন্তা করেই এই ডিসিশান নিয়েছে। আমি সায় দিয়েছি।‘
আমি কথা আর বাড়াতে দিলাম না। বললাম, ‘আরে ওসব ঠিক আছে। আমি চিত্তর পিছনে একটু লাগতে চাইছিলাম। কিন্তু ব্যাটা সেয়ানা কম নয়।‘
বলে আমি বাইরের দিকে তাকালাম। সকালের উড়িষ্যা খুব সুন্দর। সবুজ চারিদিক। চোখে খুব ভালো লাগছে। আমি দেখতে দেখতে বললাম, ‘খুব সুন্দর লাগছে না চারপাশ। মনে হচ্ছে নিজেদের দেশের কোন গ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।‘
নিকিতা বলল, ‘গ্রামের মধ্যে ঠিক আছে। কিন্তু ওখানকার গ্রামের রাস্তা এরকম নয়। লাল মাটির তৈরি। গাড়ি গেলে লাল ধুলো উড়িয়ে যায়।‘
আমি স্বগতোক্তির মতো বললাম, ‘তা অবশ্য ঠিক।‘
একটা জায়গা পার হচ্ছিলাম, যতদূর দেখা যায় শুধু বন আর বন। সূর্যের কিরন গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে মাটিতে এসে পড়েছে। একটা অদ্ভুত পরিবেশ, কেমন শান্ত আর নিরিবিলি।
জায়গাটা দেখে বিদিশা নিকিতাকে বলল, ‘জানিস নিকি, এই জায়গাটা আমার মনে একটা অদ্ভুত অনুভুতি এনেছে, কি মনে হচ্ছে জানিস?’
নিকিতা বলল, ‘মনে হচ্ছে উদোম হয়ে দৌড় লাগাই ভিতরে। কেউ কোথাও নেই। শুধু আমি একা এই পৃথিবীতে এক ল্যাংটো মানবী।‘
বিদিশা বলে উঠলো, ‘একদম মনের কথা বলেছিস। আমারও ঠিক তাই মনে হচ্ছে।‘
চিত্ত বলল, ‘আমারও মনে হচ্ছে।‘
আমি মুখ ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোর আবার কি মনে হচ্ছে?’
চিত্ত বাইরে দেখতে দেখতে বলল, ‘মনে হচ্ছে বৌদি আর দিদি ল্যাংটো হয়ে দৌড়চ্ছে, আর আমিও ওদের পিছন পিছন দৌড়চ্ছি।‘
আমি বললাম, ‘দাঁড়া ব্যাটা, তোর দৌড়ানো বার করছি।‘
চিত্ত ওমনি ওর বৌদিকে জড়িয়ে বলল, ‘বৌদি দ্যাখো দাদা মার লাগাবে বলছে।‘
বৌদি ওকে জড়িয়ে বলল, ‘আরে নারে দাদা তো ইয়ার্কি মারছে।‘
দেখতে দেখতে আমরা সম্বলপুরে এসে গেলাম। আমি ড্রাইভারকে বললাম নাস্তা করার কথা। ড্রাইভার একটা ভালো ধাবা দেখে দাঁড় করালো গাড়িটা। আমরা ধীরে ধীরে নেমে এলাম। সবাই একটু পাগুলো টান করে নিলাম। ধাবাটা মোটামুটি পরিস্কার। তবে সিঙ্গারা, আলুর বড়া ছাড়া অন্য কিছু নেই। এইসময় নাকি তৈরি হয় না। একঘণ্টা পড়ে ধোসা, ইডলি এইসব পাওয়া যেতে পারে। কি করবো ভেবে বিদিশাদের দিকে তাকালাম। ওরা আমাকে ইশারা করলো এই খেয়ে নেওয়া যাক। পড়ে আবার খিদে পেলে দেখা যাবে।
একটা টেবিলে বসতে বসতে দ্রাইভারকেও বললাম নাস্তা করে নিতে। ও ‘জী স্যার’ বলে অন্য একটা টেবিলে বসল।
নাস্তার ওয়েট করতে করতে আমি বললাম, এই রকম টেনশন মুক্ত ছুটি কাটানোর মজাই আলাদা। দ্যাখো আমাদের সামনে সারাদিন কাটাবার জন্য পড়ে আছে। অথচ আমাদের কিছু করতে হবে এই ভাবনাটা নেই। খুব ভালো লাগছে এই সময়।‘
বিদিশা আর নিকিতা সমবেতভাবে বলে উঠলো, ‘উফফ, কি দারুন লাগছে। এই সময় যদি না শেষ হয়……’
ওরা কিছু বলার আগে আমি গানের সুরে বলে উঠলাম, ‘তবে কেমন হতো তুমি বলতো?’ বলে জোরে হেসে উঠলাম। দেখাদেখি ওরাও হাসতে লাগলো। ইতিমধ্যে নাস্তা পৌঁছে গেছে। ওরা আস্তে খায়, আমি একটু ফাস্ট খাই। আমি খাওয়া শেষ করে ওদের বললাম, ‘তোমরা খাও ততোক্ষণ আমি একটু মিতাকে ফোন করে নিই।‘
ওরা মাথা নাড়াতে আমি চায়ের কাপ হাতে উঠে একটু বাইরে বেড়িয়ে এলাম। ফোন করলাম মিতাকে। বেশ কিছুক্ষণ রিং বাজতে থাকলো। আমি অবাক হলাম মিতা কোথায়। শেষে বিরক্ত হয়ে ফোনটা কাটতে যাবো, মিতার মধুর কণ্ঠ ভেসে এলো, ‘কিগো বাইরে গিয়ে দেখছি ভুলেই গেছ। ফোন করার নাম নেই যে। কাল কি করছিলে? আবার কারো সাথে দেখা হয়ে যায় নি তো?’
ভাবলাম, দেখা আর কোথায়, সাথেই তো রয়েছি সবাই। মিথ্যা বলতে বাধ্য হলাম, ‘আরে কি করবো বোলো? এই হয়েছে এক মোবাইল নেট ওয়ার্ক। কখনো থাকে কখনো থাকে না। উড়িষ্যাতে এটার বেশ প্রব্লেম দেখছি। কি যে হয় কে জানে।‘
মিতা বলল, ‘শুধু তোমারি হয়। ওইতো আল্পনাদির বর রায়পুরে থাকে। রোজই তো কথা বলে দেখি। ওদের তো নেট ওয়ার্ক যায় না?’
আমি বললাম, ‘আরে আল্পনাদির বর রায়পুরে থাকে, উড়িষ্যাতে নয়।‘
মিতা জবাব দিলো, ‘ও ওই একী হোল।‘
আমি হেসে বললাম, ‘আরে সকাল সকাল ঝগড়াই করবে নাকি?’
মিতা অবাক হবার ভান করলো, ‘ওরে বাবা তুমি আছো কোথায় যে এখন সকাল বলছ? আরেকটু পড়ে তো দুপুর হয়ে যাবে!’
(চলবে)

Post a Comment

0 Comments