শয়তান - পর্বঃ ৫৬ (Soitan - Page: 56)


 ওদিকে কিরনের মা বাবা গ্রাম থেকে শহরে কিরনের ফ্লাটে চলে আসে সাক্ষাতের জন্য এবং কিরনের মা কিরনের হাতে একটা খাম দেয়।
মা- বাবা, এই ছবি দেখে নে আর আমাদের জলদি করে বল তোর মেয়েটাকে কেমন লেগেছে তবেই আমরা সামনে অগ্রসর হতে পারবো।
খামটা কিরনের হাতে দিয়ে তার বাবা-মা আবার গ্রামে ফিরে যায়। তারা যাবার পর কিরন খামটা খুলে যখনি সোনিয়ার ফটো দেখে তার স্মৃতি তাজা হয়ে যায় এবং তার মুখ থেকে বেড়িয়ে যায়, হায় রাব্বা এতো সেই মেয়ে যে প্রথম দর্শনেই আমার মনকে ঘায়েল করে গিয়েছিল, হায় ভগবান সেদিন আমি তোর কাছে যদি আরো অন্য কিছু চাইতাম তবে নিশ্চয়ই আমায় দিয়ে দিতি। কিরন সোনিয়ার ফটো দেখে আনন্দে আত্নহারা হয়ে যায় এবং সে তার বাবা-মাকে তার পছন্দের কথা জানিয়ে দেয় এবং কিরনের বাবা-মা সোনিয়াদের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের সব পাকা পাকি করে দেয়। সোনিয়া যখন জানতে পারে তার বিয়ে পাকাপক্ত হয়ে গেছে সে একেবারে ভেঙ্গে পরে। সোনিয়া দ্রুত ফোন করে রবিকে সব জানিয়ে দেয়। ঘরে বসে বসে রবি উদাস হয়ে যায়। পায়েল রবির উদাসন চেহারা দেখে কি হয়েঝে জানতে চায় এবং রবি পায়েলকে সব খুলে বলে। সব শুনে পায়েলও চিন্তায় পরে যায়।
পায়েল- তুই কি সত্যিই সোনিয়াকে বিয়ে করতে চাস?
রবি- হ্যা দিদি, সত্যিই আমি তাকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু আমি বুঝতে পারছিনা এখন আমি কি করবো? যদি আমি কোন পদক্ষেপ না নেই তবে সোনিয়া আত্নহত্যা করবে আর সে জন্য হয়তো আমিই দায়ি থাকবো।
পায়েল-(রবির মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে) রবি তুই চিন্তা করিস না, আমি কোন না কোন রাস্তা ঠিকই ব্যবস্থা করে ফেলবো।
সন্ধ্যার পর রোহিত যখন ঘরে ফিরে আসলো তখন নিশা ও পায়েল বসে তার সাথে ঘল্প করছিল।
পায়েল- আচ্ছা ভাইয়া আপনি কি রবির বিয়ে দিবন না?
রোহিত- কি ব্যাপার হঠাৎ করে রবির বিয়ে কোথা থেকে আসলো?
পায়েল- এমনিতেই জানতে চাইলাম আর কি।
রোহিত- দেখ পায়েল প্রথমে আমি তোর বিয়ে দেব কেননা তুই রবির থেকে বড়, তোর পরেই রবির বিয়ে হবে।
পায়েল- আচ্ছা ভাইয়া ধরে নেন রবি আমার আগেই বিয়ে করতে চাইছে তখন?
রোহিত- আরে রবি কি তার মর্জির মালিক নাকি? যতক্ষন তোর বিয়ে না হচ্ছে ততক্ষন রবির বিয়ে নিয়ে আমি ভাবতেই পারবো না, হ্যা যদি তোর কোন ছেলে পছন্দে থাকে তো বলে দে আমি তোর বিয়ে তার সাথেই দিয়ে দেব, তার পরেই রবির সিরিয়াল।
পায়েল-(কিছু ভেবে) ঠিক আছে ভাইয়া।
নিশা-(এতক্ষন তাদের কথা শুনুছল) ঠিক আছে মানে কি? তুই কি কাউকে পছন্দ করেছিস?
পায়েল-(মুচকি হেসে) না ভাবি নেই।
নিশা- যদি থাকে তোর ভাইয়াকে বলতে না পারলে আমায় বল।
পায়েল-(হেসে) না ভাবি, যদি থাকে সবার আগে তুমিই জানতে পারবে।
পায়েল কিছু ভাবতে ভাবতে তার নিজের রুমে চলে আসে এবং হঠাৎ করে কিছু মনে পরে যায় এবং সে দ্রুত সোনিয়োনে ফোন আর জানায় সে সোনিয়া ও সোনিয়ার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে চায়। পায়েলের কথা শুনে সোনিয়া জানায় তার বাবা-মা কাল সন্ধ্যার আগেই চলে যাবে যদি দেখা করতে হয় তবে আজকেই দেখা করতে হবে। সোনিয়ার সাথে কথা বলে পায়েল ফোন রেখে দেয়। পরের দিন সকাল সকাল পায়েল রবিকে নিয়ে সোনিয়ার ঘরে পৌছে যায় এবং পায়েল রবিকে আধাঘন্টা এদিক ওদিক ঘুরে আসতে বলে। সোনিয়া পায়েলকে তার বাবা-মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। একটু পরে পায়েল সোনিয়াকে ইশারা করে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।
পায়েল- আন্টি-আঙ্কেল আপনারা তো বেশ জলদিই সোনিয়ার বিয়ে ঠিক করে ফেললেন।
আন্টি- হ্যা মা, কি করবো বলো যোয়ান মেয়ের েচিন্তা সব বাবা-মায়েরই থাকে, সে জন্যই জলদি করে ওর বিয়ে ঠিক করে ফেললাম।
পায়েল- আন্টি-আঙ্কেল আমি আপনাদের কিছু বলতে চাই, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে বলবো।
আঙ্কেল- কি বলবে মা, সাফ সাফ বলো।
পায়েল- আসলেসোনিয়া আর আমি অনেক সময় ধরে খুব ভালো বন্ধু আর আমি সোনিয়াকে এতটাই পছন্দ করি যে কিছুদিন আগেই ভাবলাম যদি সোনিয়াকে আমার ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিই তাহলে সে আমার বন্ধু থেকে ভাবি হয়ে যাবে।
আঙ্কেল- খুবই ভালো চিন্তা করেছ মা কিন্তু একথা আমাদের জানাতে বেশ দেরী করে ফেলেছ এবং আমরা ছেলে পক্ষকে পাকা কথা দিয়েছি। এখন আমরা তাদেরকে মানা করতে পারবো না।
পায়েল- কিন্তু আঙ্কেল।
আঙ্কেল- মা আমাদের এখানে মুখের কথার অনেক মুল্য আছে, আমরা সে বিয়ে ভেঙ্গে দিলে আমাদের সমাজে আমাদের অনেক বদনামি হবে আর লোকেরা ভাববে যে আমাদের মেয়ের মধ্যেই কোন কমতি আছে বলে বিয়ে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে, কিন্তু মািআমরা তোমার ভাবনার কদর করি, কিন্তু সম্পর্ক ভাঙ্গা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।
সোনিয়ার বাবা-মায়ের কথা শেষ হলে পায়েল সোনিয়াকে সান্তনা দিয়ে রবিকে নিয়ে নিজেদের বাসায় চলে আসে। ঘরে এসেই পায়েল রবিকে নিয়ে তার নিরে রুমে চলে আসে এবং বিছানায় বসে কিছু ভাবতে থাকে।
রবি- কি হলো দিদি, সোনিয়ার বাবা-মা কি রাজি হলো না?
পায়েল- আরে তারা রাজি না হলো তো কি হলো? আমাদের কাছে আরো রাস্তা আছে, তুই চিন্তা করছিস কেন?
রবি-(পায়েরের কথা শুনে ওকে জরিয়ে ধরে) আই লাভ দিদি, এই দুনিয়াতে কেবল তুমিই আছো যে আমার মনের সব থেকে কাছে।
পায়েল- সোনিয়ার থেকেও কাছের?
রবি-(পায়েলের মাথায় হাত বুলিয়ে) হ্যা দিদি সোনিয়ার থেকেও কাছের, সোনিয়াকে ছাড়া হয়তো আমি বাচতে পারবো কিন্তু তোমাকে ছাড়া পারবো না, আই লাভ ইউ দিদি।
পায়েল- আই লাভ ইউ টু, আমার “শয়তান” ভাই।


(To be continue...)

Post a Comment

0 Comments